ভারতের লোকসভায় ওয়াক্ফ বিল পাসের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইয়াং মুসলিম ইন্টেলেজেনশিয়া।

তরুণ আলেম, চিন্তক, লেখক, বুদ্ধিজীবী, অধিকারকর্মী ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত এই ‘প্ল্যাটফর্ম’ বলেছে, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সরকারের ওই বিল দেশটির মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ ও সাংবিধানিক অধিকার হরণ করবে।

আজ রোববার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছে ইয়াং মুসলিম ইন্টেলেজেনশিয়া। তারা ওয়াক্ফ বিল বাতিলের দাবি করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘১৯৪৭–পরবর্তী সময় থেকে ধারাবাহিকভাবে ইন্ডিয়ান মুসলমান, দলিত ও অন্যান্য সংখ্যালঘুর ওপর রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হিন্দুত্ববাদী ও ব্রাহ্মণ্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে বর্ণবাদী জুলুম-নিপীড়ন আমরা দেখে আসছি। সম্প্রতি বিজেপি সরকার কর্তৃক এমন সব আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যা মূলত ইন্ডিয়ান মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আইনি সহিংসতা। একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে মুসলমানদের সঙ্গে চলমান এসব আচরণ অত্যন্ত গর্হিত এবং সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকারের পরিপন্থী।’

‘এই ধারাবাহিকতারই নজির হিসেবে “ওয়াক্ফ (সংশোধনী) বিল ২০২৫”–এর মধ্যে বিজেপি সরকারের মুসলিমবিদ্বেষী মনোভাব ও অপরায়ণমূলক হিন্দুরাষ্ট্রের উৎকট চরিত্র প্রকাশ পেয়েছে, যেখানে মুসলিমরা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে থাকবে’, বলা হয় বিবৃতিতে।

দিল্লি কথায় কথায় প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোকে ‘সংখ্যালঘুদের অধিকার’ বিষয়ে সবক দেয় এবং ‘সংখ্যালঘু’সহ বিভিন্ন বিষয়ে তারা প্রায়ই স্বাধীন–সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার মতো আধিপত্যবাদী আচরণ করতে দ্বিধাবোধ করে না বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, অথচ ভারত নিজেরাই নিজ দেশের মুসলমান ও অন্যান্য ‘সংখ্যালঘু’র অধিকার, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হচ্ছে।

ভারতের পীর ও দরবেশদের মাজার, খানকা, দরগাহ সামাজিক সম্প্রীতি ও অসহায়ের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার হয় বলে উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই প্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকাংশই ওয়াক্ফভিত্তিক সম্পত্তির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। মুসলিম স্বার্থবিরোধী ও সংবিধানপরিপন্থী বিতর্কিত ওয়াক্ফ বিল পাসের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয়ভাবে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির আঁতুড়ঘর এই প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের বন্দোবস্ত করা হয়েছে।

বিলের মধ্যে থাকা আইনি ফাঁকফোকর ব্যবহার করে মুসলমানদের ওয়াক্ফকৃত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে সরকারি সম্পত্তি ঘোষণা করা হবে এবং মুসলমানদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ভিত্তিশূন্য করে রাষ্ট্রহীন উদ্বাস্তুতে পরিণত করা হবে বলেও আশঙ্কা করা হয় ইয়াং মুসলিম ইন্টেলেজেনশিয়ার বিবৃতিতে।

বিবৃতিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে কূটনৈতিক পর্যায়ে ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের পাশে দাঁড়াতে এবং তাদের রাষ্ট্রীয় আগ্রাসনকে রুখে দিতে আহ্বান জানানো হয়।

ইয়াং মুসলিম ইন্টেলিজেনশিয়ার পক্ষে বিবৃতিদাতারা হলেন মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফের শাহজাদা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মিফতাহুন নূর মাইজভাণ্ডারী, ইসলামি বক্তা সৈয়দ মুহাম্মদ হাসান আল আজহারী, লেখক ও চিন্তক ভূইয়া মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, সংগঠক ইমরান হুসাইন তুষার, লেখক-প্রাবন্ধিক মোহাম্মদ আবু সাঈদ, মুফতি আ ন ম ছাইফুল্লাহ, মাওলানা হাফিজ সাইফুল করিম নাঈম, ই-কমার্স খাতের ব্যবসায়ী মুন্সী গিয়াস উদ্দীন, আইনজীবী রিদুয়ানুল ইসলাম ও তোফায়েল আহমেদ, লেখক সৈয়দুল হক প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম সলম ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

যে ৬টি সীমারেখা একজন পুরুষকে নারীর কাছে আকর্ষণীয় করে তোলে

১. নিজেকে সহজলভ্য না করা

যে পুরুষ ফোনে মেসেজ পেলেই সব কাজ ফেলে উত্তর দেন না, ফোন বেজে উঠলেই অস্থির হয়ে পড়েন না—নারীরা স্বাভাবিকভাবেই তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হন। কারণ, এতে তাঁরা ভাবেন, এই মানুষটা আলাদা।

একজন পুরুষ, যিনি কাউকে ভালোবাসলেও নিজের জগৎ ভুলে যান না, তিনি নারীদের কাছে ভিন্ন রকম। এতে নারী বুঝতে পারেন, এই পুরুষটি কারও মনোযোগ পাওয়ার জন্য ছোটেন না, বরং নিজের সময় ও জীবনকে গুরুত্ব দেন। আর যা সহজে পাওয়া যায় না, সেটাই হয়ে ওঠে সবচেয়ে আকর্ষণীয়।

আমাদের সমাজে যেখানে অনেকে মনে করেন, ২৪ ঘণ্টা অনলাইনে থাকাই ভালোবাসার প্রমাণ, সেখানে এ ধরনের পুরুষ হন ব্যতিক্রম। তিনি তাঁর প্রতিটি মুহূর্ত অন্যের জন্য উন্মুক্ত রাখেন না; কারণ, তাঁর সময় দখল করে রেখেছে তাঁর লক্ষ্য, কাজ ও তাঁর জীবন। এই সামান্য দূরত্বই জন্ম দেয় গভীর আকর্ষণের।

২. আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ‘না’ বলা

একজন নারী যখন কাউকে সত্যিকার অর্থে পছন্দ করেন, তিনি শুধু সুন্দর চেহারা দেখেন না। তিনি খোঁজেন এমন একজনকে, যিনি নিজের সীমারেখা সম্পর্কে সচেতন এবং কারও মন রক্ষার জন্য নিজের অবস্থান থেকে সরে যান না। যিনি সোজাসাপটা বলেন, ‘আমি যেতে পারব না’ বা ‘আমি কাজটা করতে পারব না’।

আবার ভদ্রতা দেখিয়ে বলেন না, ‘আশা করি কিছু মনে করবেন না।’ যে পুরুষ দুঃখ প্রকাশ না করে এবং অপরাধবোধ ছাড়াই ‘না’ বলতে পারেন, তিনি নারীদের চোখে হয়ে ওঠেন সম্মানের। কারণ, এতে নারী বুঝতে পারেন, এই মানুষটির আত্মমর্যাদা আছে, নিজের সময়কে গুরুত্ব দেন।

এ রকম পুরুষ পাওয়া সহজ নয়। আর যা সহজ নয়, তা–ই সবচেয়ে বেশি টানে। কারণ, নারী খোঁজেন এমন কাউকে, যাঁকে তিনি শুধু ভালোবাসবেন না, শ্রদ্ধাও করবেন।

৩. নিজেকে অসম্মানিত হতে না দেওয়া

কখনো কখনো অসম্মান করা হয় ঠাট্টার ছলে, কটাক্ষ করে। বেশির ভাগ পুরুষ এমন মুহূর্তে চুপ করে থাকেন, যাতে সহকর্মী বা পরিচিতজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি না হয়। কিন্তু একজন আত্মমর্যাদাবান পুরুষ তা করেন না। তিনি রেগে না গিয়ে, অন্যকে অপমান না করেও শান্ত গলায় বলেন, ‘আমি এ ধরনের আচরণ বা ব্যবহার মেনে নিই না।’

এই স্বচ্ছ ও দৃঢ় অবস্থান নারীদের মনে তৈরি করে ভরসা, নিরাপত্তা আর সম্মানের অনুভব। কারণ, তাঁরা বুঝে যান, যে পুরুষ নিজের সম্মান রক্ষা করতে জানেন, তিনি অন্যের সম্মান রক্ষায় পিছপা হবেন না।

এ ধরনের পুরুষ তাই নারীদের চোখে হয়ে ওঠেন আরও আকর্ষণীয়; শুধু তার কথার জন্য নয়, তাঁর স্থির ও সাহসী উপস্থিতির জন্য।

আরও পড়ুনকিডনি ভালো রাখতে যে ৩টি খাবার খাবেন২৮ জুলাই ২০২৫৪. চট করে প্রতিক্রিয়া না দেখানো

অনেক সময় নারীরা পুরুষকে ছোট ছোট পরীক্ষায় ফেলেন, তবে সেটা কিন্তু বেকায়দায় ফেলার জন্য নয়, বরং অবচেতনভাবে একজন সঙ্গীর ভেতরে স্থিরতা ও ভরসা খোঁজার জন্য।

তাঁরা হয়তো খোঁচা দেন, রসিকতা করেন, কিংবা হালকা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন, এটা দেখার জন্য যে পুরুষটি চাপের মুখে কতটা স্থির থাকতে পারেন।

বেশির ভাগ পুরুষ এসব মুহূর্তে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া দেখান; রেগে যান, তর্কে জড়ান বা ব্যাখ্যা দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু যেসব পুরুষ শান্ত থাকেন, একটুখানি হাসেন কিংবা কিছুই না বলে নিজের ভেতরের ভারসাম্য ধরে রাখেন, তাঁরা সেই মুহূর্তেই অন্যদের থেকে আলাদা হয়ে ওঠেন।

এ ধরনের পুরুষকে তখন নারী আর সাধারণ কেউ মনে করেন না। বরং তিনি হয়ে ওঠেন এক দৃঢ় পুরুষ। আর তাঁদের উপেক্ষা করা যায় না। তাঁদের ভেতরের শক্তি, আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং স্থিরতা নারীদের মনে আনে একধরনের নিরাপত্তা। নারীরা মনে করেন, তাঁরা শুধু পরিস্থিতি সামলাতে জানেন না, তার পাশে দাঁড়ানোও যায় নিশ্চিন্তে।

৫. নীরব আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদা

আত্মবিশ্বাস, স্থিরতা ও ভেতরের শক্তি—সব মিলিয়ে আত্মমর্যাদা একজন পুরুষকে পছন্দ করার অন্যতম কারণ। যে পুরুষ অল্প কথায় নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে পারেন, অযথা ব্যাখ্যা দেন না এবং সিদ্ধান্তে দৃঢ় থাকেন, নারীদের কাছে তিনিই হয়ে ওঠেন আলাদা।

যেমন তিনি সহজভাবে বলেন, ‘আমি যেতে পারব না, পরে দেখা হবে।’ এতে থাকে না দুঃখ প্রকাশ, থাকে না বাড়তি ব্যাখ্যা। এতে নারী বুঝতে পারেন, এই পুরুষ নিজেকে বোঝেন এবং অন্যের মতামত দিয়ে নিজের পথ বদলান না।

এ ধরনের পুরুষদের আচরণে থাকে একরকম শান্ত আত্মবিশ্বাস। তাঁরা কম কথা বলেন, কিন্তু যা বলেন, তা গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি তাঁর নীরবতাও অর্থবহ হয়ে ওঠে। নারীরা এসব পুরুষের মধ্যে খুঁজে পান ভরসা, যা শুধু কথায় নয়, আচরণেই ফুটে ওঠে। তাই নারীদের চোখে এই নিঃশব্দ আত্মমর্যাদা হয়ে ওঠে গভীর আকর্ষণের উৎস।

আরও পড়ুনহাতিরঝিলের রাস্তার গর্তে অটোরিকশা, দুজন আহত এবং একটি টুইস্ট১৬ ঘণ্টা আগে৬. লক্ষ্যে অটল থাকা

একজন পুরুষ সুদর্শন হলেই যে একজন নারী তাঁকে পছন্দ করবেন বা ভালোবাসবেন, এমনটা নয়। কারণ, একজন নারী এমন পুরুষকে ভালোবাসেন, যাঁর নিজের লক্ষ্য আছে। পাশাপাশি নিজের স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেন।

একজন নারী এমন কাউকে চান না, যিনি তাঁকেই (ওই নারীকে) নিজের পুরো জগৎ বানিয়ে ফেলেন। বরং এমন পুরুষকে ভালোবাসেন, যাঁর পাশে দাঁড়িয়ে নিজেও এগিয়ে যাওয়া যায়। যাঁকে সমর্থন করা যায়, যাঁর স্বপ্নে অংশ নেওয়া যায়।

সেই পুরুষ শুধু একজন সঙ্গী নন, বরং পূর্ণাঙ্গ এক মানুষ। যে পুরুষের সঙ্গে জীবন ভাগ করে নেওয়া যায় আত্মবিশ্বাস আর সম্মানের সঙ্গে। এই ভরসাপূর্ণ, আত্মবিশ্বাসী, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে অটল পুরুষই একজন নারীর কাছে হয়ে ওঠেন সত্যিকার অর্থে পছন্দের।

সূত্র: মিডিয়াম

আরও পড়ুনজিমে কেন হার্ট অ্যাটাক হয়১৪ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ট্রাম্পবিরোধী স্লোগান দিয়ে উড়োজাহাজে গ্রেপ্তার ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক
  • শিক্ষার গতিপথ ও উন্নয়ন নিয়ে ঢাবিতে সেমিনার
  • শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা 
  • ‘আমি কী অপরাধ করেছি’— সবাই জানেন শিরোনামটা...
  • নারীদের নিয়ে বারে ‘অগ্রহণযোগ্য’ আচরণ, আমিরাতের ক্ষোভে রাষ্ট্রদূতকে ফেরত নিচ্ছে ইসরায়েল
  • অফিসে প্রেম করার আগে জেনে রাখুন
  • টিনএজ সিনড্রোম: ভবিষ্যৎ প্রজন্মের এক নীরব সংকট
  • যে ৬টি সীমারেখা একজন পুরুষকে নারীর কাছে আকর্ষণীয় করে তোলে