সংশোধিত ওয়াক্ফ আইন বাতিলের দাবিতে পশ্চিমবঙ্গজুড়ে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
Published: 11th, April 2025 GMT
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে আজ শুক্রবারও ওয়াক্ফ (সংধোধনী) আইন বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদ–বিক্ষোভ হয়েছে। জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়েছে। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের পর আজ শুক্রবার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার আমতলায় ওয়াক্ফ (সংশোধনী) আইন বাতিলের দাবিতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেছেন। দাবি তুলেছেন এই আইন অবিলম্বে বাতিল করার।
রাজ্যের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা ছাড়াও মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর, হুগলির চাপদানি, মুর্শিদাবাদের লালগোলাসহ কলকাতার পার্ক সার্কাস, আমতলায় আজ বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। পার্ক সার্কাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেছেন কলকাতার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা।
তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ওয়াক্ফ সম্পত্তি ব্যক্তিগত স্বার্থে জবরদখলে রাখার অভিযোগ উঠেছে। ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা আইবি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর কাছে এক প্রতিবেদনে বলেছে, পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলের কিছু নেতা এই রাজ্যে ওয়াক্ফ সম্পত্তি ব্যক্তিগত স্বার্থে দখল করে রেখেছেন। এই তালিকায় রয়েছেন রাজ্যের পৌরমন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক নাসির উদ্দিন আহমেদ, তৃণমূলের রাজ্য সভার সদস্য নাদিমুল হক ও কলকাতা পৌরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর শাম্মীজাহান বেগম।
এই চার নেতার মধ্যে দুই নেতা ফিরহাদ হাকিম ও নাসির উদ্দিন আহমেদ রাজ্যের ওয়াক্ফ বোর্ডের অন্যতম সদস্য।
অবশ্য এই রাজ্যের ওয়াক্ফ সম্পত্তি নিয়ে সংশোধনী আইন বাতিলের দাবিতে সোচ্চার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
১৯৯৬ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন দক্ষিণ কলকাতার কংগ্রেস দলীয় সংসদ সদস্য, সে সময় তিনি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে একটি চিঠি দিয়ে এই ওয়াক্ফ সম্পত্তি নয়ছয় করার অভিযোগ তুলেছিলেন। তখন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি গীতেশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছিল।
ওই সময় মমতা রাজ্যের ১ হাজার কোটি মূল্যের ১৬০টি ওয়াক্ফ সম্পত্তির তালিকা দিয়েছিলেন। অভিযোগ তুলেছিলেন, ওই সব সম্পত্তি ইজারা দেওয়ার সময় অনিয়ম করা হয়েছিল।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইন ব ত ল র দ ব ত কলক ত র
এছাড়াও পড়ুন:
আলীকদমে নিখোঁজ আরেক পর্যটকের লাশ উদ্ধার
বান্দরবানের আলীকদমে নিখোঁজ হওয়া তিন পর্যটকের মধ্যে আরেকজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা লাশটি স্মৃতি আক্তারের (২৪) বলে তাঁর সঙ্গী পর্যটকেরা শনাক্ত করেছেন।
আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আলীকদম উপজেলা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে তৈনখালের আমতলি ঘাট এলাকায় ভাসমান অবস্থায় লাশটি পাওয়া যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে এ নিয়ে দুজনের লাশ উদ্ধার করা হলো।
আলীকদম ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা আবদুর রহিম জানিয়েছেন, সকালে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে লাশের সংবাদ পাওয়া যায়। আমতলি ঘাট থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বেঁচে ফিরে আসা ১৯ পর্যটককে আলীকদম থানায় রাখা হয়েছে।
পর্যটকদের মধ্যে রাহাত হোসেন নামের একজন জানান, আজকে উদ্ধার হওয়া লাশটি স্মৃতি আক্তারের। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায়। স্মৃতি আক্তার ও মো. হাসান পর্যটন ব্যবস্থাপনা সংস্থা ট্যুর এক্সপার্টের সহপরিচালক। তাঁদের ব্যবস্থাপনায় এই ভ্রমণ আয়োজিত হয়।
৮ জুন দুটি দলে ৩৩ জন পর্যটক আলীকদম ও থানচি উপজেলার মধ্যবর্তী দুর্গম ক্রিস্টং পাহাড়ে গিয়েছিলেন। পাঁচ দিনের ভ্রমণে এক দলে ১১ জন ও তিন দিনের ভ্রমণের আরেক দলে ২২ জন পর্যটক ছিলেন। গত বুধবার তিন দিনের ভ্রমণ শেষে ২২ জনের দলটি ফিরে আসার পথে প্রবল বৃষ্টিতে হঠাৎ শামুকঝিরি ঝরনায় পাহাড়ি ঢল নামে। তাঁদের মধ্যে ১৯ জন ফিরে এলেও জুবাইরুল, হাসান ও স্মৃতি পেছনের দিকে থাকায় নিখোঁজ হন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, নিখোঁজ তিন পর্যটকের মধ্যে আজ স্মৃতি আক্তার ও গতকাল জুবাইরুল ইসলামের লাশ পাওয়া গেছে। লাশ দুটি বান্দরবান সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। মো. হাসানের লাশ এখনো পাওয়া যায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিখোঁজ তিনজনকে শনাক্তের জন্য মানবিক কারণে ১৯ জন পর্যটককে থানায় রাখা হয়েছে। তাঁরা না হলে নিখোঁজ তিনজনকে শনাক্ত করার কেউ থাকবে না।