রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় ২৬ কেজি ওজনের একটি কাতলা মাছ বিক্রি হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার টাকায়। আজ মঙ্গলবার দুপুরে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকার ব্যবসায়ী সোহেল মোল্লা কাতলা মাছটি কেনেন। তিনি লাভে অন্যত্র বিক্রি করবেন।

কাতলা মাছটি আজ সকালে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার উজানে আরিচা ঘাটের কাছাকাছি পদ্মা নদীতে পাবনার জেলেদের জালে ধরা পড়ে।

স্থানীয় মৎস্যজীবীদের কয়েকজন বলেন, আজ সকালে পাবনার আমিনপুর থানার ঢালারচর এলাকার জেলে জামাল পরামানিক ও তাঁর লোকজন নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে বের হন। রাজবাড়ীর সীমান্তবর্তী গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার কুশাহাটা ও মানিকগঞ্জের আরিচার কাছাকাছি এলাকায় জাল ফেলেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রায় দুই কিলোমিটার ভাটিতে পৌঁছামাত্র জালে বড় ধরনের ঝাঁকি আঁচ করতে পারেন। জাল টেনে নৌকায় তুলতেই দেখতে পান বিশাল আকারের এক কাতলা।

জামাল পরামানিকসহ তাঁদের লোকজন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাছটি বিক্রির জন্য আনেন দৌলতদিয়া ঘাটে। এ সময় মমিন মণ্ডলের আড়তে নিলামে তোলা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ফেরিঘাট এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী সোহেল মোল্লা মাছটি কেনেন।
দুপুরে ফেরিঘাটে দেখা যায়, ৬ নম্বর ফেরিঘাট এলাকায় চলছে জাটকা সংরক্ষণ নিয়ে সচেতনতামূলক সভা। এর কয়েক গজ দূরেই ৫ নম্বর ঘাটের কাছে সোহেল মোল্লার সুমাইয়া মৎস্য আড়তে বড় কাতলাটি দেখতে মৎস্য ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি স্থানীয় উৎসুক মানুষ ভিড় করছেন।

এ সময় সোহেল মোল্লার ব্যবসায়িক অংশীদার মাসুদ মোল্লা বলেন, ‘২৬ কেজির একটু বেশি ওজনের এত বড় কাতলা এ মৌসুমে কম ধরা পড়েছে। মাছটি মমিন মণ্ডলের আড়তে নিলামে তোলা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে প্রায় ৪০ হাজার টাকায় কেনেন সোহেল মোল্লা। বর্তমানে বিক্রির জন্য আড়তে রেখে পরিচিতদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হচ্ছে। কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা করে লাভ পেলে বিক্রি করা হবে। আশা করা হচ্ছে, কাতলাটি অন্তত ৪২ হাজার টাকায় বিক্রি করা সম্ভব হবে।’

রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো.

নাজমুল হুদা বলেন, নদীতে পানির গভীরতা যেখানে থাকে, সেখানেই এ ধরনের বড় বড় মাছ পাওয়া যায়। পদ্মা নদীর পানি কমে যাওয়ায় কুশাহাটা এলাকা ছোট জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে সেখানে পানির গভীরতা থাকায় মাঝেমধ্যে পাঙাশ, কাতলা ও রুইয়ের মতো বড় মাছ ধরা পড়ছে, যা এ অঞ্চলের জেলে বা ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস য় দ লতদ য় মৎস য

এছাড়াও পড়ুন:

‎নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত

‎পাবনায় নামাজরত অবস্থায় নিজাম প্রামানিক (৬০) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মোস্তফা প্রামানিককে আটক করেছে পুলিশ। তাকে আটক করতে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন সদর থানার তিন উপ-পরিদর্শক (এসআই)।

রবিবার (২ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের পুরাতন ভাদুরডাঙ্গী গ্রামে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। ‎‎পাবনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

মসজিদে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুর, থানায় অভিযোগ

মুন্সীগঞ্জে প্রতিপক্ষের গুলিতে যুবক নিহত

‎নিহত নিজাম প্রামাণিক একই গ্রামের মৃত ইন্তাজ প্রামানিকের ছেলে। তিনি কৃষি কাজ করতেন। অভিযুক্ত মোস্তফা প্রামাণিকও কৃষকের কাজ করতেন। নিহত এবং অভিযুক্ত সম্পর্কে বাবা-ছেলে।

‎পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিহত নিজাম প্রামানিক নতুন বাজারে দুধ বিক্রি করে রবিবার সন্ধ্যার পর বাসায় ফেরেন। খাবার শেষে এশার নামাজ পড়তে দাঁড়ান তিনি। এ সময় ঘরে প্রবেশ করে দরজা আটকিয়ে হাঁসুয়া দিয়ে নিজাম প্রমানিককে কুপিয়ে হত্যা করেন মোস্তফা। পরে তিনি পাশের ঘরে গিয়ে বসে থাকেন। অভিযুক্তকে ঘরের ভেতরে তালাবদ্ধ রেখে পুলিশকে খবর দেন স্বজন ও এলাকাবাসী। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। এরপর অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

আটকের সময় অভিযুক্তের ছুরিকাঘাতে সদর থানার এসআই আবু বকর সিদ্দিক, এসআই জিয়াউর রহমান, এসআই আবু রায়হান আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে এসআই জিয়াউর রহমানকে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

‎নিহতের অপর ছেলে মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা খাবার শেষে রুমে শুয়ে ছিলাম। এমন সময় রুম আটকিয়ে নামাজরত অবস্থায় বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করে মোস্তফা। এর আগেও সে আমাকে মেহগনি ঢাল দিয়ে মারধর করে মারাত্মক আহত করেছিল। আজকে (রবিবার) হত্যা করতে গামছার মধ্যে হাঁসুয়া নিয়ে আমাকে মাঠের মধ্যে গিয়ে খুঁজাখুঁজি করেছে। বাড়ির লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে আমাকে সতর্ক করে।” 

‎তিনি আরো বলেন, “সে মাদকের জন্য প্রায়ই বাবা ও আমাদের থেকে টাকা চাইতো। না দিলেই বাড়িতে ভাঙচুর চালাতো। তার শাস্তি হওয়া উচিত।”

‎পাবনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, “মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। তাকে আটক করতে গিয়ে তিনজন এসআই আহত হয়েছেন।” 
 

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ