বেঁদেপল্লীতে যুবককে হত্যা: ওসির অপসারণ দাবি
Published: 6th, April 2025 GMT
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কাশিপুর বেঁদেপল্লীতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আবু তালেব নামে এক যুবককে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় হওয়া মামলা থেকে মাস্টারমাইন্ডকে বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে কালীগঞ্জ থানায় অবস্থান ও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বেঁদেপল্লীর বাসিন্দারা।
বিক্ষোভ চলাকালে তারা কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদারের অপসারণের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
রবিবার (৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রায় দুই শতাধিক নারী-পুরুষ থানায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। সেখানে তারা প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান নেন। এরপর তারা শহরের নিমতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা যশোর-ঝিনাইদহ সড়ক অবরোধ করে রাখানে। ফলে রাস্তার দুই পাশে অসংখ্য গাড়ি আটকা পড়ে। পরে তিনদিনের মধ্যে ওসির অপসারণের আল্টিমেটাম দিয়ে মহাসড়ক থেকে সরে যান বেঁদেপল্লীর বাসিন্দারা।
আরো পড়ুন:
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে দুর্নীতি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ
কারখানা বন্ধের ঘোষণায় সাভারের সড়কে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
কালীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মোফাজ্জেল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে, আসামিও গ্রেপ্তার হয়েছেন। এখন তারা (বেঁদেপল্লীর মানুষ) মামলায় নতুন করে আরো আসামি করার দাবি নিয়ে থানায় এসে বিশৃঙ্খলা শুরু করে। তাদের থানা চত্বরে বিশৃঙ্খলা না করার জন্য বলা হয়। এরপর বিক্ষোভকারীরা উত্তেজিত হয়ে থানার পাশে মহাসড়ক অবরোধ করে।”
আরো পড়ুন: গভীর রাতে ডাকাডাকি, বের হতেই যুবককে হত্যা
গত ৩ এপ্রিল ভোররাতে পূর্ব শত্রুতার জেরে আবু তালেব নামে এক যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে লোহার রড দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়। ওই দিনই নিহতের ভাই আব্দুল আলীমকে থানায় ডেকে মামলার বাদী করানো হয়। এজাহারে কি লেখা আছে তার কিছুই জানেন না বলে অভিযোগ করেন বাদী। মামলায় রুবেল হোসেন নামে একজনকে আসামি করা হয়েছে। যাকে ওইদিনই গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নিহতের ভাই ও মামলার বাদী মোহাম্মদ আব্দুল আলীম বলেন, “ঘটনার দিন আমরা থানায় যায়। এক পর্যায়ে থানার ওসি আমাদের সবাইকে বের করে দেন। পরে বাড়ি থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিয়ে একটি মামলা নথিভুক্ত করেন। এজাহারে কি লেখা সেটি জানি না। ওসি নিজের মন মতো এজাহারে একজনকে আসামি করেছেন। হত্যার মাস্টারমাইন্ড সেলিম নামে একজন। তিনি চিহ্নিত মাদক কারবারি। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। এই হত্যার মাস্টারমাইন্ড সেলিমকে ওসি মামলা থেকে বাদ দিয়েছেন।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “কালীগঞ্জ থানার অনেক পুলিশ সদস্য বেঁদেপল্লীতে গিয়ে সেলিমের সঙ্গে বসে আড্ডা নেন। আমরা দ্রুত এই ওসির অপসারণ চাই। এই ওসি অপসারণ না হলে আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার পাবো না।”
মামলার আসামি রুবেল হোসেনের স্ত্রী মাবিয়া খাতুনও বিচারের দাবিতে এসেছিলেন থানায়। তিনি জানান, তার স্বামীকে ভোররাতে ডেকে নিয়ে যায় সেলিম। তাকে ইয়াবা ও গাঁজা সেবন করিয়ে আবু তালেবকে হত্যা করানো হয়। তিনি তার স্বামী রুবেল হোসেন ও সেলিমের বিচার চান।
নিহত আবু তালেবের স্ত্রী জানেদা বেগম বলেন, “ওসি টাকার বিনিময়ে সেলিমের নাম বাদ দিয়েছেন। এই ওসিকে কালীগঞ্জে চাই না।”
এ বিষয়ে জানতে কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদারের সরকারি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনজুর মোরশেদের মোবাইলে ফোন দিলেও সাড়া মেলেনি।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া মোবাইলে কল করা হলে তিনি জানান, কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষার জন্য তিনি নড়াইলে আছেন। পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
ঢাকা/শাহরিয়ার/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবর ধ অবস থ ন ঝ ন ইদহ দ পল ল য বকক
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ট্রেলীয় সাংবাদিকের প্রশ্নে কেন চটে গেলেন ট্রাম্প, আলবানিজের কাছে নালিশেরও হুমকি দিলেন
ব্যক্তিগত সম্পদ ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন করায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যম এবিসির এক সাংবাদিকের ওপর ভীষণ চটে যান। ওই সাংবাদিকের কারণে ‘অস্ট্রেলিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে’ বলে সতর্ক করেন তিনি। এমনকি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সঙ্গে আসন্ন বৈঠকে ওই সাংবাদিকের ব্যাপারে নালিশ করারও হুমকি দেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের লনে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন ট্রাম্প। এবিসির সাংবাদিক জন লায়ন্সও তাঁকে প্রশ্ন করছিলেন। লায়ন্স এবিসিতে প্রচারিত ফোর কর্নারস অনুষ্ঠানের জন্য সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন।
লায়ন্সের সঙ্গে কথোপকথনে ট্রাম্প এটাও বলেছেন, তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠকে অংশ নিতে যাচ্ছেন। আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়ার ফাঁকে ওই বৈঠক হতে পারে।
গতকাল লায়ন্স ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেন, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি কতটা ধনী হয়েছেন? তিনি আরও উল্লেখ করেন, ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে অবস্থান করা সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জানি না।’ তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ট্রাম্প অর্গানাইজেশন নামে তাঁর যে পারিবারিক ব্যবসাটি আছে, সেটি এখন তাঁর সন্তানেরা পরিচালনা করেন।
ট্রাম্পের দাবি, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগেই বেশির ভাগ ব্যবসায়িক চুক্তি হয়েছে।
লায়ন্সের সঙ্গে কথোপকথনে ট্রাম্প এটাও বলেছেন যে তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠকে অংশ নিতে যাচ্ছেন। আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়ার ফাঁকে ওই বৈঠক হতে পারে।এরপর লায়ন্স ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যক্তিগত ব্যবসা করা ঠিক কি না? ট্রাম্প বলেন, ‘আসলে আমি নই, আমার সন্তানেরা ব্যবসা চালাচ্ছে।’
এরপর লায়ন্সকে ট্রাম্প জিজ্ঞাসা করেন, তিনি (লায়ন্স) কোথা থেকে এসেছেন।
এরপর ট্রাম্প চটে গিয়ে বলেন, এ ধরনের প্রশ্ন করার মধ্য দিয়ে লায়ন্স ‘অস্ট্রেলিয়ার ক্ষতি’ করছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলতে থাকেন, ‘আমার মতে, আপনি এ মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ার অনেক ক্ষতি করছেন। আর তারা আমার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে চায়। আপনি জানেন, আপনার নেতা (অ্যান্থনি আলবানিজ) শিগগিরই আমার সঙ্গে দেখা করতে আসছেন। আমি তাঁকে আপনার ব্যাপারে বলব। আপনি খুব খারাপ ভঙ্গিতে কথা বলছেন। আপনি আরও ভালোভাবে কথা বলুন।’
সাংবাদিক লায়ন্স ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যক্তিগত ব্যবসা করা ঠিক কি না? ট্রাম্প বলেন, ‘আসলে আমি নই, আমার সন্তানেরা ব্যবসা চালাচ্ছে।’এরপর লায়ন্স আবারও কিছু বলতে গেলে তাঁকে থামিয়ে দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘চুপ করুন’।
গত জুনে কানাডায় জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে প্রথমবারের মতো ট্রাম্প ও আলবানিজের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তবে হঠাৎই তা বাতিল হয়ে যায়। এর পর থেকে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের চেষ্টা করছেন আলবানিজ।
আরও পড়ুনট্রাম্প-জেলেনস্কির বাগ্বিতণ্ডার পর কী বললেন স্টারমার ও আলবানিজ০১ মার্চ ২০২৫সম্প্রতি আলবানিজ বলেছেন, নিউইয়র্কে বিশ্বনেতাদের সম্মেলন ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদানকালে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর দেখা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিউইয়র্কে আমাদের একে অপরের সঙ্গে দেখা হবে। আগামী সপ্তাহের মঙ্গলবার রাতে তিনি একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন। এ ছাড়া চলতি বছরের শেষ নাগাদ বিভিন্ন ফোরামে আমাদের দেখা হবে। এটা সম্মেলনের মৌসুম।’
ট্রাম্পের সঙ্গে আলবানিজের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জরুরি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে আছে পেন্টাগনের অকাস পারমাণবিক সাবমেরিন চুক্তি এবং প্রতিরক্ষা খাতে আরও ব্যয় বাড়াতে ট্রাম্প অস্ট্রেলিয়ার কাছে যে দাবি জানিয়েছেন, তা নিয়ে পর্যালোচনা।