Samakal:
2025-06-15@23:34:39 GMT

এক হোম শেফের গল্প

Published: 5th, April 2025 GMT

এক হোম শেফের গল্প

‘সুখী গৃহিণী’ বলতে যা বোঝায়, তার উদাহরণ হতে পারেন রাজধানীর রামপুরা মহানগর আবাসিক এলাকার সাবিনা ইয়াসমিন। স্বামী ব্যাংক কর্মকর্তা। সাবিনা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেছেন। মেয়ে সোফিয়া আর শাশুড়িকে নিয়ে বেশ ভালোই কাটছিল সময়। হঠাৎ শাশুড়ির অসুস্থতায় সুখী পরিবারটি যেন অকূল-পাথারে পড়ে। চিকিৎসার জন্য প্রতি মাসে লাগবে প্রায় ৪০ হাজার টাকা। মায়ের অসুস্থতায় সাবিনার স্বামীও প্রায় দিশেহারা। সাবিনা ভাবছিলেন, কীভাবে স্বামীর পাশে দাঁড়ানো যায়। 
একসময় টিউশনি করে মাসে ২০ হাজারেরও বেশি টাকা উপার্জন করেছেন। অসুস্থ শাশুড়ি আর ছোট্ট সোফিয়া থাকায় ঘরের বাইরে কোনো কাজ করাও সম্ভব হচ্ছিল না। একদিন জানতে পারলেন, বাড়িতে খাবার রান্না করে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেক নারী। নিজের রান্নার প্রশংসা শুনে অভ্যস্ত সাবিনা– তাই সাহস করে যোগাযোগ করলেন অনলাইন ফুড ও গ্রোসারি ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম ফুডপান্ডায়। অল্প দিনের মধ্যে তিনি একের পর এক অর্ডার পেতে থাকেন। সাবিনা মেয়ের নামে রেখেছেন তাঁর ক্লাউড কিচেনের নাম– সোফিয়া’স কিচেন।
রুটি, পরোটা, সাদা ভাত, খিচুড়ি, পোলাও, বিফ ভুনা, পায়া, বট, বয়লার আর সোনালি চিকেন কারি, নানা ধরনের মাছের আইটেম, বুটের ডাল, মিক্সড সবজি, বাহারি ভর্তা, ভাজি, সুজির হালুয়া, নুডলস, পাস্তা, বিফ হালিম দিয়ে সাজানো সাবিনার মেন্যু। শুরুর দু’দিনের মধ্যে সাবিনা বেশ কিছু অর্ডার পান আর তা সঠিক সময়ে পাঠিয়ে দেন। সাবিনার প্রোফাইলে ফাইভ স্টার রেটিং বাড়তে থাকল।
তবে কাজটা সহজও ছিল না। ছোট্ট সোফিয়ার দেখভাল, শাশুড়ির যত্নআত্তি আর সংসারের দশটা প্রয়োজন সামলিয়ে ঠিকঠাক অর্ডার পাঠানো রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মতো মনে হচ্ছিল সাবিনার। এরই মধ্যে একদিন দুর্ঘটনায় বাম হাতের অনেকটা পুড়ে গেল তাঁর। ব্যান্ডেজ করা হাত নিয়ে কাজ করতে গিয়ে রান্নাঘরে কেঁদে ফেলতেন সাবিনা। সংসারের প্রয়োজনের কথা ভেবে আবার উঠে দাঁড়াতেন। 
প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে শুরু করে রাত ১২টা পর্যন্ত হোম কিচেন চালু রাখেন সাবিনা। তিনি জানান, রমজান মাসে ইফতার ও সাহ্‌রিও বিক্রি করেছেন। সাবিনা বলেন, ‘অনলাইন প্ল্যাটফর্মে কোনো প্রারম্ভিক পুঁজি ছাড়া নিজের ব্যবসা শুরু করে আয় করার সুযোগ পেয়েছি। এর ফলে উদ্যোক্তা হওয়া আমার জন্য সহজ হয়েছে। ঘরে বসে আয় করে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পেরেছি।’
হোমশেফ হিসেবে কাজ করে সাবিনা নিজের অনেক স্বপ্নও পূরণ করেছেন। তিনি বলেন, ‘অনলাইন প্ল্যাটফর্মে খাবার বিক্রি শুরুর পর ফার্নিচার কিনে নিজের মতো করে বাসা সাজিয়েছি। স্বামীর অনেক স্বপ্ন পূরণেও পাশে দাঁড়িয়েছি। ১১ বছরের সংসার জীবনে কখনও হানিমুনে যাওয়ার সাহস করিনি। কিছুদিন আগে আমরা কক্সবাজার ঘুরে আসতে পেরেছি।’
এখন অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রায় শতভাগ অর্ডার ডেলিভারি করে সোফিয়া’স কিচেন। তবে সাবিনার স্বপ্ন অনেক বড়। একদিন অনেক বড় রেস্টুরেন্ট হবে সোফিয়া’স কিচেন। শত প্রতিকূলতা অতিক্রম করে সফল রন্ধনশিল্পী ও ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখেন সাবিনা। v

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ, চালক আটক

ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক কলেজছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কে রোববার রাতে যাত্রীবাহী বাসে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে স্থানীয় জনতা সড়কের তিনতালাব পুকুর পাড় নামক স্থানে বাসটি আটক করে এবং বাসের ড্রাইভারকে আটক করে সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে। এসময় বাসের হেলপার পালিয়ে যায়।
 
পরে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য ওই কলেজ ছাত্রী ও ড্রাইভারকে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

জানা যায়, ঢাকায় একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে ওই ছাত্রী। রোববার সকালে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে একটি বাসে উঠেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি যেতে বানিয়াচং যাওয়ার পথে শায়েস্থাগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে নামার কথা থাকলেও তিনি বাসের মধ্যে ঘুমিয়ে যান। ফলে বাস তাকে শায়েস্থাগঞ্জে না নামিয়ে শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টায় ওই কলেজছাত্রী একটি লোকাল বাসে উঠে। সেই বাসে কয়েকজন যাত্রী ছিল, বাসটি নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি নামক স্থানে পৌঁছালে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। এরপর ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে বাসের চালক ও হেলপার তাকে বাসে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

এ বিষয়ে ওই ছাত্রী জানায়, তিনি ঢাকায় একটি কলেজে লেখাপড়া করেন। তার পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকে তিনি ঢাকায় ঈদ করেছে। ঈদের ছুটিতে তিনি বাড়ি আসেননি এই জন্য আজকে গ্রামের বাড়িতে আসছিলেন।

বানিয়াচং থানার সেনাক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা কলেজছাত্রী ও বাস চালককে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেছি।

এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি দুলাল মিয়া জানান, ঘটনার পর বাস চালককে আটক করা হয়েছে এবং হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে মামলা লেখার কাজ চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ