পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা বা সমন্বয়কদের পেছনে না দৌড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

তিনি বলেছেন, ফিটনেস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই রিটেন ভাইবার প্রিপারেশন বাদ দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা বা সমন্বয়কদের পিছনে দৌড়ানো বন্ধ করুন। জেলা পুলিশ পঞ্চগড় নিশ্চিত করেছেন, পঞ্চগড়ে শতভাগ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে। কোনো প্রকার সুপারিশকে গ্রহণ করা হবে না।

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এসব কথা লিখেছেন। 

ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, পঞ্চগড়ে পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ হচ্ছে। এখন ফিটনেস পরীক্ষা চলছে। এরপরে ৫০ মার্কের লিখিত পরীক্ষা হবে। সবশেষে ১৫ মার্কের ভাইভা হবে। ফিটনেস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে লিখিত এবং ভাইভার ৬৫ মার্কের ওপর নির্ভর করবে তার চাকরি হবে কিনা। অর্থাৎ এখানে রিটেন পরীক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যে রিটেনে যত ভালো করবে তার চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা ততো বেশি।

সারজিস লিখেছেন, গতবার প্রায় ৫০০+ পরীক্ষার্থী ফিটনেসে উত্তীর্ণ হয়ে রিটেন এবং ভাইভা দিয়েছিল। এর মধ্যে ফাইনালি ২৮ জন নিয়োগ পেয়েছিল। ভাইভাতে মোটামুটি বেসিক জ্ঞান থাকলে ১৫’র মধ্যে ৭-৮ এমনিতেই পায়। সেখানে ভাইভাতে সুপারিশ করে ২-৪ মার্ক বাড়িয়ে কোনো লাভ নেই যদি আপনি রিটেনে ভালো না করতে পারেন। যেহেতু রিটেনে ভাইভার তিনগুণ মার্কস রয়েছে তাই যদি আপনি পুলিশের কনস্টেবল হতে চান তাহলে লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি ভালোভাবে নিন।

তিনি লেখেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথায় আসি। ফিটনেস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই রিটেন ভাইবার প্রিপারেশন বাদ দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা বা সমন্বয়কদের পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করুন। জেলা পুলিশ পঞ্চগড় নিশ্চিত করেছেন, পঞ্চগড়ে শতভাগ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে। কোনো প্রকার সুপারিশকে গ্রহণ করা হবে না। কোটা না মেধা; এই স্লোগান দিয়ে একটা অভ্যুত্থান হয়েছে। দেড় হাজারের অধিক মানুষ জীবন দিয়েছে। অর্ধ-লক্ষের অধিক মানুষ রক্ত দিয়েছে। সেখানে ‘মেধা’র বিপরীতে ‘সুপারিশ’ এই অভ্যুত্থানের শহীদের রক্তের সঙ্গে প্রতারণার নামান্তর।

তিনি আরও লেখেন, দয়া করে নিয়োগের ক্ষেত্রে আমার কাছে কেউ কোনো প্রকার সুপারিশের আশায় আসবেন না এবং আহ্বান থাকবে অন্য কোনো দলের কোনো নেতার কাছেও যাবেন না। বরং আমরা চাইবো বাংলাদেশ পুলিশ শতভাগ স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করবে এবং সব রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ আমরা সেখানে সহযোগিতা করবো, মেধার জয় নিশ্চিত করবো।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনস প জ ত য ন গর ক প র ট

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ