ইংরেজিতে কথা বলেন ট্রাক্টরচালক, ভিডিও ভাইরাল
Published: 9th, April 2025 GMT
পেশায় ট্রাক্টরচালক কিন্তু কথা বলেন ইংরেজিতে। অনলাইনে ৭০ জন আর বাড়িতে ৭-৮ জনকে করান ইংরেজিতে পাঠদান। তার ইংরেজিতে তৈরি ব্লগ এখন ব্যাপক ভাইরাল। সবাই তাকে চেনেন ইংলিশম্যান নামে। বলছি দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার হৃদয় চন্দ্র রায়ের কথা। তিনি উপজেলার মুর্শিদহাট ইউনিয়নের হরিশচন্দ্রপুর সাধুপাড়া এলাকার সুধীর চন্দ্র রায়ের ছেলে তিনি।
বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, বাড়ির পাশের একটি রাস্তায় ট্রাক্টরের চালকের সিটে বসে ব্লগ তৈরি করছেন। কথা বলছেন ইংরেজিতে। তার ব্লগের বেশিরভাগই শিক্ষামূলক। একটি ইংরেজি বাক্যে কোথায় সাহায্যকারী ভার্ব বসবে, উচ্চারণ কেমন হবে এসব নিয়েই তার ব্লগ।
তার সাথে কথা বলে জানা যায়, হৃদয় ২০১৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেন। ২০২০ সালে এইচএসসি পাস করেন। এরপর করোনার সময়ে অর্থাভাবে তার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। অভাব-অনটনে আর ভর্তি হতে পারেন নি অনার্সে। এরই মধ্যে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে বড় ভাই নয়ন চন্দ্র রায়ের সঙ্গে হাল ধরেন সংসারের। হয়ে যান ট্রাক্টর চালক। তবে পড়ালেখা বন্ধ হলেও বই-পুস্তক নিয়ে থাকেন অবসর সময়ে। বিশেষ করে ইংরেজির ওপর তার বেশ আগ্রহ। একা একাই কথা বলেন ইংরেজিতে। ইউটিউব দেখে দেখে শিখে নেন ইংরেজিতে দক্ষ হওয়ার কৌশল। হৃদয় চন্দ্র রায়ের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পেজ রয়েছে। যেটির নাম হৃদয় চন্দ্র। সেখানেই তিনি ইংরেজিতে কথা বলে বেশ ভাইরাল।
হৃদয়ের বন্ধু জানান, হৃদয় ট্রাকে কাজ করে এবং ইংরেজি সম্পর্কে শেখানোর চেষ্টা করে। আমি দেখেছি যে সে গবীর হলেও পড়ালেখায় বেশ আগ্রহী। ছোট থেকেই ইংরেজিতে দক্ষ। তার এলাকার ছেলে-মেয়েদেরকে ইংরেজি শেখায়।
স্থানীয় মাগফুর রহমান বলেন, তার ব্যবহার খুবই ভালো। সে ইংরেজিতে কথা বলে, আমাদেরকে বেশ ভালই লাগে। সে এখন ফেসবুকে ভাইরাল। তাকে নিয়ে আমাদের গর্ব হয়। আমরা না পারলেও আমাদের এলাকার ছেলে আমাদের নাম উজ্জ্বল করেছে, এলাকার পরিচিতি বাড়িয়েছে।
হৃদয়ের বড় ভাই নয়ন চন্দ্র রায় বলেন, আমি ইংলিশম্যান হৃদয়ের বড়ভাই। যে একটি পজিশনে গেছে তাতে আমাকে খুব ভালো লাগে। তার অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে এখন বেশ পরিচিত। তার একটি কর্মের ফল, তার এই সাফল্যে আমরা আনন্দিত। তার এলাকায় জনপ্রিয়তা রয়েছে। মানুষ তাকে খুব ভালোবাসে। আমাদের আর্থিক অনটনের কারণে তার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। আমরা দুইভাই এখন কাজ করি। সরকারের কাছে আবেদন, যদি হৃদয়ের পড়ালেখার ব্যবস্থা করে দিতে পারে তাহলে সে দেশের জন্য ভালো কিছু করতে পারবে।
বাবা সুধীর চন্দ্র রায় বলেন, আমার ছেলেকে কষ্ট করে মানুষ করেছি। আমার আশা-আকাঙ্খা ছিল ছেলেকে পড়ালেখা করাবো। কিন্তু এইচএসসি পাশ করার পর আর সংসার চালাতে পারছিলাম না। আমার আয়-উপার্জন বন্ধ হয়ে যায়। পরে তাকে ট্রাক্টর চালনা শিখিয়ে দেই। এখন সে তার বড় ভাইয়ের সাথে কাজ-কর্ম করে সংসার চালাচ্ছে। তার ইংরেজিতে কথা বলার কারণে এলাকার সবাই চিনে। এখন আমাকে অনেকেই হৃদয়ের বাবা হিসেবে চেনে। এটা আমাকে খুব ভালো লাগে, আমি গর্বিত হই।
সাবেক ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন নান্নু বলেন, হৃদয় আমাদের ভাতিজা ও প্রতিবেশি। হৃদয়ের ব্যাপারে অনেক শুনেছি। তার যে চর্চা তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। আমাদের গ্রামের উজ্জ্বল আলো হৃদয়।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
এইচএসসি পরীক্ষা: ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্রে ভালো করতে হলে
এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাস অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় পত্র বিষয়টি সম্পূর্ণ তাত্ত্বিক হওয়ায় ভালো ফল অর্জন করতে অবশ্যই অধ্যায়ভিত্তিক মৌলিক বিষয়গুলো ভালোভাবে অধ্যয়ন করতে হবে। এ বিষয়ে ভালো ফল অর্জনের কৌশলগত বিষয়টি তোমরা নিশ্চয় জানো। এরপরও বলে রাখছি, যে করেই হোক পুরো নম্বরের উত্তর দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সময় ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেহেতু সৃজনশীল অংশের জন্য সময় বরাদ্দ ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট অর্থাৎ ১৫০ মিনিট তাই জ্ঞানমূলক অংশের জন্য ২ মিনিট, অনুধাবনমূলক অংশের জন্য ৩ মিনিট, প্রয়োগমূলক অংশের জন্য ৭ মিনিট, উচ্চতর দক্ষতা অংশের জন্য ৮ মিনিট। একটি প্রশ্ন তোমাকে সর্বোচ্চ ২০ মিনিট সময় নিয়ে লিখতে হবে।
বহুনির্বাচনি অংশ—
১. বহুনির্বাচনি অংশে ভালো নম্বর পাওয়ার জন্য বিভিন্ন বছরের বোর্ড পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সমাধান করবে,
২. ভালো কলেজগুলোর নির্বাচনি প্রশ্নপত্র বহুনির্বাচনি অংশটা মনোযোগসহকারে সমাধান করা,
৩. বহুনির্বাচনি অংশের উত্তর সঠিকভাবে বৃত্ত ভরাট করবে।
সৃজনশীল অংশ—
এইচএসসি পরীক্ষায় প্রথমে জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর আগে দেওয়াটা ভালো। পরে সময় নিয়ে উদ্দীপক নির্ভর প্রশ্ন যেমন প্রয়োগ মূলক ও উচ্চতর দক্ষতার প্রশ্নের উত্তর করাটা দেওয়াটা ভালো। এ প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই বুঝে লিখবে। অপ্রাসঙ্গিক কোনো ধরনের কিছু লিখবে না। নিচে দেখে নাও কোন কোন অধ্যায়ের প্রশ্নের ওপর গুরুত্ব দেবে।
আরও পড়ুনঅষ্টম শ্রেণিতে আবারও বৃত্তি পরীক্ষা ফিরছে, আছে প্রশ্নও২৮ জুলাই ২০২৫অধ্যায়-১ (ব্যবস্থাপনার ধারণা):
ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি, ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন স্তর এই দুটি বিষয় দিয়ে সৃজনশীল প্রশ্ন থাকতে পারে। তা ছাড়া ব্যবস্থাপনার উত্পত্তি ও ক্রমবিকাশ বহুনির্বাচনি অংশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অধ্যায়-২ (ব্যবস্থাপনা নীতি):
হেনরি ফেয়লের ১৪টি ব্যবস্থাপনার নীতিসমূহ সৃজনশীল প্রশ্নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া আদর্শ ব্যবস্থাপকের দক্ষতা, ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসন দিয়েও সৃজনশীল প্রশ্ন আসতে পারে।
অধ্যায়-৩ (পরিকল্পনা প্রণয়ন):
পরিকল্পনার প্রকারভেদ, উত্তম পরিকল্পনার বৈশিষ্ট্য, পরিকল্পনা প্রণয়নের ধাপ।
অধ্যায়-৪ (সংগঠিতকরণ):
সংগঠন কাঠামোর প্রকারভেদ ও সংগঠনের নীতিমালা সৃজনশীল প্রশ্নের জন্য গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে।
অধ্যায়-৫ (কর্মী সংস্থান):
কর্মী সংগ্রহের উত্স, প্রশিক্ষণ পদ্ধতি সৃজনশীল প্রশ্নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
অধ্যায়-৬ (নেতৃত্ব):
নেতৃত্বের প্রকারভেদ দিয়ে সব সময় সৃজনশীল প্রশ্ন থাকে। এটি ভালোভাবে আত্মস্থ করতে হবে। আদর্শ নেতার গুণাবলি ও পরামর্শমূলক নির্দেশনা।
আরও পড়ুনপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব প্রধান শিক্ষকের বেতন গ্রেড এক ধাপ বাড়ছে১৪ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনজাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে তিনটি ডিপ্লোমা কোর্স, সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে২৩ জুলাই ২০২৫অধ্যায়-১০ (নিয়ন্ত্রণ):
নিয়ন্ত্রণের বৈশিষ্ট্য, নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ ও নীতিমালা সৃজনশীলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সৃজনশীল অংশে ভালো নম্বর পাওয়ার জন্য ক ও খ অংশের উত্তর যথাযথভাবে লেখা। অর্থাৎ সময়ক্ষেপণ না করে অতিরিক্ত কোনো কিছু না লেখা। উদ্দীপকনির্ভর প্রশ্ন ‘গ’ অংশে প্রথমে উত্তরের মূল অংশ প্রথম প্যারায় লিখতে হবে। এরপর দ্বিতীয় প্যারায় জ্ঞান অংশের ব্যাখ্যা করা এবং তৃতীয় প্যারায় উদ্দীপককে সামনে রেখে বা হাইলাইট করে উত্তর লেখা। একইভাবে ‘ঘ’ অংশের জন্য প্রথমে মূল উত্তর নির্ধারণ করতে হবে, এরপর মূল উত্তরের ব্যাখ্যা, প্রয়োগ, মূল উত্তরের পক্ষে বা বিপক্ষে যুক্তি, বিশ্লেষণ, সংশ্লেষণ মতামত তুলে ধরে উপস্থাপন করতে হবে।
লেখক: মোহাম্মদ মাজেদুল হক খান, সহযোগী অধ্যাপক, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা
আরও পড়ুনজার্মানির ডাড স্কলারশিপে স্নাতকোত্তর, মাসে ৯৯২ ইউরোর সঙ্গে বিমান টিকিট-বাড়িভাড়াসহ নানা সুবিধা২৮ জুলাই ২০২৫