দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কমলেও বেড়েছে রাজস্ব আদায়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই থেকে মার্চ) বিগত অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৩৬৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জানা গেছে, আইআরএম ও আনস্টপিং দলের কঠোর নজরদারির কারণে শুল্ক ফাঁকির ঘটনা রোধ করায় এই সফলতা এসেছে। 

কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ মার্চ বন্দরের ১৭ নম্বর শেডে মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে আমদানি করা প্রায় ৪ কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় ফেব্রিক্স আটক করা হয়। গত ৫ জানুয়ারি অর্ধকোটি টাকার অবৈধ পণ্য আটক করা হয়। ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট লাইসেন্স বাতিলসহ আদায় করা হয় মোটা অঙ্কের জরিমানা। আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে পাসপোর্ট যাত্রীদের আনা ১২ হাজার ৩৪২টি চালান (ডিএম) আটক করা হয়। যা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে। এখান থেকে ৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হবে বলে জানিয়েছেন কাস্টমস কর্মকর্তা আব্দুল গনি। 

চলতি অর্থবছরের ওই ৯ মাসে ভারতে প্রায় ২৮ লাখ ৪০ হাজার ৯৯ টন পণ্য রপ্তানি হয়। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল প্রায় ২৯ লাখ ৪৩ হাজার ৭১ টন পণ্য। এবার ১০ হাজার ২৭২ টন পণ্য কম রপ্তানি হয়েছে। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের একই সময়ে ভারত থেকে প্রায় ১২ লাখ ৩৩ হাজার ৭৪৬ দশমিক ২৯ টন পণ্য আমদানি হয়। গত অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল প্রায় ১২ লাখ ৫২ হাজার ৭৬৭ দশমিক ২৯ টন পণ্য। হিসাব অনুযায়ী, গত অর্থবছরের তুলনায় এবার ১৯ হাজার ২০ দশমিক ৮২ টন কম আমদানি হয়েছে।  

সূত্র জানায়, পণ্য আমদানি কিছুটা কমলেও চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৩৬৬ দশমিক ১৫ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। বেনাপোল কাস্টম হাউসে চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। সেই আলোকে অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৪৩২ দশমিক ৩ কোটি টাকা; সেখানে আদায় হয়েছে ৫ হাজার ৭৯৭ দশমিক ৭৬ কোটি টাকা। 

যার মধ্যে জুলাই মাসে ৪১৩ দশমিক ২২ কোটি টাকা, আগস্ট মাসে ৪০১ দশমিক ৫৫ কোটি টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে ৪৮৯ দশমিক ১১ কোটি টাকা, অক্টোবর মাসে ৫২৪ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা, নভেম্বর মাসে ৬১৪ দশমিক ৭১, ডিসেম্বর মাসে ৭৭৮ দশমিক ৯৫ কোটি টাকা, জানুয়ারি মাসে ৬২১ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা, ফেব্রুয়ারি মাসে ৮১৮ দশমিক ৫ কোটি টাকা এবং মার্চ মাসে ৭৭০ দশমিক ১১ কোটি রাজস্ব আদায় হয়েছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খাইরুজ্জামান মধু বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পরে ভারত থেকে আমদানি কিছুটা কমলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেশির ভাগ আমদানিকারক বেনাপোল বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তাছাড়া কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রাজস্ব ফাঁকি রোধে কড়াকড়ি আরোপ করায় অসাধু ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। 

বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার মো.

কামরুজ্জামান জানান, গত তিন মাস বেনাপোল বন্দরে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল চালু ও বসানো হয় স্ক্যানিং মেশিন। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রাজস্ব ফাঁকি রোধ ও বাণিজ্য সহজীকরণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়। এতে বর্তমানে বাণিজ্যে অনেকটা গতি ফিরেছে।  

তিনি জানান, হাসিনা সরকারের শেষ দিকে পণ্য আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খুলতে ব্যাংক থেকে চাহিদা অনুযায়ী ডলার পাওয়া যাচ্ছিল না। ফলে পণ্য কম আমদানি হয়েছে। সম্প্রতি ডলার সংকট কেটে যাওয়ায় আমদানি আগের মতো স্বাভাবিক হচ্ছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক স টমস বর ম স দশম ক কমল ও আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ

‎পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

আরো পড়ুন:

সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা

পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা

‎গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‎বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

‎সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি। 

এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

‎ঢাকা/এনটি/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
  • সেপ্টেম্বরের ১৬ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ২০ হাজার কোটি টাকা
  • বাংলাদেশ ব্যাংক এক দিনে ২৬ ব্যাংক থেকে ৩৫ কোটি ডলার কিনল কেন