ট্রাম্প বিপুল শুল্ক আরোপের পরও কেন পিছু হটছে না বেইজিং
Published: 12th, April 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের ওপর ঘোষিত পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করলেও চীনের জন্য তা করেননি। বরং দেশটির পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে শুল্ক আরও বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশ করেছেন, যা কার্যকর করারও ঘোষণা দিয়েছেন। জবাবে গতকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করেছে বেইজিং। এই শুল্ক যুদ্ধে বেইজিং কেন ট্রাম্পের কাছে হার শিকার করছে না, এমন একটি প্রশ্ন ঘুরেফিরে আসছে। এর সহজ উত্তর হলো, বেইজিংয়ের এটি করার দরকার নেই।
চীনের নেতারা বলবেন, তাঁরা কোনো ধমকের কাছে নতিস্বীকার করতে রাজি নন। এই কথা তাঁদের সরকার এরই মধ্যে বারবার ট্রাম্প প্রশাসনকে জানিয়েছে। তাঁরা এটাও বলেছে, ওয়াশিংটনের শুল্কের মুখে পৃথিবীর অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় তাঁদের অনেক বেশি কিছু করার ক্ষমতা রয়েছে।
শুল্ক যুদ্ধ শুরুর আগে চীনের বিপুল পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হতো। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে চীনের আয় দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) মাত্র ২ শতাংশ।
এর অর্থ হলো, এ মুহূর্তে চীনের শাসক দল কমিউনিস্ট পার্টি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে জড়ানো স্পষ্টত পছন্দ করছে না। কারণ, বর্তমানে দেশটি নিজেদের অর্থনীতির বড় কিছু সমস্যা নিয়ে ব্যস্ত। এসব সমস্যার মধ্যে কয়েক বছর ধরে চলে আসা আবাসন খাতের সংকট, অতিরিক্ত আঞ্চলিক ঋণ ও তরুণদের বেকারত্ব অন্যতম।
আরও পড়ুননতুন শুল্ক আরোপ হিতে বিপরীত হবে বলেই কি পিছু হটলেন ট্রাম্প১১ এপ্রিল ২০২৫তবে এসব সমস্যা সত্ত্বেও চীন সরকার নিজেদের জনগণকে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক হামলা মোকাবিলায় তাঁরা শক্ত অবস্থানে রয়েছে। দেশটির নেতারা এটাও জানিয়েছেন, তাঁদের আরোপিত শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি নিঃসন্দেহে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ট্রাম্প দম্ভ করে নিজ সমর্থকদের বলেছিলেন, শুধু শুল্ক আরোপ করেই চীনকে সহজে হার মানতে বাধ্য করা হবে। কিন্তু বাস্তবে তা চরম বিভ্রান্তিকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।
দেখা যাচ্ছে, বেইজিং আত্মসমর্পণ করছে না।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বেইজিং সফররত স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজকে শুক্রবার বলেছেন, তাঁর দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সম্মিলিতভাবে ট্রাম্প প্রশাসনের ‘একতরফা বুলিংয়ের চর্চাকে প্রতিহত করা’ উচিত।
জবাবে পেদ্রো সানচেজ বলেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে বেইজিংয়ের বাণিজ্য উত্তেজনা চীন ও ইউরোপের মধ্যকার সহযোগিতাকে বাধাগ্রস্ত করা উচিত হবে না।
গতকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানির পণ্যে চীনের নতুন শুল্ক ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে রাজধানী বেইজিংয়ে সি-সানচেজের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। একই সঙ্গে দেশটি এটাও বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যে নতুন করে শুল্ক আরোপ করলেও পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে না বেইজিং।
চীনের কমিউনিস্ট বিপ্লবের প্রধান নেতা মাও সে-তুংয়ের একটি চিত্রকর্ম টাঙাচ্ছেন এক কর্মী। চীনের শানসি প্রদেশের চাংঝি চত্বরে, ১৯ নভেম্বর ২০০৯.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প
এছাড়াও পড়ুন:
আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য
এশিয়া কাপে আজকের রাত যেন এক নাটকীয় অধ্যায়। ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে আবুধাবির মাঠে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া এই লড়াই কেবল দুই দলের নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ভাগ্যও। কোটি টাইগার সমর্থক তাই আজ তাকিয়ে থাকবে টিভি পর্দায়। কারণ, এই ম্যাচেই নির্ধারিত হবে, বাংলাদেশ কি সুপার ফোরে উড়াল দেবে, নাকি গ্রুপ পর্বেই শেষ হবে স্বপ্নযাত্রা।
গ্রুপের সমীকরণ এখন টানটান নাটকের মতো। তিন ম্যাচে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শ্রীলঙ্কা। সমান ৪ পয়েন্ট থাকলেও রান রেটে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের ঝুলিতে আছে ২ পয়েন্ট; এক জয় ও এক হারের ফল। হংকং অবশ্য তিন ম্যাচেই হেরে অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে।
আরো পড়ুন:
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান
এখন হিসাবটা এমন—
আফগানিস্তান হেরে গেলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই সুপার ফোরে।
আফগানিস্তান জিতলে সমীকরণ জটিল হবে। তখন শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান ৪ হলেও নেট রান রেটে স্পষ্ট এগিয়ে থাকবে আফগানরা (২.১৫০)। শ্রীলঙ্কার রান রেট ১.৫৪৬, আর বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে -০.২৭০-তে।
অর্থাৎ আফগানিস্তান যদি জেতে, তবে বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে এক অসম্ভব সমীকরণের দিকে। সেটা হলো- লঙ্কানদের অন্তত ৭০ রানের ব্যবধানে হারতে হবে এবং তা করতে হবে ৫০ বল হাতে রেখে। অন্যথায় রান রেটের খেলায় পিছিয়েই থাকতে হবে টাইগারদের। তবে বৃষ্টি যদি হানা দেয় কিংবা ম্যাচ কোনো কারণে পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দু’দলই নিশ্চিতভাবেই চলে যাবে সুপার ফোরে।
ম্যাচকে ঘিরে দুই শিবিরেই চাপ-উত্তেজনার আবহ। আফগানিস্তানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার গুলবাদিন নাইব মনে করেন, চাপটা আসলে শ্রীলঙ্কার ওপরই বেশি, “আমরা এসব টুর্নামেন্ট খেলতে অভ্যস্ত, আমাদের কোনো চাপ নেই। শ্রীলঙ্কা ভালো দল ঠিকই, তবে তারাও চাপে থাকবে। আমার মনে হয় দারুণ একটা ম্যাচ হবে।”
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। হ্যাঁ, বাংলাদেশের সমর্থকরা আমাদের জয়ের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরাও জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামব।”
হংকংয়ের বিপক্ষে জিতলেও শ্রীলঙ্কাকে ঘাম ঝরাতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা বলছে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়টা সহজ হবে না তাদের জন্যও। শেষ পর্যন্ত কারা হাসবে জয়ের হাসিতে, আর কোন সমীকরণে দাঁড়াবে বাংলাদেশের ভাগ্য; এই প্রশ্নের উত্তরই দেবে আজকের আবুধাবির রাত।
ঢাকা/আমিনুল