ফেইসবুকে জিততে পারলে মাঠেও জিতবেন: এম নাসের
Published: 9th, April 2025 GMT
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান বলেছেন, “এখন ফেইসবুকের যুগ। এটাতে যদি আপনি জিততে পারেন তাইলে মাঠে জিতবেন। এজন্য দলের সব স্তরের নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা যারা জাতীয়তাবাদী দল করি, তারা এখনো ফেসবুকে প্রচারণায় পিছিয়ে আছি। একটা ধর্মীয় দল আছে, তারা আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে গেছে। বাচ্চা ছেলেদের দলবলও এগিয়ে আছে।”
বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কামালপুর বাজারে কামালপুর ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে ২ পক্ষের সংঘর্ষে নিহতের জেরে ১৫ বাড়িতে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
লক্ষ্মীপুরে স্বেচ্ছাসেবক দল ও কৃষক দলের সংঘর্ষে নিহত ১
নাসের রহমান বলেন, “আজকের এই ইউনিয়ন সম্মেলন জাতীয় নির্বাচনের আগেই একটি ট্রায়াল। ম্যাট্রিক পরীক্ষার আগে টেস্ট পরীক্ষা দিতে হয়, এটা সেই টেস্ট পরীক্ষা। কারণ ২০০১ সালের পরে দেশে ২৪ বছর কোনো সুষ্ঠু ভোটাভুটি হয়নি। ২০০৮ সালে ঠিকই ভোট দিয়েছিলেন, কিন্তু আপনার ভোটকে নৌকার ভোটে কাউন্ট করা হয়েছে। ধান দেওয়া ব্যালটের ভোটকে নৌকার ভোট দেখিয়ে তখন মহসীন আলীর মতো ব্যক্তি এম সাইফুর রহমানকে হারিয়েছিলেন। কোনো পাগলও বিশ্বাস করবে না যে সাইফুর রহমান তার মতো ব্যক্তির কাছে হেরেছেন।”
তিনি আরো বলেন, “২০২৪ এ তো হয়েছে ডামি নির্বাচন। এখন আমরা আগামী ডিসেম্বর মাসে নির্বাচনের জন্য দৌঁড়ঝাপ দিচ্ছি। ইনশাআল্লাহ, ডিসেম্বর মাসেই নির্বাচন হবে। তার আগে আমরা আমাদের দলের মধ্যে নির্বাচন শুরু করেছি। আমাদের দল যে গণতান্ত্রিক দল এটা বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হবে।”
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন। অন্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন- জেলা বিএনপির সদস্য আলহাজ আব্দুল মুকিত, মো.
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে উৎসবমুখর পরিবেশে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে পছন্দের নেতা নির্বাচিত করেন কাউন্সিরররা। কামালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পদে শেখ কামাল আহমেদ ২৬২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক পদে ফখরুল ইসলাম ৩০৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।
ঢাকা/আজিজ/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ র র রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
মাঝরাতে সরকারি কর্মকাণ্ড কতটা স্বাভাবিক
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের রাতের কর্মকাণ্ড নিয়ে বোধকরি একটা মহাকাব্য লিখে ফেলা সম্ভব। তাঁরা যেভাবে গভীর কিংবা শেষ রাতে নানা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, ফেসবুকে বার্তা দিচ্ছেন; তাতে তো মনে হচ্ছে সরকারের কর্তা-ব্যক্তিরা দিনে কাজ না করে রাতেই মনে হয় বেশি কাজ করেন! কয়েকটা উদাহরণ বরং দেওয়া যাক।
মাস কয়েক আগে যখন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্বাভাবিক ভাবে খারাপ হয়ে গেল, আমাদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী রাত তিনটার সময় সংবাদ সম্মেলন ডাকলেন! বাংলাদেশের ইতিহাসে রাত তিনটার সময় আর কোনো মন্ত্রী এ ধরনের সম্মেলনের আয়োজন করেছেন কি না, আমার অন্তত জানা নেই। আমরা সবাই ভাবলাম, তিনি হয়তো বড় কোনো ঘোষণা দেবেন। এরপর কী দেখলাম?
তিনি খুব সাধারণভাবে বললেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য সরকার নিজেদের উদ্যোগকে কঠিন ও শক্তিশালী করার চেষ্টা করবে।
সপ্তাহখানেক আগে হঠাৎ আকাশ থেকে একটি যুদ্ধবিমান ঢাকা শহরের উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল বিল্ডিংয়ে ভেঙে পড়ল। আগুনে দগ্ধ শিশুরা ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে নিজেরা উঠে এসে হাঁটছে; এমন দৃশ্যও আমাদের দেখতে হয়েছে। যে দৃশ্য দেখলে যে কেউ হয়তো ট্রমায় চলে যাবে। ওই স্কুলের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা হয়তো সরাসরি সেই দৃশ্য দেখেছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই চলতে থাকে—এইচএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া সময়ের দাবি ছিল। এ সিদ্ধান্ত সরকার দিনের বেলাতেই নিতে পারত। অথচ আমরা কী দেখলাম?
সরকারের পক্ষ থেকে রাত তিনটার দিকে ফেসবুকে এসে ঘোষণা করা হলো, পরের দিনের এইচএসসি পরীক্ষা পেছানো হয়েছে।
যখনই আপনি সরকারের অস্বাভাবিক আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করবেন কিংবা আপনার মনে এই প্রশ্ন জাগবে; তখনই কিন্তু রাষ্ট্র ভালো আছে কি না; সেই প্রশ্নও সামনে আসবে।দিন দু-এক আগে এ সরকারকেই যাঁরা চাকরি দিয়েছেন, এ কথা বলছি কারণ, সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিজেই বলেছিলেন, ‘ছাত্ররা আমার নিয়োগকর্তা’—সেই ছাত্রদের সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা গভীর রাতে ফেসবুক এসে লাইভ করেন প্রায় আড়াই ঘণ্টা।
এই আড়াই ঘণ্টার লাইভে মূল যে বক্তব্য তিনি তুলে ধরেছেন, সারমর্ম করলে দাঁড়ায়: বৈষম্যবিরোধী প্ল্যাটফর্ম মানি মেকিং মেশিনে পরিণত হয়েছে এবং অনেকেই এর সঙ্গে জড়িত। তিনি এটাও বলেছেন, এই সংগঠনের সব সিদ্ধান্ত হেয়ার রোড থেকে আসে। অর্থাৎ উপদেষ্টারা যেখানে থাকেন।
এদিকে সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম একটা ফেসবুক পোস্ট করেছেন। যদিও ফেসবুক স্ট্যাটাসটি তিনি বেশ কয়েকবার এডিট করেছেন। তবে প্রথমে যা লিখেছেন, সেটা হচ্ছে, নতুন একটি দলের মহারথীদের কয়েকজন দুর্নীতিতে জড়িত। এ ছাড়া তিনি এটাও বলেছেন, একটা সার্কেলের সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত!
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে তাঁদের কেন প্রশ্রয় দেওয়া হলো? আপনারা যদি জানেনই কিছু মানুষ দুর্নীতিগ্রস্ত। তাহলে সরকারের অংশ হিসেবে আপনাদের তো দায়িত্ব তাঁদের আইনের আওতায় আনা। সেটা না করে ফেসবুকে পোস্ট করতে হচ্ছে কেন? তা–ও আবার রাত তিনটায়!
এই সরকার কি মাঝরাতের ফেসবুকীয় সরকারে পরিণত হয়েছে? পরীক্ষা পেছানোর মতো সিদ্ধান্ত যখন মাঝরাতে নিতে হয়, সংবাদ সম্মেলন যখন রাত তিনটায় করতে হয়, তখন তো প্রশ্ন জাগতেই পারে। কারণ এটা তো স্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়।
যখনই আপনি সরকারের অস্বাভাবিক আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করবেন কিংবা আপনার মনে এই প্রশ্ন জাগবে; তখনই কিন্তু রাষ্ট্র ভালো আছে কি না; সেই প্রশ্নও সামনে আসবে।
রাষ্ট্র যদি ভালো না থাকে তবে তার মাত্রা কতটুকু, সেটা নির্ণয় এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।
আমিনুল ইসলাম প্রভাষক, এস্তোনিয়ান এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ইউনিভার্সিটি
[email protected]