অভিবাসী নির্বাসনে যুদ্ধকালীন আইন ব্যবহারের অনুমতি পেলেন ট্রাম্প
Published: 8th, April 2025 GMT
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় বসার পর অভিবাসীদের ওপর খড়্গহস্ত হয়েছেন। তিনি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করছেন। এমনকি এই কঠোরতার শিকার হচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, চাকরিজীবীসহ বহু অভিবাসী। দেশটির সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্পকে যুদ্ধকালীন ক্ষমতার আইন ব্যবহার করে অভিযুক্ত অপরাধ চক্রের সদস্যদের দ্রুত নির্বাসন দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। এই অনুমতি এখনকার জন্য বা সাময়িক সময়ের জন্য দেওয়া হয়েছে। সোমবার এই রায় দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।
ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই অভিবাসীরা অপরাধচক্র ত্রেন দে আরাহুয়ার সদস্য। যুক্তরাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে অনিয়মিত যুদ্ধ ও আগ্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছিল অপরাধচক্রটি। ফলে তাদের এই আইনের আওতায় দেশ থেকে বের করে দেওয়া যেতে পারে।
যদিও ট্রাম্প প্রশাসন এই রায়কে জয় হিসেবে দেখছে, বিচারপতিরা আদেশ দিয়েছেন যে, নির্বাসিতদের তাদের অপসারণ বা নির্বাসন চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ দিতে হবে। ট্রাম্প এই রায়কে ‘আমেরিকায় ন্যায়ের একটি মহান দিন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট আমাদের জাতির আইনশৃঙ্খলা সমুন্নত রেখেছে’, একজন প্রেসিডেন্টকে, যেই হোক না কেন, আমাদের সীমান্ত রক্ষা এবং আমাদের পরিবার ও দেশের সুরক্ষার ক্ষমতা দিয়েছে।
গত ১৫ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের একটি নিম্ন আদালত অস্থায়ীভাবে ভেনেজুয়েলার অভিযুক্ত গ্যাং সদস্যদের এল সালভাদরে নির্বাসন বন্ধ করেছিল। রায়ে বলা হয়েছিল, স্বল্প ব্যবহৃত ১৭৯৮ সালের বহিঃশত্রু আইন (এলিয়েন এনিমিস অ্যাক্ট) ব্যবহার করে নেওয়া পদক্ষেপগুলোর আরও তদন্ত প্রয়োজন।
এ আইনটি সর্বশেষ ব্যবহার করা হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে শত্রু দেশগুলোর নাগরিকদের আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই আটক বা নির্বাসনের ব্যাপক ক্ষমতা দেয়। আইনটি ১৭৯৮ সালে পাস হয়, যখন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করছিল, তারা ফ্রান্সের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে।
ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, সব নির্বাসিতই ত্রেন দে আরাহুয়ার সদস্য। এই শক্তিশালী আন্তর্জাতিক অপরাধী গোষ্ঠীটির অপহরণ, চাঁদাবাজি, সংঘবদ্ধ অপরাধ, মাদক পাচার এবং চুক্তিভিত্তিক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। একে ট্রাম্প সম্প্রতি বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করেছেন।
মার্কিন অভিবাসন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আটকদের ‘সতর্কভাবে যাচাই করা’ হয়েছে এবং গ্যাং সদস্য হিসেবে শনাক্ত হওয়ার পর এল সালভাদরে পাঠানো হয়েছে। তবে অনেক নির্বাসিতের কোনো মার্কিন অপরাধমূলক রেকর্ড নেই বলে আদালতের নথিতে স্বীকার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ সংস্থার এক কর্মকর্তা।
নির্বাসিতদের কয়েকজন আত্মীয় বিবিসিকে জানিয়েছেন, এই মানুষগুলো ভুলভাবে অভিবাসন অভিযানে ধরা পড়েছেন এবং তারা নির্দোষ। অনেক পরিবার বলেছে, শুধু উল্কির কারণে তাদের প্রিয়জনদের গ্যাং সদস্য হিসেবে ভুলভাবে শনাক্ত করা হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থা এবং কিছু আইন বিশেষজ্ঞ এই আইন প্রয়োগকে নজিরবিহীন বলেছে। কারণ এটি আগে শুধু তখনই ব্যবহৃত হয়েছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল, যা মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী কেবল কংগ্রেসই করতে পারে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর ছ ন অপর ধ সদস য ক ষমত র আইন
এছাড়াও পড়ুন:
তারকাখচিত প্রিমিয়ারে শাহরুখ পুত্রের বিদেশি প্রেমিকা
বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের বড় ছেলে আরিয়ান খান ‘দ্য বা***ডস অব বলিউড’ নামে ওয়েব সিরিজ নির্মাণ করেছেন। গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রকাশিত হয় সিরিজটির টিজার। তাতে নায়কোচিত লুকে দেখা যায় ‘বাদশা’ পুত্রকে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে সিরিজটি।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে মুম্বাইয়ের নিতা মুকেশ আম্বানি কালচারাল সেন্টারে তারকাখচিত প্রিমিয়ার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রণবীর কাপুর-আলিয়া ভাট, তামান্না ভাটিয়া, ভিকি কৌশল, কাজল-অজয় দেবগন, মাধুরী দীক্ষিত-শ্রীরাম নেনেসহ অনেকে।
বলিউডে তারকাদের পাশাপাশি এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন আরিয়ানের কথিত বিদেশি প্রেমিকা লারিসা বোনেসি। যদিও আরিয়ান-লারিসা একসঙ্গে পোজ দেননি। তারা আলাদা আলাদাভাবে অনুষ্ঠানে প্রবেশ করেন। আরিয়ান খান পুরোপুরি কালো রঙের পোশাকে সেজেছিলেন, লারিসা বোনেসি একটি অফ-শোল্ডার কালো গাউন পরে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং পাপারাজ্জিদের সামনে পোজ দেন। তারপর থেকে আরিয়ান-লারিসার প্রেম নিয়ে চর্চা নতুন করে শুরু হয়েছে।
এর আগে ‘দ্য বা***ডস অব বলিউড’ সিরিজের টিজার দেখে কথিত বিদেশি প্রেমিকা লারিসা বোনেসি মুগ্ধতা প্রকাশ করেছিলেন। ইনস্টাগ্রামে আরিয়ানের প্রশংসা করে লারিসা লেখেছিলেন, “অপ্রতিরোধ্য, অতুলনীয় এবং সত্যিই বিশ্বসেরা। গর্বিত বলাটাও যেন খুবই সাধারণ শব্দ।” এরপর থেকে আরিয়ান-লারিসার প্রেম জোর চর্চায় পরিণত হয়।
শাহরুখ খানের বড় পুত্র আরিয়ান খান বলিউডে পা রাখার আগেই একাধিক তারকা অভিনেত্রীর সঙ্গে নাম জড়িয়েছে। ২৬ বছরের আরিয়ানের সঙ্গে কখনো নাম জড়িয়েছে নোরা ফতেহির, কখনো বা তারকা-কন্যা অনন্যা পাণ্ডের। গত বছরের এপ্রিলে জানা যায়, ৭ বছরের বড় ব্রাজিলের মডেল-অভিনেত্রী লারিসের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন আরিয়ান।
১৯৯০ সালের মার্চে ব্রাজিলে জন্মগ্রহণ করেন লারিসা বোনেসি। ব্রাজিলের নাগরিক হলেও ভারতে বহু বছর ধরে কাজ করছেন তিনি। মডেলিং জগতে তার ভালোই পরিচিতি রয়েছে। একাধিক খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েছেন তিনি। চর্চিত প্রেমিকা লারিসার সঙ্গে নতুন বছরকে (২০২৫) স্বাগত জানাতেও দেখা যায় আরিয়ানকে।
লারিসার সঙ্গে আরিয়ানের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে জোর চর্চা হলেও এ নিয়ে মুখ খোলেননি তাদের কেউ-ই। তবে দুইয়ে দুইয়ে চার মেলাতে ভুল করেননি নেটিজেনরা। সর্বশেষ প্রিমিয়ার অনুষ্ঠানে লারিসার উপস্থিতি তাদের প্রেমের গুঞ্জন উসকে দিয়েছে।
মডেলিংয়ের পাশাপাশি অভিনয় করছেন লারিসা। বলিউড অভিনেতা টাইগার শ্রফ, স্টেবিন বেন এবং সুরজ পাঞ্চোলির মতো তারকাদের সঙ্গে মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করেছেন লারিসা।
কেবল মিউজিক ভিডিও নয়, চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন লারিসা। ২০১১ সালে বলিপাড়ার ডেভিড ধাওয়ানের পুত্র রোহিত ধাওয়ানের পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘দেশি বয়েজ’। অক্ষয় কুমার, জন আব্রাহাম অভিনীত এই সিনেমার একটি গানে দেখা যায় লারিসাকে। মূলত, ‘দেশি বয়েজ’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক ঘটে তার। ২০১৩ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘গো গোয়া গন’। সাইফ আলী খান অভিনীত এই সিনেমায় পার্শ্ব-চরিত্রে অভিনয় করেন লারিসা।
হিন্দি সিনেমার পাশাপাশি দক্ষিণী সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন লারিসা। ২০১৬ সালে ‘থিকা’ শিরোনামের অ্যাকশন-কমেডি ঘরানার তেলুগু সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। সুনীল রেড্ডি পরিচালিত ‘থিকা’ সিনেমায় দক্ষিণী অভিনেতা সাই ধরম তেজের সঙ্গে জুটি বেঁধে পর্দায় হাজির হন লারিসা। এই সিনেমার মাধ্যমে প্রথম বড় পর্দায় মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি।
২০১৮ সালে মুক্তি পায় তেলেগু ভাষার ‘নেক্সট এন্টি’ সিনেমা। রোমান্টিক ঘরানার এ সিনেমার প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেন তামান্না ভাটিয়া, সন্দীপ কিষাণ। এ সিনেমায়ও দেখা যায় লারিসাকে।
‘দ্য বা***ডস অব বলিউড’ সিরিজের গল্প রচনা করেছেন আরিয়ান খান, বিলাল সিদ্দিকি ও মানব চৌহান। আরিয়ানের ওয়েব সিরিজটি প্রযোজনা করছে শাহরুখ খানের রেড চিলিস এন্টারটেইনমেন্ট। অর্থাৎ অভিনয়ের পাশাপাশি সিরিজটিতে প্রযোজক হিসেবেও যুক্ত রয়েছেন শাহরুখ।
তাছাড়াও একঝাঁক তারকা সিরিজটিতে অভিনয় করেছেন। যেমন: ববি দেওল, সাহের বম্বা, মনোজ পাওয়া, মোনা সিং, মণীশ চৌধুরী, রাঘব জুয়াল, অন্যা সিং, বিজয়ন্ত কোহলি, গৌতমি কাপুর।