১০ বছর আগে হামলার একটি ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া এক ফিলিস্তিনি কিশোরকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। গ্রেপ্তার হওয়ার সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৩ বছর। ৯ বছর ৬ মাস বন্দিজীবন কাটিয়ে ফেরা কিশোরটি এখন ২৩ বছরের তরুণ।

মুক্তি পাওয়া এই ফিলিস্তিনির নাম আহমেদ মানাশ্রা। ২০১৫ সালে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতের এক প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন তিনি।

গ্রেপ্তার হওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে মানাশ্রার বিষয়ে নজর রেখেছিল বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। এর মধ্যে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছিল, ‘নির্জন কারাবাসে রাখাসহ এই কিশোরের সঙ্গে মর্মপীড়াদায়ক অসদাচরণ করা হয়েছে। এতে মানসিকভাবে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে সে।’

২০১৫ সালে কিশোর মানাশ্রার হামলা চালানো নিয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, তাঁর সঙ্গে ১৫ বছর বয়সী রক্তসম্পর্কীয় ভাই হাসান। দুজন ইসরায়েলের অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের এক ইহুদি বসতিতে রান্নার কাজে ব্যবহৃত ছুরি নিয়ে ঘোরাফেরা করছেন। এ সময় হাসান ইসরায়েলি একটি কিশোর ও এক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ওপর আক্রমণ করে বসেন। এতে তাঁরা আহত হন। পরে মানাশ্রাকে গ্রেপ্তার ও হাসানকে গুলি করে হত্যা করে ইসরায়েলি পুলিশ।

গ্রেপ্তার হওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে মানাশ্রার বিষয়ে নজর রেখেছিল বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। এর মধ্যে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছিল, ‘নির্জন কারাবাসে রাখাসহ এই কিশোরের সঙ্গে মর্মপীড়াদায়ক অসদাচরণ করা হয়েছে। এতে মানসিকভাবে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে সে।’

আহমেদ মানাশ্রার আইনজীবী খালেদ জাবারকা বিবিসিকে বলেন, কারাভোগ শেষে মানাশ্রা ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

আরও পড়ুনইসরায়েলের কারাগারে ‘অপুষ্টিতে’ ফিলিস্তিনি কিশোরের মৃত্যু০৬ এপ্রিল ২০২৫

ছুরিকাঘাতে দুই ইসরায়েলি আহত হওয়ার ওই ঘটনার পর মানাশ্রা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান এবং একটি গাড়ি তাঁকে চাপা দেয়। ওই সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া একটি গ্রাফিক ভিডিওতে দেখা যায়, ‘কিশোর মানাশ্রা রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে এবং এক ইসরায়েলি পথচারী তাকে ঠাট্টাবিদ্রূপ ও গালিগালাজ করছেন।’

এই ভিডিও ফুটেজ ওই সময় আরব বিশ্বে ক্ষোভের সঞ্চার করেছিল। অনেকেই ধারণা করেছিলেন, মানাশ্রা মারা গেছেন। তবে এ ঘটনার কয়েক দিন পর ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাঁকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার ছবি প্রকাশ করে।

পরবর্তী সময়ে হত্যাচেষ্টায় অভিযুক্ত করে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি কিশোর মানাশ্রাকে সাড়ে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেয়।

কারাভোগ শেষে আহমেদ মানাশ্রা ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে। তাঁর স্বাস্থ্যের কী অবস্থা, এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। এ মূহূর্তে তাঁর সুচিকিৎসা করাই স্বজনদের অগ্রাধিকার।খালেদ জাবারকা, মানাশ্রার আইনজীবী

চিকিৎসকেরা বলেছেন, কারাগারে থাকা অবস্থায় মানাশ্রা মানসিক রোগ সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হন এবং নিজের ও অন্যদের ক্ষতি করার চেষ্টা করেন।

মানাশ্রাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য বারবারই আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে ইসরায়েল তা নাকচ করে দেয়। এখন মানাশ্রা মুক্তি পেলেও তাঁর পরিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

আরও পড়ুন‘গায়ে আগুন দেওয়ার পর তা নেভাতে আমি পশুর মতো এদিক-ওদিক ছুটছিলাম’ ০৮ এপ্রিল ২০২৫

আইনজীবী খালেদ বলেন, আহমেদের স্বাস্থ্যের কী অবস্থা, এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। এ মূহূর্তে তাঁর সুচিকিৎসা করাই স্বজনদের অগ্রাধিকার।

২০১৫ সালে ছুরিকাঘাতে দুই ইসরায়েলি আহত হওয়ার ওই ঘটনার পর মানাশ্রা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান এবং একটি গাড়ি তাঁকে চাপা দেয়। ওই সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া একটি গ্রাফিক ভিডিওতে দেখা যায়, ‘কিশোর মানাশ্রা রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে এবং এক ইসরায়েলি পথচারী তাকে ঠাট্টাবিদ্রূপ ও গালিগালাজ করছেন।’

মানাশ্রার ঘটনায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও ইসরায়েলের বেসরকারি সংগঠন আদালাহ দেশটির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগ এনেছে।

আরও পড়ুনইসরায়েলের কারাগার: কেউ বেরোচ্ছেন নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে, কেউ ধর্ষণের শিকার বা মানসিক রোগী হয়ে০১ জানুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুন৬৭ বছরের জীবনে ৪৫ বছর কারাগারে, মুক্তিকামী নেতা নায়েল বারগুতি অবশেষে মুক্ত২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র হওয় ইসর য় ল র অবস থ হওয় র আহম দ

এছাড়াও পড়ুন:

পটুয়াখালীতে সালিস বৈঠকে অংশ নিলে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিএনপি

পটুয়াখালীতে স্থানীয় পর্যায়ে সালিস বৈঠকে অংশ নিলে দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে ওই বিজ্ঞপ্তির কপি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

সম্প্রতি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বিএনপির কিছু নেতা-কর্মী সালিস বৈঠকে অংশ নিয়ে আর্থিক লেনদেনে জড়িয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা এ বিষয়ে ফেসবুকে নানা মন্তব্য তুলে ধরে ক্ষোভ জানিয়েছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে জেলা বিএনপি এই বিজ্ঞপ্তি দেয়।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান টোটন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সামনে জাতীয় নির্বাচন। সংকটময় মুহূর্ত আসছে, তাই দলীয় নেতা-কর্মীরা যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনায় না জড়ান, তাই তাঁদের সতর্ক করা হয়েছে।’

ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিএনপি জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের সংগ্রামী সংগঠন। এই দলের প্রত্যেক কর্মী জনগণের আস্থার প্রতীক এবং আন্দোলন-সংগ্রামের অগ্রণী সৈনিক। তাই দলের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখা ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে জেলা বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের কোনো নেতা-কর্মী স্থানীয় পর্যায়ে কোনো প্রকার সালিস, দাঙ্গা-ফ্যাসাদ বা পক্ষপাতদুষ্ট এবং মধ্যস্থতাকারী কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে না।

একই সঙ্গে ওই বিজ্ঞপ্তিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কর্মসূচি এবং জনগণের পাশে থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া নেতা-কর্মীদের সদা হাস্যোজ্জ্বল, ভদ্র ও অমায়িক আচরণমুখী হতে বলা হয়েছে। এ নির্দেশনা অমান্য করলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ