হাইকোর্টের রুল: মেঘনা আলমকে কেন মুক্তি নয়
Published: 13th, April 2025 GMT
বিশেষ ক্ষমতা আইনে মডেল মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তারের আাদেশ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং কেন তার মুক্তির নির্দেশ দেওয়া হবে না; তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রিট আবেদনটি করেন মেঘনা আলমের বাবা বদরুল আলম। তার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন।
গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া কেন অসাংবিধানিক ও মৌলিক মানবাধিকারের পরিপন্থি নয়; সেটিও জানতে রুল দিয়েছেন আদালত।
আরো পড়ুন:
ঢাবির ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ স্থগিত
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মূল ভবন উদ্বোধন
রবিবার (১৩ এপ্রিল) বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি তামান্না রহমান খালিদির হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি গ্রহণ করে এই রুল দিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, আইজিপিকে রুলের জবাব দিতে দুই সপ্তাহ সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
রিটকারীর আইনজীবীরা বলছেন, মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে যদি কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, তাহলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু বিশেষ ক্ষমতা আইনে কেন আটকাদেশ দেওয়া হলো? তারা মনে করছেন, একটি অস্পষ্ট অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে তাকে আটকের আদেশ দেওয়া হয়েছে, যে কারণে তার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে গত বুধবার (৯ এপ্রিল) ফেসবুকে লাইভ করার মধ্যেই মেঘনা আলমকে আটক করা হয়। লাইভে তিনি বলছিলেন, তার বাসার ‘দরজা ভেঙে পুলিশ পরিচয়ধারীরা’ ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করছে। অবশ্য শেষপর্যন্ত তাকে আটক করা হয়। তারপর তার লাইভ বন্ধ হয়ে যায়। ১২ মিনিটের বেশি সময় ধরে চলা ওই লাইভ মেঘনার প্রোফাইল থেকে মুছে যায়। তবে এর আগেই ফেসবুকে সেই লাইভের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাবেক এই মিস আর্থ বাংলাদেশকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে তোলে ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশ। ডিবির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মহানগর হাকিম মো.
মডেল মেঘনাকে গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া নিয়ে সমালোচনার মধ্যে শনিবার ডিএমপির ডিবি প্রধান রেজাউল করিম মল্লিককে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রবিবার সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল স্বীকার করেন, মেঘনা আলমের আটকের প্রক্রিয়া সঠিক ছিল না।
তিনি জানান, মেঘনা আলমের ব্যাপারে কিছু তদন্ত পুলিশ করছে। তার বিরুদ্ধে কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে যে প্রক্রিয়ায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেটা সঠিক হয়নি। তার যদি কোনো অপরাধ থাকে, সেই অপরাধের পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
মিস আর্থ বাংলাদেশ প্রতিযোগিতার ২০২০ সালের আসরে জয়ী হন মডেল ও মিস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মেঘনা আলম।
ঢাকা/মামুন/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ ষ ক ষমত আলম র
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।