চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির বারোমাসিয়া খালের গতি পরিবর্তন করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে পানি উত্তোলন করেছে হালদা ভ্যালি চা বাগান কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পাম্প বসিয়ে একতরফা পানি উত্তোলন না করতে বাগান কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছিল পাউবো। কিন্তু তারা কোনো সাড়া দেয়নি। অবশেষে গত শুক্রবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং কৃষি সচিব ড.

মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানের নির্দেশে হালদা ভ্যালি চা বাগানে অভিযান চালিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এ সময় খালের দুই পাশের বাঁধ খুলে দেওয়া এবং পানি উত্তোলনে ব্যবহৃত পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এতে এলাকার ৫০০ একর বোরো ফসল ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। পর্যাপ্ত পানি পেয়ে কৃষকের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। 
প্রান্তিক কৃষকদের চাষাবাদের সুবিধার্থে ১৯৮০ সালে ফটিকছড়ি উপজেলার নারায়ণহাট ইদিলপুর এলাকায় একটি মাঝারি ধরনের স্লুইসগেট স্থাপন করে সরকার। প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে এটি ব্যবহার করে শত শত কৃষক বোরো ধান আবাদ করেন। কিন্তু প্রতিবছরই চা বাগান কর্তৃপক্ষের একতরফা পানি উত্তোলনের কারণে চাহিদামতো চাষাবাদ করতে পারেন না কৃষক। এ বিষয়ে সম্প্রতি সমকালে সংবাদ প্রকাশ হয়। 
এ বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, বাগান কর্তৃপক্ষের একতরফা পানি উত্তোলনের কারণে কৃষকের ক্ষতির বিষয়টি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আমাদের জানিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে আমি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলাম। বাগান কর্তৃপক্ষকে ১১ মার্চ তিন দিনের সময় বেঁধে দিয়েছিল পাউবো, কিন্তু তারা আমলে নেয়নি। গত শুক্রবার উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের নেতৃত্ব পানির ডাইভারশন বন্ধ করা হয় এবং ছয়টি পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। ভবিষ্যতে একতরফা পানি উত্তোলন করা হলে হালদা ভ্যালি চা বাগানের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হবে।
বারোমাসিয়া পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ফজলুল করিম বলেন, কৃষকরা বোরো ধানে পানি দিতে না পারায় জমি শুকিয়ে যাচ্ছে। ধানগাছ মরে যাচ্ছে। বাগান কর্তৃপক্ষকে বারবার বিষয়টি বলার পরও তারা মানেনি। তাদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে ধান উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। অবশেষে খালের পানি খুলে দিয়ে সেচ পাম্প বন্ধ করায় শত শত কৃষক আনন্দিত। এই মৌসুমে বোরো চাষিদের আর সমস্যা হবে না।
 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মেয়র পদ নিয়ে ইশরাকের মামলায় ইসির ভূমিকায় এনসিপির উদ্বেগ

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদ নিয়ে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের মামলা, একতরফা রায় এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কার্যক্রম ও তৎপরতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়। এতে বলা হয়, বিচার বিভাগের মর্যাদা রক্ষা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতার বিষয়ে এনসিপি সর্বোচ্চ মনোযোগ দাবি করছে।

বিবৃতিতে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা লক্ষ করেছি, উল্লিখিত মামলার প্রথম তিন বছর পাঁচ মাসে ৩২টি তারিখ নির্ধারণ করা হলেও ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে মাত্র চার মাসে ১৭টি তারিখ দিয়ে মামলাটি তড়িঘড়ি করে নিষ্পত্তি করা হয়েছে। কিন্তু একই সময়ে অন্যান্য মামলার ক্ষেত্রে এত দ্রুততার সঙ্গে তারিখ ধার্য করা হয়নি। ফলে বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনাল শুধু এই মামলার একটি পক্ষকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে অন্যায্য সুবিধা প্রদান করেছেন কি না, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।’

এ মামলায় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা রহস্যজনক ছিল দাবি করে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এই মামলার বিবাদী হওয়া সত্ত্বেও মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি। ফলে একতরফা রায় প্রদান করা হয়েছে। এমনকি রায়ের পরে তারা উচ্চ আদালতে প্রতিকার প্রার্থনা না করে মামলার বাদীকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।’

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘কমিশনের এমন তৎপরতা অস্বাভাবিক ও উদ্বেগজনক। এর আগেও আমরা দেখেছি নির্বাচন কমিশন তার নিরপেক্ষ আচরণ বজায় রাখার পরিবর্তে এমন সব বক্তব্য প্রদান করেছে, যা একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলকে সুবিধা দিচ্ছে বলে জনগণ মনে করে।’

এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘এই রায় ঘোষণার আগেই সংশ্লিষ্ট আইনের অধীন গত ১৯ আগস্ট ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। ফলে পুরো মামলাটিই অকার্যকর হয়ে গেছে। এরপরও রায় ও তড়িঘড়ি করে কমিশন কর্তৃক গেজেট প্রকাশের পেছনে কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য ছিল কি না, তা জনসাধারণের সামনে পরিষ্কার করতে হবে।’

আরও পড়ুনইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ ইসির২৭ এপ্রিল ২০২৫

২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ফল বাতিল এবং ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ মার্চ রায় দেন আদালত। ইশরাক ২০২০ সালের ৩ মার্চ নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেছিলেন। রোববার রাতে তাঁকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।

আরও পড়ুনঅবৈধ নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে, মেয়র পদে বসা নিয়ে বললেন উপদেষ্টা২৬ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেয়র পদ নিয়ে ইশরাকের মামলায় ইসির ভূমিকায় এনসিপির উদ্বেগ
  • ভারত-পাকিস্তান পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে বেইজিং: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী