মাইকিং করে দুই গ্রামের মানুষের সংঘর্ষ
Published: 10th, April 2025 GMT
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের চিলমারী ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সীমান্তে চিলমারী-হরিপুর তিস্তা সেতুতে ঘুরতে যাওয়া মা-মেয়েকে উত্যক্ত করার অভিযোগের জের শেষপর্যন্ত মাইকিং করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১টা থেকে কয়েক দফা চলা এই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০-২৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের একজনকে চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়, সেখান থেকে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন:
রূপগঞ্জে যৌথবাহিনী-শ্রমিক সংঘর্ষ, আহত শতাধিক
ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে ছাত্রদলের ২ পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৪
অবশ্য চিলমারী মডেল থানার ওসি মো.
চিলমারী থানা পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বাধা উপেক্ষা করে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি টিম দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার (৪ এপ্রিল) চিলমারী রমনা ইউনিয়নের দক্ষিণ খরখরিয়া গ্রামের এক ব্যক্তির স্ত্রী ও কন্যা দ্বিতীয় তিস্তা সেতুতে ঘুরতে গেলে গাইবান্ধার সুন্ধরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের শহরের মোড় এলাকার বিজয়, পাভেল, সুমন নামে কিশোর তাদের ছবি তোলে এবং উত্যক্ত করার চেষ্টা করে।
মা ও মেয়ে প্রতিবাদ করলে ওই কিশোররা তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে। বিষয়টি ঘটনাস্থলে উপস্থিত চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের ডাঙ্গার চর এলাকার হামেদ আলীর ছেলে সাজু ও রোস্তাম আলীর ছেলে মোতালেব মিয়ার চোখে পড়লে তারাও প্রতিবাদ করেন। এতে শহরের মোড় এলাকার বিজয়, পাভেল, সুমনসহ কয়েকজন মিলে চিলমারী উপজেলার এই দুই তরুণের ওপর চড়াও হন এবং তাদের মারধর করেন। তারা এলাকায় গিয়ে মারধরের বিষয়টি জানালে লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। পরে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
সাজু ও মোতালেবের পরিবারের অভিযোগ, ওই ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার সকালে রমনা ইউনিয়নের দক্ষিণ খড়খড়িয়া এলাকার লাল মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেন (৩৫) তার ভুট্টা ক্ষেত দেখতে গেলে শহরের মোড় এলাকার ফখরুলের ছেলে মিস্টারসহ কয়েকজন ব্যক্তি মিলে তাকে বেধড়ক মারধর করেন। আলমগীর অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়রা তার পরিবারের সদস্যদের ফোনে মারধরের কথা জানায়। আলমগীরের শরীরে জখম, দাঁত ভাঙ্গা ও পায়ের নিচে টেঁটার আঘাত দেখতে পায় লোকজন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে; সেখান থেকে নেওয়া হয় রংপুর মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে।
আলমগীরের ওপর আঘাত করার পর দুই গ্রামে মাইকিং করে তাদের লোকজনকে ডেকে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে উভয় মানুষ আহত হয়। খবর পেয়ে কুড়িগ্রাম থেকে সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।
ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর টিম হ্যান্ড মাইকে দুই গ্রামের লোকজনকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানায়।
চিলমারী রমনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম আশেক বলেন, “মা-মেয়ের গোপনে ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মানুষের মাঝে উত্তেজনা চলছিল। আমরা কয়েকবার কথা বলে তাদের শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু আজ চিলমারীর একজন কৃষক জমিতে কাজ করতে গেলে সুন্দরগঞ্জ শহরের মোড় এলাকার ফখরুলের ছেলে মিস্টার ও কয়েকজন মিলে তাকে মারধর করে আহত করে। ওই ঘটনায় দুই গ্রামের মানুষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল।”
ওসি মো. আবদুর রহিম বলেন, “ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি টিম গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উভয় গ্রুপের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে চিলমারী উপজেলার লাল মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেনকে রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/সৈকত/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ আহত
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিপণ না পেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশিকে হত্যা
দক্ষিণ আফ্রিকার কুইন্স টাউনে মুক্তিপণ না পেয়ে মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন ইকবাল নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) কুইন্সটাউনের একটি জঙ্গল থেকে আলমগীর হোসেন ইকবালের মরদেহ পাওয়া যায়।
নিহত আলমগীর হোসেন ইকবালের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ সদরের আলীরটেক এলাকায়।
আরো পড়ুন:
বগুড়ায় যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
মামাত বোনকে ধর্ষণ-হত্যা করে নিখোঁজের গল্প সাজায় নয়ন: পুলিশ
স্বজনেরা জানান, গত ২ জুন অপহরণকারীরা নিহতের পরিবারের কাছে প্রথমে ৫ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে এক কোটি টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, আলমগীর হোসেন ইকবাল দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাস করে আসছিল। সেখানে তার নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ইকবালের পরিবারে মা, স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে। তারা বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ শহরে বসবাস করে আসছিলেন।
নিহত আলমগীর হোসেন ইকবালের ভগ্নীপতি শরিফুর রহমান ঢালী বলেন, ‘‘গত ২ জুন রাত ১০টার দিকে নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে গাড়ি থেকে মালামাল আনলোড করার সময় ৪ জন অপহরণকারী ইকবালকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করে নিয়ে যায়। দুদিন পরে ইকবালের স্ত্রীর ফোন নাম্বারে কল করে সাউথ আফ্রিকান ৫০ লাখ (বাংলাদেশি টাকায় ৫ কোটি টাকা) দাবি করে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘একাধিকবার কথা বলার পরিবার এত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে অপহরণকারীরা সর্বশেষ এক কোটি টাকা দাবি করে। কিন্তু, পরিবার এই অর্থ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় অপহরণকারীরা তাকে হত্যা করে। ১২ জুন একটি জঙ্গল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আগামী ১৫ জুন রাতে কাতার এয়ারওয়েজে নিহত আলমগীর হোসেন ইকবালের মরদেহ দেশে আসবে।’’
ঢাকা/অনিক/রাজীব