খেলতে না চাওয়া পারটেক্সের বিশাল হার, নাসিরের ফিফটিতেও হারল রূপগঞ্জ
Published: 10th, April 2025 GMT
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) শাইনপুকুরের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত ম্যাচ হারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ওদিকে পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব পারিশ্রমিক না পেয়ে ম্যাচ বর্জন ঘোষণা দিয়েছিল। ঘোষণা প্রত্যাহার করলেও গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের কাছে ১৭০ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে দলটি। দিনের অন্য ম্যাচে রূপগঞ্জ টাইগার্সকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে ধানমন্ডি ক্রিকেট ক্লাব। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ও ব্রাদার্স ইউনিয়নের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলেও বৃষ্টি আইনে ১০ রানে জিতেছে রূপগঞ্জ।
বৃহস্পতিবার বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে পারটেক্সের বিপক্ষে শুরুতে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ৩০২ রানের বড় সংগ্রহ তোলে গাজী গ্রুপ। অধিনায়ক এনামুল হক ৯০ বলে নয় চারের শটে ৭৮ রানের ইনিংস খেলেন। সাব্বির শিকদার ৬৫ বলে ৬৪ রান যোগ করেন। শামীম মিয়া ৫৩ বলে চারটি চার ও দুই ছক্কায় খেলেন ৫৩ রানের ইনিংস।
জবাব দিতে নেমে ৩১.
বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে রূপগঞ্জ টাইগার্স শুরুতে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২৮০ রান তোলে। দলটির হয়ে আসাদুল্লাহ আল গালিব ৬৫ রান করেন। দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ডিপিএলে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা নাসির হোসেন ৮৪ বলে ৭৭ রানের ইনিংস খেলেন। আটটি চারের সঙ্গে তিনটি ছক্কা মারেন তিনি। এছাড়া আরিফুল হক ৪৮ রান যোগ করেন।
জবাবে ১৭ বল থাকতে জয় তুলে নেয় ধানমন্ডি। সেঞ্চুরি মিস করেন দলটির অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। ধানমন্ডির ওপেনার আজমির ৩০ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলেন। অন্য ওপেনার হাবিবুর রহমান ২৪ বলে ৩৩ রান যোগ করেন। তিনে নামা ফজলে রাব্বি ৪৭ রান করেন। অধিনায়ক সোহান ৯৫ বলে ৯৭ রানের ইনিংস খেলে আউট হন। তার ব্যাট থেকে নয়টি চার ও দুটি ছক্কা আসে। ৪০ বলে ৫৫ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন ইয়াসির আলী রাব্বি।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ও ব্রাদার্স ইউনিয়নের ম্যাচটি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছিল। লিজেন্ডসরা শুরুতে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ২৭৭ রান তোলে। তিনে ব্যাট করা সৌম্য সরকার ৭৯ বলে ৮০ রান করেন। তিনি আটটি চার ও দুটি ছক্কা মারেন। চারে নামা মাহমুদুল হাসান ৫৯ রান করেন। জাকের আলী খেলেন ৪৪ রানের ইনিংস।
জবাবে ব্রাদার্স ইউনিয়ন ৪৮.৪ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৬০ রান তোলে। শেষ ৮ বলে ১৮ রান দরকার ছিল তাদের। পেসার সুমন খান ২৫ বলে ৩৪ রানের ইনিংস খেলে দলকে জয়ের আশাও দিচ্ছিলেন। কিন্তু রাজধানীতে ঝড় শুরু হলে ম্যাচের শেষ অংশ খেলানো সম্ভব হয়নি। বৃষ্টি আইনে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। ব্রাদার্সের হয়ে ওপেনার মাহফিজুর ইসলাম ৭৬ রান করেন। আইস মোল্লা ৪৭ ও মাইসুকুর ৪৬ রান করেন। লিজেন্ডসদের পেসার শরিফুল ইসলাম ১০ ওভারে ৪০ রান দিয়ে ৬ উইকেট নেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড প এল র ন র ইন ব য ট কর র ন কর ন র পগঞ জ উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটে যাক
লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, তার অবসান হবে আশা করা যায়। নির্বাচনের দিনক্ষণের বিষয়ে দুই পক্ষই নীতিগতভাবে একমত হয়েছে যে ২০২৬ সালের রোজার আগে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব।
সাম্প্রতিক কালে নানা বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপি নেতৃত্বের বিরোধ লক্ষ করা যাচ্ছিল। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে বিএনপি–দলীয় প্রার্থী ইশরাক হোসেনের শপথ ইস্যু সেই বিরোধকে আরও বাড়িয়ে দেয়। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের সর্বশেষ বৈঠকে বিএনপিসহ বেশির ভাগ দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি ও আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করে।
কিন্তু ঈদুল আজহার আগের রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন। প্রধান উপদেষ্টার এই ঘোষণার ব্যাপারে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানায়। এর আগে বিএনপির নেতৃত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ এনে তিনজন উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করে।
এমনই একটি পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফরের সময় লন্ডনে তাঁর সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি বৈঠক অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বৈঠকের ঘোষিত যৌথ বিবৃতিতে নির্বাচনের দিনক্ষণের বিষয়টি সামনে এলেও দুই পক্ষের আলোচনা কেবল এর মধ্যে সীমিত ছিল না। প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী একটি সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠান ও সংস্কারের ধারাবাহিকতার ওপরও জোর দেন তঁারা।
বৈঠকের ফলাফলকে প্রায় সব দলই স্বাগত জানিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি ঘোষণার ধরন নিয়ে আপত্তি জানালেও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সরাসরি বিরোধিতা কেউ করেনি। আমরাও মনে করি, কোনো বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভেদ দেখা দিলে আলোচনার মাধ্যমেই তা সমাধান করতে হবে।
জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ যারা সংস্কার ও বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে, সেটাও গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিতে হবে। লন্ডন বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা সংস্কার ও বিচারকাজ দৃশ্যমান করার ওপর জোর দিয়েছেন। ভবিষ্যতে যাতে দেশে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার পুনরাগমন না ঘটে, সে জন্য রাষ্ট্র সংস্কারের কাজটি ত্বরান্বিত করা জরুরি। আবার অপরাধ করে যাতে কেউ পার না পায়, সে জন্য জুলাই-আগস্টের হত্যার বিচারও অপরিহার্য। কিন্তু এই দুটি বিষয়কে কোনোভাবে নির্বাচনের প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখা সমীচীন হবে না।
যেসব সংস্কার কমিশনের সুপারিশের সঙ্গে নির্বাচন ও সংবিধানের বিষয়টি জড়িত নয়, সেগুলো সরকার নির্বাহী আদেশেও বাস্তবায়ন করা যায়। এসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে তেমন বাধা আসার কথা নয়। তবে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে মনে রাখতে হবে, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার অর্থ এই নয় যে সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। এখন নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করাই বড় চ্যালেঞ্জ। রাজনৈতিক দলগুলোর সার্বিক সহযোগিতা না থাকলে সরকার একা কাজটি করতে পারবে না।
ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর অন্তর্দলীয় ও আন্তদলীয় সংঘাতের যেসব খবর পাওয়া যাচ্ছে, তা উদ্বেগজনক। রাজনৈতিক দলগুলো গণতান্ত্রিক রীতিনীতি মেনে না চললে কোনো সংস্কারই কাজে আসবে না। আমরা আশা করি, দিন-তারিখের বিষয়ে সমঝোতার পর নির্বাচনের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবাই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন। রাজনীতিতে মত ও পথের পার্থক্য থাকবে; তাই বলে একে অপরকে ‘শত্রুজ্ঞান’ করার পুরোনো সংস্কৃতি থেকে তাদের বেরিয়ে আসতে হবে।