Prothomalo:
2025-06-16@05:56:36 GMT

আত্মহত্যা বিষয়ে ইসলাম কী বলে

Published: 4th, April 2025 GMT

আত্মহত্যা মানে স্বেচ্ছায় নিজের প্রাণনাশ। ইসলামে আত্মহত্যা মানে আল্লাহর ইচ্ছার বিরুদ্ধাচরণ, মহাপাপ। যে ব্যক্তি আত্মহত্যা করেন, তিনি দাফন-কাফনের যথোপযুক্ত ব্যবস্থা পেতে পারেন না। বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩০৯ ধারা অনুসারে আত্মহত্যার চেষ্টা করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

আত্মহত্যার কারণ খুঁজলে দেখা যায়, এক মানুষের জীবনে অনেক দুঃখ, অনেক কষ্ট, আপনজনরা তাকে মূল্যায়ন করছে না, অথবা প্রিয়জনের কাছে অবহেলার পাত্র হয়ে গিয়েছে ইত্যাদি।

প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সা.

)-এর জীবনেও অশান্তি ছিল। ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে কষ্ট সহ্য করেছেন, তা কোরআন হাদিস, নবীর (সা.) জীবনী পড়লে জানা যাবে। তখন জীবনের কষ্ট আর কষ্ট মনে হবে না।

আত্মহত্যার পরিণতি কী

মজার ব্যাপার হলো, যারা আত্মহত্যার মাধ্যমে দুনিয়ার অশান্তি থেকে মুক্তি চায়, আসলে কিন্তু তারা তা পায় না। কারণ, মৃত্যুই শেষ কথা নয়। আবার আরেকটি জীবন অপেক্ষা করছে। আল্লাহর বিধান না মানার কারণে সে-জীবনেও সে শান্তির দেখা পাবে না। মৃত্যু তো একদিন আসতই, কিন্তু এই ধরনের ইচ্ছামৃত্যুর কারণে সে নিজেকে পাপী বলে প্রমাণিত করে ফেলেছে। আল্লাহ বলেছেন, ‘প্রত্যেক প্রাণকেই মরণের স্বাদ নিতে হবে তারপর আমারই কাছে তোমাদের ফিরিয়ে আনা হবে।’ (সুরা আনকাবুত, আয়াত: ৫৭)

আরও পড়ুনজামাতে নামাজ পড়ার গুরুত্ব অনেক বেশি২৫ জানুয়ারি ২০২৫

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে হাদিসে জানা যায়, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নিজেকে পাহাড়ের ওপর থেকে নিক্ষেপ করে আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামে যাবে। সেখানে সর্বদা সে ওইভাবে নিজেকে নিক্ষেপ করতে থাকবে অনন্তকাল ধরে। যে ব্যক্তি বিষপান করে আত্মহত্যা করবে, সে তার বিষ তার হাতে থাকবে। জাহান্নামে সর্বদা সে ওইভাবে নিজেকে বিষ খাইয়ে মারতে থাকবে অনন্তকাল ধরে। যে কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যা করেছে, তার কাছে জাহান্নামে সেই ধারালো অস্ত্র থাকবে। সেটি দিয়ে সে নিজের নিজের উদর ছিন্ন করতে থাকবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ১০৯)

নিরাশ হওয়া যাবে না

আল্লাহ বলেছেন, ‘বলো, হে আমার বান্দাগণ, তোমরা যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছ, আল্লাহর অনুগ্রহের ব্যাপারে নিরাশ হয়ো না। আল্লাহ সমুদয় পাপ ক্ষমা করে দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।’ (সুরা জুমার, আয়াত: ৫৩)

আল্লাহ্ বলেন, ‘আর তোমরা নিজেদের হত্যা করো না। আল্লাহ তো তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু। এবং আর যে কেউ বিদ্বেষবশত ও অন্যায়ভাবে তা (আত্মহত্যা) করবে, আমি নিশ্চয় তাকে তাকে আগুনে পোড়াব, আর এ আল্লাহর পক্ষে সহজসাধ্য।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ২৯-৩০)

আল্লাহ্ আরও বলেন ‘আর তোমরা নিজেরা নিজেদের সর্বনাশ করো না, আর তোমরা সৎকর্ম করো। আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণদের কে ভালোবাসেন।’ (সুরা বাকারা,আয়াত: ১৯৫)

আরও পড়ুনআত্মহত্যা অনুচিত ও মহাপাপ২২ জানুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আল ল হ

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের হামলায় ২০ ইসরায়েলি নিহত: বিবিসি

ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চারদিন ধরে চলছে। এসব হামলায় উভয় দেশের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ইসরায়েলের জাতীয় পরিষেবা জানিয়েছে, আজ সোমবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। ফলে গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ২০ জনে পৌঁছেছে। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা বিবিসি।

অন্যদিকে আল জাজিরা বলছে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ