Samakal:
2025-06-15@23:07:18 GMT

ঊর্ধ্বমুখী হাসি সূর্যমুখীর

Published: 11th, April 2025 GMT

ঊর্ধ্বমুখী হাসি সূর্যমুখীর

পটুয়াখালীর দুমকীর মাঠে মাঠে এখন সূর্যমুখীর সমাহার। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে সোনালি ফুল। সূর্যমুখী ফুলের সঙ্গে ছবি তুলছেন ফুলপ্রেমীরা। তাদের পদচারণায় মুখর গ্রামীণ জনপদের বিভিন্ন সূর্যমুখীর ক্ষেত। শুধু সৌন্দর্যের জন্যই নয়, এই ফুল এখন কৃষকদের কাছে এক অর্থকরী ফসল।
জানা গেছে, সূর্যমুখী তেলের ব্যাপক চাহিদা, কম খরচে চাষাবাদ ও অল্প সময়ে ফলন– এই তিন কারণেই সূর্যমুখীর দিকে ঝুঁকছেন দুমকীর কৃষক। 
দুমকী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, একসময় এ অঞ্চলে সূর্যমুখী চাষ হতো না বললেই চলে। কিন্তু ভালো মুনাফা হওয়ায় উপজেলায় দিন দিন সূর্যমুখীর চাষ বেড়ে চলেছে। চলতি মৌসুমে সূর্যমুখী চাষে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪৫ হেক্টর। বাস্তবে চাষাবাদ হয়েছে তার বেশি জমিতে। এ বছর বিশেষ করে শ্রীরামপুর ইউনিয়নের জামলা, কোহারজোড়, দক্ষিণ শ্রীরামপুর, উত্তর শ্রীরামপুর, রাজাখালী, চরবয়ড়া গ্রামে ব্যাপকভাবে সূর্যমুখীর চাষাবাদ হয়েছে।
শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জামলা এলাকার কৃষক ধলু হাওলাদার বলেন, উপজেলার জামলা কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি এ বছর ৭০ শতাংশ জমিতে বারি সূর্যমুখী-২ জাতের সূর্যমুখী চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও বেশ ভালো হয়েছে।
কৃষক বাবুল খান, মনির হোসেন, হালিমা বেগম ও মানসুরা বেগম জানান, কয়েক বছর ধরে তারা হাইসান-৩৬ জাতের সূর্যমুখী চাষ করছেন। এ বছর  গাছে বেশ ভালো ফুল ফুটেছে। বৃষ্টি না হওয়ায় প্রয়োজনমতো সেচ দেওয়া সম্ভব হয়নি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে নিজস্ব চাহিদা পূরণ করে সূর্যমুখীর বীজ বাজারে বিক্রি করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ইসমিতা আক্তার সোনিয়া বলেন, সূর্যমুখীর বীজ থেকে যে তেল হয়, তা পুষ্টিসম্পন্ন ও স্বাস্থ্যকর। ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণে উপজেলার কৃষকদের সূর্যমুখী আবাদে উৎসাহিত করা হচ্ছে। চলতি মৌসুমে কৃষি প্রণোদনার আওতায় দুই শতাধিক কৃষক-কৃষাণিকে বিনামূল্যে সূর্যমুখীর বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত কৃষকদের সূর্যমুখীর প্রদর্শনী প্লট তদারকের পাশাপাশি ও নানা করণীয় সম্পর্কে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।
দুমকী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.

ইমরান হোসেন জানান, দেশে উৎপাদিত ভোজ্যতেল দিয়ে শতকরা ১২ ভাগ চাহিদা মেটানো সম্ভব। বাকি চাহিদা মেটাতে আমদানি করতে হয়।  ভোজ্যতেলের আমদানিনির্ভরতা কমাতে চাষিদের তেলজাতীয় শস্য উৎপাদনে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এ জন্য উপজেলায় শস্যমেলা ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে চাষিদের সূর্যমুখী চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আগ্রহী কৃষকদের মধ্যে প্রণোদনা হিসেবে সার, বীজ, তেলবীজ সংগ্রহ ও তেল নিষ্কাশনের যন্ত্রপাতি বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। আমদানিনির্ভরতা কমাতে উপজেলার চাষিদের সূর্যমুখীসহ অন্যান্য তেলজাতীয় শস্য উৎপাদনে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত ক ষকদ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা

রবিবার বিকেল থেকে ইরানজুড়ে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

রবিবার রাতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদ খাতিবজাদেহ ইসরায়েলি হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি জানান, রবিবার রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।

এক্স-পোস্টে সাইদ বলেছেন, “ইসরায়েলের অপরাধী শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনে ইচ্ছাকৃত এবং নির্মম হামলা চালিয়েছে।”

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত

ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত

উপ-মন্ত্রী আরো বলেন, “এই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, আমার বেশ কয়েকজন সহকর্মীও আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”

সাইদ বলেন, “এটি আরো একটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর চলমান ও নিয়মতান্ত্রিক আগ্রাসন অভিযানের অংশ।”

এর আগে শনিবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তেহরানের অস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইরানের আইআরজিসি ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রবিবার নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।

বিবৃতিতে  বলা হয়, এই হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি), গার্ডস কুদস ফোর্স এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো জানিয়েছে, ইরানজুড়ে অসংখ্য অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে। 

ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলায় আইআরজিসিরি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার সহকারী হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মোহসেন বাঘারি নামে আইআরজিসির আরো একজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতে রবিবার রাতে ইসরায়েলে ৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে ইরান।

ইসরায়েলের ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে দুটি এবং হাইফায় একটি আবাসিক ভবনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা।

ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সাতজন আহত হয়েছেন। এছাড়া কিরিয়াত গাটের কাছে দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে একজন আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির ইরানের ওপর আক্রমণ আরো তীব্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটি বিবৃতি জারি করে ইসরায়েরি সেনাপ্রধান বলেছেন, “আমরা আমাদের অভিযান তীব্রতর করে যাব এবং এটি করে, আগামী বছরগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করব। আমরা জানতাম এর একটি মূল্য দিতে হবে এবং এটিই বোঝায় যে, আমরা কেন এখনই পদক্ষেপ নিয়েছি, তা অনেক দেরি হওয়ার আগেই।”

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২২৪ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ৩৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ