আমদানি-রপ্তানি কমলেও রাজস্ব বেড়েছে ৩৬৬ কোটি টাকা
Published: 12th, April 2025 GMT
দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কমলেও বেড়েছে রাজস্ব আদায়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই থেকে মার্চ) বিগত অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৩৬৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জানা গেছে, আইআরএম ও আনস্টপিং দলের কঠোর নজরদারির কারণে শুল্ক ফাঁকির ঘটনা রোধ করায় এই সফলতা এসেছে।
কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ মার্চ বন্দরের ১৭ নম্বর শেডে মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে আমদানি করা প্রায় ৪ কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় ফেব্রিক্স আটক করা হয়। গত ৫ জানুয়ারি অর্ধকোটি টাকার অবৈধ পণ্য আটক করা হয়। ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট লাইসেন্স বাতিলসহ আদায় করা হয় মোটা অঙ্কের জরিমানা। আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে পাসপোর্ট যাত্রীদের আনা ১২ হাজার ৩৪২টি চালান (ডিএম) আটক করা হয়। যা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে। এখান থেকে ৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হবে বলে জানিয়েছেন কাস্টমস কর্মকর্তা আব্দুল গনি।
চলতি অর্থবছরের ওই ৯ মাসে ভারতে প্রায় ২৮ লাখ ৪০ হাজার ৯৯ টন পণ্য রপ্তানি হয়। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল প্রায় ২৯ লাখ ৪৩ হাজার ৭১ টন পণ্য। এবার ১০ হাজার ২৭২ টন পণ্য কম রপ্তানি হয়েছে। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের একই সময়ে ভারত থেকে প্রায় ১২ লাখ ৩৩ হাজার ৭৪৬ দশমিক ২৯ টন পণ্য আমদানি হয়। গত অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল প্রায় ১২ লাখ ৫২ হাজার ৭৬৭ দশমিক ২৯ টন পণ্য। হিসাব অনুযায়ী, গত অর্থবছরের তুলনায় এবার ১৯ হাজার ২০ দশমিক ৮২ টন কম আমদানি হয়েছে।
সূত্র জানায়, পণ্য আমদানি কিছুটা কমলেও চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৩৬৬ দশমিক ১৫ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। বেনাপোল কাস্টম হাউসে চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। সেই আলোকে অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৪৩২ দশমিক ৩ কোটি টাকা; সেখানে আদায় হয়েছে ৫ হাজার ৭৯৭ দশমিক ৭৬ কোটি টাকা।
যার মধ্যে জুলাই মাসে ৪১৩ দশমিক ২২ কোটি টাকা, আগস্ট মাসে ৪০১ দশমিক ৫৫ কোটি টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে ৪৮৯ দশমিক ১১ কোটি টাকা, অক্টোবর মাসে ৫২৪ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা, নভেম্বর মাসে ৬১৪ দশমিক ৭১, ডিসেম্বর মাসে ৭৭৮ দশমিক ৯৫ কোটি টাকা, জানুয়ারি মাসে ৬২১ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা, ফেব্রুয়ারি মাসে ৮১৮ দশমিক ৫ কোটি টাকা এবং মার্চ মাসে ৭৭০ দশমিক ১১ কোটি রাজস্ব আদায় হয়েছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খাইরুজ্জামান মধু বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পরে ভারত থেকে আমদানি কিছুটা কমলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেশির ভাগ আমদানিকারক বেনাপোল বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তাছাড়া কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রাজস্ব ফাঁকি রোধে কড়াকড়ি আরোপ করায় অসাধু ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন।
বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার মো.
তিনি জানান, হাসিনা সরকারের শেষ দিকে পণ্য আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খুলতে ব্যাংক থেকে চাহিদা অনুযায়ী ডলার পাওয়া যাচ্ছিল না। ফলে পণ্য কম আমদানি হয়েছে। সম্প্রতি ডলার সংকট কেটে যাওয়ায় আমদানি আগের মতো স্বাভাবিক হচ্ছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক স টমস বর ম স দশম ক কমল ও আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে বিদেশি ঋণ শোধ ৩০০ কোটি ডলার ছাড়াল
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই–মার্চ) বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল বাবদ ৩২১ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছে, যা গত অর্থবছরের পুরো সময়ের প্রায় সমান। গত অর্থবছরে (২০২৩–২৪) মোট ৩৩৭ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হয়েছে। এর মানে হলো, এবার প্রথম ৯ মাসেই গত অর্থবছরের কাছাকাছি ঋণ পরিশোধ হয়ে গেছে।
আজ বুধবার বিকেলে প্রকাশিত অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তৈরি জুলাই–মার্চ মাসের বিদেশি ঋণ পরিস্থিতির হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। সেখানে বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধের এই তথ্য পাওয়া গেছে।
ইআরডির তথ্য অনুসারে, ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই–মার্চ) দেশে মোট প্রায় ৪৮১ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বিদেশি ঋণ এসেছে। এ সময়ে ঋণের সুদাসল পরিশোধ করতে হয়েছে অর্থছাড়ের প্রায় দুই–তৃতীয়াংশের সমান।
অন্যদিকে আলোচ্য ৯ মাসে বিদেশি ঋণ বাবদ পরিশোধের মধ্যে আসলের পরিমাণ ২০১ কোটি ডলার। আর সুদ বাবদ ১২০ কোটি ডলার পরিশোধ হয়েছে। ২০২৩–২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ২৫৭ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হয়েছিল। এক বছরের ব্যবধানে ৬৪ কোটি ডলার বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে বাংলাদেশ সরকারকে।
এদিকে গত জুলাই–মার্চ সময়ে ৩০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ বিদেশি সহায়তার প্রতিশ্রুতি পেয়েছে বাংলাদেশ, যা গতবারের একই সময়ে পাওয়া প্রতিশ্রুতির অর্ধেকের কম। গত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ৭২৪ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গিয়েছিল।
জুলাই–মার্চ সময়ে সবচেয়ে বেশি ১২২ কোটি ডলার ছাড় করেছে এডিবি। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংক ১০৭ কোটি ডলার ও জাপান ৮৯ কোটি ডলার দিয়েছে।