মহাবিশ্বে প্রথম জ্বলে ওঠা আলোর ছবি তুলেছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপে
Published: 6th, April 2025 GMT
বিগ ব্যাং বিস্ফোরণের পর মহাবিশ্বে প্রথম জ্বলে ওঠা আলোর ছবি তুলেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। বিজ্ঞানীদের দাবি, বিগ ব্যাং বিস্ফোরণের ৩৩ কোটি বছর পর এই আলো নির্গত হয়েছে। সে সময় হাইড্রোজেন গ্যাসের ঘন কুয়াশার কারণে অন্ধকার ভেদ করে আলো ছড়িয়ে পড়া বেশ কঠিন ছিল। তবে জেডস বা জেএডিইএস-জিএস-জেড১৩-এলএ নামের এক ছায়াপথ থেকে সেই পরিস্থিতিতে কোনোভাবে এই আলো ছড়িয়ে পড়েছে। জেডস নামের ছায়াপথটি মহাবিশ্বের সবচেয়ে দূরবর্তী ছায়াপথের মধ্যে একটি। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ ছবি তোলার আগে এই আলো প্রায় ১ হাজার ৩৫০ কোটি আলোকবর্ষ ভ্রমণ করে এসেছে। এই ছায়াপথটি মহাবিশ্বের মতোই বেশ প্রাচীন।
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা যত দূরে তাকাচ্ছেন, ততই মহাকাশের শুরুর দিককার বিভিন্ন তথ্য জানতে পারছেন। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, জেডস ছায়াপথ থেকে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ একটি লাইম্যান-আলফা তরঙ্গের নিঃসরণ শনাক্ত করেছে। এই উজ্জ্বল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য হাইড্রোজেনের মাধ্যমে খুব সহজে শোষিত হয়। ধারণা করা হচ্ছে, ছায়াপথটিকে ঘিরে থাকা হাইড্রোজেন পরমাণুর কুয়াশা সরে গেছে। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী রবার্টো মাইওলিনো বলেন, নতুন তথ্য প্রাথমিক পর্যায়ের ছায়াপথ গঠনের তত্ত্বের বিপরীতে অপ্রত্যাশিত ছিল। আর তাই আমাদের বিজ্ঞানীরা বিস্মিত হয়েছেন।
প্রায় ১ হাজার ৩৮০ কোটি বছর আগে বিগ ব্যাং বিস্ফোরণের মাধ্যমে মহাবিশ্বের শুরু হয়। প্রাথমিক অবস্থায় মহাবিশ্ব অন্য রকম ছিল। বিগ ব্যাংয়ের পরবর্তী কয়েকশত বছরকে মহাবিশ্বের অন্ধকার যুগ বলা হয়। তখন কোনো গ্রহ, নক্ষত্র বা ছায়াপথের অস্তিত্ব ছিল না। সে সময় মহাবিশ্বে কেবল হাইড্রোজেন পরমাণুর কুয়াশা অন্ধকারে ভেসে বেড়াচ্ছিল। বিগ ব্যাংয়ের প্রায় ৬৮ কোটি বছর পর প্রথম নক্ষত্র ও ছায়াপথ গঠিত হতে শুরু করে। তখন ছায়াপথ অন্ধকার ভেদ করে অতিবেগুনী বিকিরণ নির্গত করেছিল, যা হাইড্রোজেন পরমাণুকে ভাঙতে শুরু করে। তখন থেকেই ধীরে ধীরে মহাবিশ্ব স্বচ্ছ হতে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী কেভিন হেইনলাইন বলেন, ‘মহাবিশ্বের বিবর্তন নিয়ে আমরা যা জানি, সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের সত্যিই এই রকম একটি ছায়াপথ খুঁজে পাওয়ার সুযোগ ছিল। আমরা প্রাথমিক মহাবিশ্বকে একটি ঘন কুয়াশার আবরণে ঢাকা একটি স্থানের মতো ভাবতে পারি। সেই অন্ধকারে শক্তিশালী বাতিঘরের আলোকে খুঁজে বের করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। এমন এক পরিবেশে আমরা এই ছায়াপথের আলোর রশ্মির দেখা পেয়েছি।’
সূত্র: ডেইলি মেইল
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘দেশটা তোমার বাপের নাকি’ গাওয়ার পর পালিয়ে থাকতে হয়েছিল
শিল্পীর সৌজন্যে