করহার খুব বেশি কমানোর সুযোগ নেই: এনবিআর চেয়ারম্যান
Published: 13th, April 2025 GMT
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেছেন, করহার খুব বেশি কমানোর সুযোগ নেই। তবে কোম্পানি লোকসান করলেও কর দিতে হয়, সেখানে নতুন বাজেটে কিছু করার চেষ্টা থাকবে। অন্যদিকে আমদানিতে শুল্কহার কমানো হবে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক আরোপের পরিপ্রেক্ষিতে সার্বিক শুল্কহার আরও যৌক্তিকীকরণ করা হবে।
রোববার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত এ আলোচনায় সহযোগিতা করে দৈনিক সমকাল ও চ্যানেল টোয়েন্টিফোর। ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন সমকাল সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী।
এনিবআর চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের কর-জিডিপি অনুপাত খুবই কম। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে কর দেওয়ার প্রবণতা কম। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ১ কোটি ৪৫ লাখ টিআইএনর মধ্যে ৪৫ লাখের মতো রিটার্ন জমা দেন। রিটার্ন জমা দেওয়াদের মধ্যে তিন ভাগের দুই ভাগই করযোগ্য আয় নেই বিবেচনায় শূন্য রিটার্ন দিয়েছেন।
এনবিআরের কার্যক্রম পুরোপুরিভাবে অটোমেশন করতে ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘অটোমেশন ছাড়া আমাদের বিকল্প নেই। আমরা এ বিষয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। কর প্রদান মোবাইল অ্যাপে আনার জন্য কাজ চলছে। আগামী অর্থবছর থেকে যাতে ব্যক্তি আয়কর দাতারা সবাই অনলাইনে রিটার্ন জমা দেন, আমরা সেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। অন্যদিকে কোম্পানি করদাতাদেরও আমরা একই প্রক্রিয়ায় আনার চেষ্টার করছি।’
তিনি আরও বলেন, ব্যক্তি ও কোম্পানির আয়কর হার কমানোর সুযোগ নেই। তবে করদাতারা আগামী বাজেটে ইতিবাচক বার্তা পাবেন। কর ব্যবস্থা বৈমষ্যহীন করার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, আমাদের রাজস্বের বেশির ভাগই আসবে ভ্যাট ও আয়কর থেকে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের প্রেক্ষিতে নয়, এলডিসি থেকে উত্তরণের কারণেও আমদানি কমিয়ে আনতে হবে।
সার্বিকভাবে সরকার বৈষম্যহীন করনীতি প্রণয়ন চায়। সবার জন্য একই রেট করতে চাই। কারও ক্ষেত্রে কম, কারও ক্ষেত্রে বেশি এমনটি হবে না। দীর্ঘদিন ধরে দেওয়া কর অব্যাহতি নতুন বাজেটে কমানো হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আয়কর রিটার্নে ভুল হলে কীভাবে ঠিক করবেন
বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমায় ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক, ভুল হতেই পারে। করের হিসাবেই বেশি ভুল হয়। কর রেয়াতের হিসাবেও ভুল করেন অনেক করদাতা। এ ছাড়া করদাতারা এমনিতেই আয়কর নিয়ে ভয় ও শঙ্কায় থাকেন।
যদি কোনো কারণে রিটার্ন ভুল হয়ে যায়, তাহলে আপনার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়বে না। আপনি রিটার্ন জমার পরও তা সংশোধন করতে পারবেন। দুশ্চিন্তার কারণ নেই।
এবার দেখা যাক, কীভাবে রিটার্নের ভুল সংশোধন করবেন।
তিন ভুল সংশোধন করা যাবে
রিটার্নে তিন ধরনের ভুল সংশোধন করা যাবে। রিটার্ন দাখিলের পর যদি করদাতার কাছে প্রতীয়মান হয় যে তাঁর প্রদেয় কর সঠিকভাবে পরিগণিত হয়নি বা সঠিক অঙ্কে পরিশোধিত হয়নি, তাহলে তিনি সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। যেসব ভুল সংশোধন করা যাবে, তা হলো—১. প্রদর্শিত আয়, ২. দাবি করা কর অব্যাহতি বা ক্রেডিট ও ৩. অন্য যেকোনো যৌক্তিক কারণে ভুল।
যাঁরা ভুল সংশোধন করতে পারবেন না
রিটার্নে তিন ধরনের কারণে ভুল সংশোধন করা যাবে না। এগুলো হলো—১. রিটার্ন দাখিল করার তারিখ থেকে ১৮০ দিন শেষ হওয়ার পর, ২. সংশোধিত রিটার্ন প্রথমবার দাখিলের পর ও ৩. মূল রিটার্নটি নিরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর।
অনলাইনে সংশোধিত রিটার্ন
করদাতাদের জন্য অনলাইনে সংশোধিত রিটার্ন জমার সুবিধা চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ জন্য ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সংশোধন অপশন ব্যবহার করতে হবে। সংশোধনী রিটার্নে যদি করের পরিমাণ বাড়ে, তাহলে নিয়ম অনুসারে বাড়তি করসহ জরিমানা দিতে হবে।
যেসব করদাতা অনলাইনে মূল আয়কর রিটার্ন দাখিলের পর ভুলত্রুটির কারণে অনলাইনে সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে চান, তাঁদের জন্য অনলাইনে সংশোধিত আয়কর রিটার্ন দাখিলের ব্যবস্থা চালু আছে। যাঁরা সংশোধন অপশন ব্যবহারের জন্য অনলাইনে প্রবেশ করবেন, তাঁদের অবশ্যই সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
আয়কর দিবস–পরবর্তী সময়েও বছরব্যাপী অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার সুবিধাও চালু আছে।
সরাসরি রিটার্ন দাখিল
আয়কর আইনে কর কার্যালয়ে গিয়েও ভুল সংশোধনী রিটার্ন দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। সর্বজনীন স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে কোনো করদাতা রিটার্ন দেওয়ার পর যদি দেখেন যে অনিচ্ছাকৃত ভুলে রিটার্নে কম আয় দেখিয়েছেন, কম কর পরিশোধ করেছেন কিংবা বেশি কর রেয়াত, কর অব্যাহতি বা অন্য কোনো কারণে কম কর পরিশোধ করেছেন। হিসাবের ভুলেও এমন হতে পারে। তাহলে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে এই রিটার্ন জমা দিতে হয়।
আপনি ভুল সংশোধনী রিটার্ন জমার পর উপকর কমিশনার যদি সন্তুষ্ট হন যে সব শর্ত পূরণ করা হয়েছে, তাহলে তিনি রিটার্নটি গ্রহণ করবেন। প্রাপ্তি স্বীকার রসিদ দেবেন।