রাশিয়ার বিরুদ্ধে শান্তি প্রচেষ্টা বানচালের অভিযোগ
Published: 5th, April 2025 GMT
ইউক্রেনে দ্রুত শান্তিচুক্তি চাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে তাঁর প্রশাসন। রাশিয়া ট্রাম্প প্রশাসনের সব প্রচেষ্টাকে বানচাল করছে বলে অভিযোগ করেছেন ইউরোপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
গতকাল শুক্রবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে সামরিক জোট ন্যাটোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের এক বৈঠকে ইউরোপের প্রতিনিধিরা ওই মনোভাব ব্যক্ত করেন। তারা মনে করেন, শান্তিচুক্তিতে বাধ্য করতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠিন অবস্থান গ্রহণ করা উচিত ট্রাম্প প্রশাসনের। কারণ, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট শান্তিচুক্তির বিষয়ে আন্তরিক নন।
ব্রাসেলসের বৈঠক সম্পর্কে জানেন এমন কয়েকটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, পুতিনের মনোভাব নিয়ে সম্প্রতি সতর্ক হয়ে উঠেছে হোয়াইট হাউস। ট্রাম্প যদিও এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে বলছেন, তিনি বিশ্বাস করেন, পুতিন যুদ্ধ শেষ করতে চান।
মার্চ মাসে মস্কোকে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব দিয়েছিল ওয়াশিংটন। কিয়েভ এতে সম্মতি জানিয়েছিল। শর্ত সাপেক্ষে তাতে সম্মত হবে বলে জানালেও শেষ পর্যন্ত তা প্রত্যাখ্যান করেছিল মস্কো। তবে জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা বন্ধের বিষয়ে উভয় পক্ষ একমত হয়েছিল। কিন্তু পরে উভয় পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে তা লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে।
এএফপি জানায়, ন্যাটোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের দ্বিতীয় দিনের বৈঠকের আগে গতকাল ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন নোয়েল ব্যারোট বলেন, মস্কো যুক্তরাষ্ট্রের কাছে জবাব দিতে বাধ্য। তারা মধ্যস্থতা ও যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়েছে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেছেন, পুতিন বিভ্রান্তি অব্যাহত রেখেছেন। ল্যাং মারাও চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি চাইলে এখনই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে পারেন। কিন্তু তিনি ইউক্রেন, দেশটির সাধারণ মানুষ এবং জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থায় বোমা হামলা অব্যাহত রেখেছেন। আমরা আপনাকে দেখছি ভ্লাদিমির পুতিন। আপনি যা করছেন, আমরা তা জানি।’
পুতিনের শান্তিচুক্তির আলোচনা ‘অন্তঃসারশূন্য প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছু নয়’ উল্লেখ করে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেন, ‘নতুন নতুন দাবি উত্থাপন করে তিনি সময়ক্ষেপণ করছেন।’ কানাডা ও এস্তোনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাব গ্রহণের সময়সীমা ঘোষণার জন্য রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
যুদ্ধবিরতির জন্য মস্কো ও কিয়েভ উভয়ের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে ওয়াশিংটন। ন্যাটোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ইউক্রেনের পক্ষে, যুদ্ধ শেষ করার পক্ষে এবং যুদ্ধ শেষ করার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্যোগের প্রতি এখনও সমর্থন রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউক র ন র পরর ষ ট রমন ত র র পরর ষ ট র ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।