খুলনায় ইউপি চেয়ারম্যানকে লক্ষ্য করে বোমা হামলা, সড়ক অবরোধ
Published: 4th, April 2025 GMT
খুলনার ফুলতলা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আবুল বাশারকে (৫২) লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা। তবে, বোমাটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে দূরে গিয়ে পড়ে বিস্ফোরিত হয়। বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) রাতে খুলনা-যশোর মহাসড়কের চৌদ্দমাইল এলাকায় এ বোমা হামলা হয়।
এ ঘটনার পর বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সড়কের ওপর টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ফুলতলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.
পুলিশ ও বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৮টার দিকে শেখ আবুল বাশার তার সহযোগীর মোটরসাইকেলের পিছনে বসে ফুলতলা বাজার থেকে বুড়িয়ারডাঙ্গা সরদার বাড়ি এলাকায় নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। খুলনা-যশোর মহাসড়কে সুপার জুট মিলের সামনে পৌঁছালে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করে। বোমাটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে রাস্তার ওপর পড়ে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলে তিনি রক্ষা পান।
শেখ আবুল বাশারের ওপর বোমা হামলা হয়েছে, এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে অল্প সময়ের মধ্যে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে সড়কের ওপর টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
পরে বাসস্ট্যান্ড চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশে খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামান মন্টু, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ আবুল বাশার, সদস্য সচিব মনির হাসান টিটো, যুগ্ম আহ্বায়ক মোল্যা মনিরুল ইসলাম, কাজী আনোয়ার হোসেন বাবু, শফিক আহমেদ মেজবা, আতাউর রহমান, শেখ আলমগীর হোসেন, মোতাহার হোসেন কিরণ প্রমুখ বক্তৃতা করেন। তারা অবিলম্বে বোমা হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান।
খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির নেতারা যৌথ বিবৃতিতে বোমা হামলার তীব্র নিন্দা এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, পতিত সরকারের দোসররা খুলনাকে অশান্ত করতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। বিএনপি নেতা শেখ আবুল বাশারের ওপর বোমা হামলা তারই অংশ।
বিবৃতিদাতারা হলেন—বিএনপির নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু হোসেন বাবু, খুলনা মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাদী, মাসুদ পারভেজ বাবু এবং চৌধুরী হাসানুর রশিদ মিরাজ।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র স র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।