১৮২১ সালে জেলা ঘোষণা করা হয় বগুড়াকে। ১৮৭৬ সালের ১ জুলাই শহরের ১ দশমিক ২৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত হয় বগুড়া মিউনিসিপ্যালিটি। সর্বশেষ ২০০৬ সালে ৬৯ দশমিক ৫৬ বর্গকিলোমিটারে উন্নীত করা হয় পৌর এলাকার আয়তন। প্রায় দেড়শ বছরে সাড়ে ৫৫ গুণ আয়তন বাড়লেও নাগরিক সুবিধা বাড়েনি তেমন। সিটি করপোরেশন ঘোষণা না হওয়ায় ‘ক’ শ্রেণির এই পৌরসভার বিশাল এলাকা বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। উন্নত সড়ক, স্বাস্থ্যসেবা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত শহরবাসী।
শহরের সূত্রাপুর কৃষিফার্ম এলাকার বাসিন্দা আব্দুল কাদের মুন্সি (৫৫)। একই এলাকায় তাঁর মুদি দোকান রয়েছে। তিনি বলেন, ‘শহরের প্রাণকেন্দ্রে থাকি। তারপরও কাঙ্ক্ষিত সেবা পাই না। প্রধান সড়কে আবাসিক এলাকার মধ্যে করা হয়েছে পৌরসভার ভাগাড়। আমাদের এলাকাসহ আশপাশে প্রয়োজনীয় ডাস্টবিন নেই। পুরো সড়কই মনে হয় ভাগাড়। রাতে এসব এলাকা থাকে অন্ধকারে। বৈদ্যুতিক বাতিও কম।’ পর্যাপ্ত নালা না থাকায় প্রায়ই এ এলাকায় ময়লা পানি সড়কে উঠে আসে বলেও জানান তিনি।
রেলস্টেশনসংলগ্ন হাড্ডিপট্টি এলাকায় রয়েছে মিনি বাসস্ট্যান্ড। এখানকার সড়ক দিয়ে দিনে হাজারো মানুষের যাতায়াত। পেশায় বাসচালক সবুর হোসেনের ভাষ্য, সড়কটি রেলস্টেশনের একেবারে কাছে। তবু এক যুগেও এটির সংস্কার করা হয়নি। পাকা এ সড়ক দেখলে বোঝাই যায় না, কখনও এখানে কার্পেটিং ছিল।
শহরের সাতমাথা, জজকোর্ট, নিউমার্কেট এলাকা, কাঁঠালতলা, রাজাবাজার মোড়, ফতেহআলী মোড়, শেরপুর ও গোহাইল রোডের সংযোগ মুখে জমে আছে আবর্জনা। গন্ধে শহরবাসীর পথচলা কঠিন। সাতমাথার কবি নজরুল ইসলাম সড়কের পাশ দিয়ে যাওয়া নালাটি পরিষ্কার হয় না দীর্ঘদিনেও। সেখানে কাপড়ের ভ্রাম্যমাণ দোকান হানিফ মিয়ার। তাঁর ভাষ্য, প্রায়ই ময়লা উপচে সড়কে চলে আসে। দুর্গন্ধে থাকা যায় না। সাতমাথার আশপাশের এলাকায় যানবাহনের উচ্চশব্দের মধ্যে সারাদিন মাথা ভোঁ ভোঁ করে হানিফের।
যে কারণে গুরুত্ব
দেশের অন্যতম বৃহত্তম জেলা বগুড়া অর্থনৈতিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ। ১৮২১ সালে জেলা ঘোষণার পর শহর উন্নয়ন ও পরিচালনায় ১৮৬৯ সালে গঠিত হয়েছিল বগুড়া টাউন কমিটি। ১৮৭৬ সালের ১ জুলাই জলেশ্বরীতলা, সূত্রাপুর ও আশপাশের এলাকা নিয়ে বগুড়া মিউনিসিপ্যালিটি গঠিত হয়। তখন আয়তন ছিল ১ দশমিক ২৫ বর্গকিলোমিটার। ১৯৮১ সালের ১ আগস্ট আয়তন বাড়িয়ে ১৪ দশমিক ৭৬ বর্গকিলোমিটারে ও ‘ক’ শ্রেণিতে উন্নীত করে ওয়ার্ড সংখ্যা ৯ থেকে বাড়িয়ে ১২টি করা হয়। সর্বশেষ ২০০৬ সালে চারপাশের ৪৮টি মৌজা পৌর এলাকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তখন আয়তন দাঁড়ায় ৬৯ দশমিক ৫৬ বর্গকিলোমিটারে। ওয়ার্ড সংখ্যা দাঁড়ায় ২১টিতে।
সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার পৌরসভার আয়তন বাড়িয়েছিল সিটি করপোরেশনের কথা মাথায় রেখে। তারা ক্ষমতা হারানোর পর এ উদ্যোগ আর আলোর মুখ দেখেনি।
শহরের মালগ্রাম ও কৈগাড়ি এলাকা পড়েছে বর্ধিত অংশে। এ এলাকায় বাড়ি ঠিকাদার আবু হেনার (৪৩)। তিনি বলেন, ‘বাড়ি থেকে বের হলে কারখানা ও গাড়ির বিকট শব্দ, কালো ধোঁয়া, জলাবদ্ধতার ভোগান্তি। যেখানে-সেখানে মাংসের দোকান, জবাই করা পশুর উচ্ছিষ্টাংশ রাস্তায় ফেলে রাখা হয়। বাস ও বেবিট্যাক্সি স্ট্যান্ডে অরাজক পরিস্থিতি। বর্ধিত এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় পৌরসভার সব ধরনের নাগরিক ফি দিচ্ছি। কিন্তু কোনো সুবিধা আমরা পাই না।’
বগুড়া পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ‘ক’ শ্রেণির এই পৌরসভার আয়তন বড় হলেও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় বরাদ্দ মেলে অন্যান্য পৌরসভার মতো। এখনও পৌর এলাকায় কাঁচা সড়ক রয়েছে প্রায় ৩৫৫ কিলোমিটার। কাঁচা নালা প্রায় ৪০০ কিলোমিটার। এ ছাড়া পাকা সড়কের বেশির ভাগই ভাঙাচোড়া। গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়ক খানাখন্দে ভরপুর। নালাও ভেঙে নষ্ট হয়ে গেছে। এসব কাজ সীমিত বাজেটে করা যায় না।
দীর্ঘদিন ধরে আধুনিক শহরের অপেক্ষায় আছেন বলে জানান একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা আমিনুল হক। তিনি বলেন, সিটি কপোরেশন হলে শহরের ট্রাফিক সিস্টেম ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আসত।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে বগুড়া পৌরসভায় বাজেট ঘোষণা করা হয় ২৭১ কোটি ১৫ লাখ ৭৩ হাজার ১৩৫ টাকার। এর মধ্যে ৭৯ কোটি টাকা (প্রায় ৩০%) পৌরসভার নিজস্ব আয়। বাকি ১৯১ কোটি ৬০ লাখ টাকা (প্রায় ৭০%) বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের। উন্নয়ন খাতে এডিপি থেকে আয় ২ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। যেখানে গত অর্থবছরে আয় ছিল মাত্র ৭৬ লাখ টাকা। আরইউটিডিপি থেকে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রত্যাশা ছিল।
সিটি কপোরেশন নিয়ে তৎপরতা
বগুড়া পৌরসভাকে সিটি করপোরেশন ঘোষণার দাবি দীর্ঘদিনের। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক জটিলতায় তা বাস্তবায়িত হয়নি। সম্প্রতি সরকারের কাছে বগুড়া সিটি করপোরেশন করার প্রস্তাব দিয়েছেন জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা। তিনি বলেন, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী পৌর এলাকার জনসংখ্যা অন্তত চার লাখ হতে হবে। বগুড়া পৌরসভায় বাসিন্দা সাড়ে চার লাখ। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে তিন হাজার জন প্রয়োজন। বগুড়া শহরে এ ঘনত্ব পাঁচ হাজার ৮৪৩ জন। সিটির জন্য আয়তন হতে হয় অন্তত ২৫ বর্গকিলোমিটার। বগুড়া পৌর এলাকা ৬৯ দশমিক ৫৬ বর্গকিলোমিটারের।
স্থানীয় সরকার বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তার ভাষ্য, সিটি করপোরেশন হওয়ার যোগ্যতা অনেক আগেই অর্জন করেছে বগুড়া। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মভূমি হওয়ায় সরকারি কোনো কর্মকর্তা এ নিয়ে প্রস্তাবের সাহস করেননি। রাজনৈতিক রোষানলের ভয়ে বগুড়ার কোনো রাজনীতিবিদও কথা বলেননি। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু সামাজিক সংগঠন স্মারকলিপি পাঠালেও তা গুরুত্ব পায়নি। এখন রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয়েছে। গুরুত্ব বিবেচনা করলে বগুড়াকে পেছনে রাখার সুযোগ নেই। তারা জানিয়েছেন, ১০ এপ্রিল স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা এসেছে। উপসচিব মো.
শহরের মাটিডালি এলাকার বাসিন্দা আমিনা বেগম বলেন, ‘আমরা বারবার শুনছি, উন্নয়ন হবে। কিন্তু কোথাও কোনো দৃশ্যমান পরিবর্তন নেই। আমরা যে পৌর এলাকার বাসিন্দা, এটা মনে হয় না।’
সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযান (সুপ্র) বগুড়া জেলা শাখার সম্পাদক কেজিএম ফারুক বলেন, পৌরসভার নির্দিষ্ট বাজেটে অনেক এলাকার মানুষকে কোনো নাগরিক সুবিধা দেওয়া সম্ভব হয় না। অথচ যথারীতি পৌর কর দিতে হচ্ছে। জমি রেজিস্ট্রি করতেও ফি দিতে হচ্ছে চারগুণ।
বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাইরুল ইসলাম বলেন, বর্ধিত এলাকার জন্য যে পরিমাণ সাপোর্ট দরকার সেটি আসলে পৌরসভার নেই। শহরে উন্নয়ন করতে হলে ট্যাক্স বাড়ানোর বিকল্প নেই। এ মুহূর্তে বগুড়াকে সিটি কপোরেশন ঘোষণা করা দরকার। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি বাড়বে। নাগরিক সেবা বাড়বে।
বগুড়া পৌরসভার প্রশাসক মাসুম আলী বেগ বলেন, জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে পৌরসভার জন্য উন্নয়নসহায়তা বরাদ্দ দরকার। বগুড়া পৌরসভা প্রথম শ্রেণির হিসেবে অন্য পৌরসভার মতোই বরাদ্দ পায়। এখানকার জনসংখ্যা ও ভোটার সংখ্যা নতুন কয়েকটি সিটি করপোরেশনের চেয়ে বেশি। তাই বগুড়াবাসীর দাবি খুব যৌক্তিক।
জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজার ভাষ্য, এ শহরটি ব্যবসাপ্রধান ও শিল্পসমৃদ্ধ। যে কারণে স্থানীয় আয় পাঁচ কোটি টাকার বেশি। এ ছাড়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পৌরসভার বার্ষিক আয় ৪৬ কোটি টাকার বেশি ছিল। এটি সিটি করপোরেশন হওয়ার শর্তের ন্যূনতম সীমা অতিক্রম করে। বগুড়ায় বিসিক শিল্পনগরী রয়েছে। ছোট, মাঝারি ও বড় মিলিয়ে শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রায় ২০ হাজার। প্রায় এক হাজার ৩৪০ কিলোমিটার রাস্তা ও এক হাজার ২১০ কিলোমিটার নালা রয়েছে। এই এলাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজসহ চারটি সরকারি কলেজ, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেলসহ দুইটি সরকারি হাসপাতাল, ব্যাংক, বীমা, শপিংমল, ফাইভ, ফোরস্টার হোটেলসহ বিস্তৃত অবকাঠামো রয়েছে, যা সম্প্রসারণযোগ্য।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এল ক র ব স ন দ স থ ন য় সরক র কর মকর ত প র এল ক জনস খ য প রসভ র আয়তন ব র জন য র জন ত এল ক য় বর দ দ শহর র দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
এই সরকারও আমলাতন্ত্রের চাপে!
চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান নতুন যে জন-আকাঙ্ক্ষা তৈরি করেছে, সেখানে নিশ্চিত করেই জনপ্রশাসন সংস্কারের প্রশ্নটি নাগরিকদের কেন্দ্রীয় একটি চাহিদা। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মতোই পদ ছাড়া পদোন্নতি দিচ্ছে, তাতে উদ্বিগ্ন না হওয়ার কোনো কারণ নেই। কেননা, আগের সরকার কর্তৃত্ববাদী ও স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছিল যে কয়টা স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে, তার অন্যতম আমলাতন্ত্র।
জনপ্রশাসনকে রাজনীতিকরণের বৃত্ত ভেঙে জনবান্ধব করার একটা বড় সুযোগ এনে দিয়েছিল অভ্যুত্থান। কিন্তু শুরু থেকেই অন্তর্বর্তী সরকার আমলাতন্ত্রের ওপর অতিনির্ভরশীল হয়ে ওঠায় সেই সুযোগ অনেকটাই হাতছাড়া হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের বিরোধিতার কারণে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের বড় কোনো সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে পারেনি সরকার। অন্যদিকে বেতন বাড়াতে গঠন করা হয়েছে বেতন কমিশন। কিছু মুখকে সরিয়ে দেওয়া ছাড়া জনপ্রশাসনে সেই পুরোনো চর্চা অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে পদ ছাড়া পদায়নের ক্ষেত্রে জনপ্রশাসনে যেভাবে আগের সরকারের চর্চার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়েছে, সেটা যারপরনাই দুঃখজনক।
প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, উপসচিব স্তরে যেখানে আগে থেকেই পদের চেয়ে ৬০০ কর্মকর্তা বেশি রয়েছেন, সেখানে আগস্ট মাসে নতুন করে ২৬৮ জনকে এই পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত সচিব পদেও পদোন্নতির আলোচনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক সরকারের আমলে জনপ্রশাসনে হরেদরে পদোন্নতি দেওয়ার অনেক নজির আছে। এর কারণ একটাই, আমলাতন্ত্রকে তুষ্ট রাখা। অন্তর্বর্তী সরকার এই চর্চায় ছেদ ঘটাতে পারবে, সেটাই সবাই প্রত্যাশা করেছিল।
পরিহাসের বিষয় হচ্ছে, জনপ্রশাসনে পদ ছাড়া পদোন্নতি দেওয়ার পর বেশির ভাগ কর্মকর্তাকে আগের জায়গাতেই রেখে দেওয়া হয়। এর মানে হচ্ছে তাঁরা আগের দায়িত্বই পালন করেন, কিন্তু মাঝখান থেকে বেতন-ভাতা বাড়ে। উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা তিন বছর চাকরি পাওয়ার পর বিনা সুদে গাড়ি কেনার জন্য ঋণসুবিধা পান। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে অবসরে যাওয়া সরকারি কর্মকর্তাদের যেভাবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, তার দৃষ্টান্তও খুব বেশি নেই। অবসরে যাওয়া প্রশাসন ক্যাডারের ‘বঞ্চিত’ ৭৬৪ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে ও অন্য ক্যাডারের ‘বঞ্চিত’ ৭৮ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়েছে।
জনপ্রশাসনের মেধাবী ও যোগ্য কর্মকর্তারা পদোন্নতি পেয়ে পরের ধাপে যাবেন, সেটা স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু পদ না থাকার পরও কেন পদায়ন করা হবে? এ ক্ষেত্রে সরকারকে পর্যালোচনা করে দেখা প্রয়োজন, জনপ্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে পদ বাড়ানো যায় কি না। আবার যেখানে এমনিতেই পদের বিপরীতে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সংখ্যা বেশি, সেখানে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া কতটা যৌক্তিক?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও জনপ্রশাসনবিশেষজ্ঞ সালাউদ্দিন এম আমিনুজ্জামান বলেছেন, জনপ্রশাসনে পদ ছাড়া পদোন্নতি দেওয়া যায় না। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে মেধাবীদের পদোন্নতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এরপরও কেন এমন পদোন্নতি—সেই ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন, সরকার সম্ভবত আমলাতন্ত্রের চাপে রয়েছে। এই ধারণা শুধু তাঁর একার নয়, নাগরিক পরিসরের
বিস্তৃত একটি ধারণাও। অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই এর পরিষ্কার ব্যাখ্যা হাজির করা উচিত।
মাথাভারী আমলাতন্ত্র সরকারি সেবা নাগরিকের কাছে ঠিকভাবে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বড় একটা বাধা। অন্যদিকে সরকারকে এখানে বিশাল ব্যয়ের বোঝা বহন করতে হয়। ফলে মাঠ প্রশাসন থেকে শুরু করে সিনিয়র সচিব পর্যন্ত একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ও গতিশীল জনপ্রশাসনই সবাই প্রত্যাশা করে। জনপ্রশাসনের সব স্তরে পদোন্নতি রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, মেধার ভিত্তিতেই হতে হবে।