যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চীনের প্রতিশোধমূলক শুল্ক কার্যকর হয়েছে। এশিয়ার বৃহৎ অর্থনীতির দেশটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৮৪ শতাংশ করেছে, যা আগে ছিল ৩৪ শতাংশ।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর নতুন শুল্কনীতিতে চীনের ওপর কয়েক ধাপে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এর জবাবেই ৮৪ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করেছে দেশটি। তবে তাত্ত্বিকভাবে এ শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় চীনের ওপরই বেশি প্রভাব ফেলবে।

গত বছর চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪৪ হাজার কোটি ডলার মূল্যের পণ্য বিক্রি করেছে। একই সময় মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো চীনের কাছে যে পরিমাণ পণ্য বিক্রি করেছে, এটি (চীনের বিক্রি) তার প্রায় তিন গুণ। এই হিসাব ইঙ্গিত দেয় যে উচ্চ শুল্ক চীনা ব্যবসা-বাণিজ্যকে আরও বড় ক্ষতির মুখে ফেলবে।

গত বছর চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪৪ হাজার কোটি ডলার মূল্যের পণ্য বিক্রি করেছে। একই সময় মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো চীনের কাছে যে পরিমাণ পণ্য বিক্রি করেছে, এটি (চীনের বিক্রি) তার প্রায় তিন গুণ। এই হিসাব ইঙ্গিত দেয় যে উচ্চ শুল্ক চীনা ব্যবসা-বাণিজ্যকে আরও বড় ক্ষতির মুখে ফেলবে।

গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনে আমদানি করা সয়াবিন, ফল, দুগ্ধজাত পণ্য, শূকর ও গরুর মাংসের ওপর ১০ শতাংশ এবং মুরগি, গম, ভুট্টা ও তুলার ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক বাড়ানো হয়েছিল। এর সঙ্গে নতুন করে বাড়ানো শুল্ক যুক্ত হবে। এসব শুল্কের কারণে মার্কিন কৃষকেরা শিগগিরই চীনে তাঁদের পণ্যের চাহিদা লক্ষণীয় হারে কমে যাওয়ার ধাক্কা অনুভব করবেন।সারাহ ট্যান, গবেষণাপ্রতিষ্ঠান মুডি’স অ্যানালিটিকসের কর্মকর্তা

তবে বিশ্লেষকদের মতে, বাস্তবতা এর চেয়ে অনেক বেশি জটিল।

গবেষণাপ্রতিষ্ঠান মুডি’স অ্যানালিটিকসের সারাহ ট্যান বলেন, ৮৪ শতাংশ চীনা শুল্ক মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। যুক্তরাষ্ট্র চীনকে তার বৃহত্তম রপ্তানির বাজার হিসেবে বিবেচনা করে। তিনি বলেন, চীনের পাল্টা পদক্ষেপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব খাত বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে, তার মধ্যে অন্যতম কৃষি।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্র আরোপিত শুল্কের শেষ দেখে নেওয়ার অঙ্গীকার চীনের০৮ এপ্রিল ২০২৫আরও পড়ুনপাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করলেন ট্রাম্প, এ সময় এই শুল্ক থাকছে ১০ শতাংশ১২ ঘণ্টা আগে

সারাহ ট্যান জানান, গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনে আমদানি করা সয়াবিন, ফল, দুগ্ধজাত পণ্য, শূকর ও গরুর মাংসের ওপর ১০ শতাংশ এবং মুরগি, গম, ভুট্টা ও তুলার ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক বাড়ানো হয়েছিল। এর সঙ্গে নতুন করে বাড়ানো শুল্ক যুক্ত হবে। এসব শুল্কের কারণে মার্কিন কৃষকেরা শিগগিরই চীনে তাঁদের পণ্যের চাহিদা লক্ষণীয় হারে কমে যাওয়ার ধাক্কা অনুভব করবেন।

যেকোনো মূল্যবৃদ্ধির ফলে মার্কিন ভোক্তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। শুল্ক আরোপের ফলে চীনা পণ্য আমদানি আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠতে পারে। দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি শুল্কহার এত বেশি যে জরুরি ছাড়া অন্যান্য পণ্যের ওপর এটি একরকম বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞায় রূপ নিয়েছে।

ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের অ্যালেক্স হোমস বলেন, যেকোনো মূল্যবৃদ্ধির ফলে মার্কিন ভোক্তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। শুল্ক আরোপের ফলে চীনা পণ্য আমদানি আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠতে পারে। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি শুল্কহার এত বেশি যে জরুরি ছাড়া অন্যান্য পণ্যের ওপর এটি একরকম বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞায় রূপ নিয়েছে।

আরও পড়ুনট্রাম্পের শুল্কারোপে পণ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কায় ৭৩ শতাংশ মার্কিন নাগরিক০৯ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ওপর আমদ ন আরও ব

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ