জাতীয় দলের পেস বোলিং কোচ আন্দ্রে অ্যাডামসের সঙ্গে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চুক্তি থাকলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শেষে বিদায় বলে দেওয়া হতে পারে। আগামী মে মাসে বাংলাদেশ দলের পাকিস্তান সফরে উমর গুলকে দেখা যেতে পারে নতুন পেস বোলিং কোচ হিসেবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেভাবেই পেস বোলিং কোচ নিয়োগের কাজ চলছে। পাকিস্তান থেকে উমর গুলের ঘনিষ্ঠ একজন ফোনে সমকালকে জানান, ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত নাহিদ রানাদের কোচ হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে গুলকে।
বিসিবির প্রস্তাবে রাজিও হয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের সাবেক এ ফাস্ট বোলার বিসিবির কাছে চুক্তির শর্তাবলি চেয়েছেন বলে জানায় ওই সূত্র। ব্যাটে-বলে মিলে গেলে গুলই হতে পারেন পেস বোলিং কোচ।
অ্যাডামসের পারফরম্যান্সে খুশি নয় বিসিবি। এ কারণে তাঁকে বিদায় দিয়ে দীর্ঘমেয়াদে গুলকে নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা। বিসিবি সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিষয়টি চূড়ান্ত করতে। প্রধান কোচ ফিল সিমন্সেরও মতামত নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রধান কোচের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কথা বলে শিগগিরই বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।
পেস বোলিং কোচ হিসেবে গুলকে প্রধান কোচেরও পছন্দ। খেলা ছাড়ার পর কোচিংকে পেশা বেছে নেন পাকিস্তানি এ ফাস্ট বোলার। ২০২২ সালে আফগানিস্তানের পেস বোলিং কোচ হিসেবে নিয়োগ পান। ২০২৩ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের জন্য পাকিস্তান দলের অন্তর্বর্তী পেস বোলিং কোচ করা হয় তাঁকে। বর্তমানে পাকিস্তান ‘এ’ দলের কোচ হিসেবে কাজ করছেন ৪২ বছর বয়সী গুল।
৪৭টি টেস্ট, ১৩০ ওয়ানডে আর ৬০ টি২০ ম্যাচ খেলা সাবেক এ ফাস্ট বোলারের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চায় বিসিবি। গুলের সঙ্গে জাতীয় দলের সাবেক দুই পেস বোলিং কোচ অটিস গিবসন ও অ্যালান ডোনাল্ডের নামও আলোচনায় ছিল। যদিও অটিস গতকাল সমকালকে নিশ্চিত করেন, বাংলাদেশে ফেরার কোনো পরিকল্পনা তাঁর নেই। ডোনাল্ডও দেশে থাকতে পছন্দ করবেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।