ওয়াক্ফ আইন ঘিরে উত্তাল মুর্শিদাবাদ
Published: 13th, April 2025 GMT
ওয়াক্ফ (সংশোধনী) আইন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার ধূলিয়ান, সুতি, জঙ্গিপুরসহ একাধিক এলাকা। ইতিমধ্যে সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত তিনজন, গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও তিনজন। গতকাল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে জেলাজুড়ে নামানো হয়েছে কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী। দুর্ঘটনাস্থলে তারা টহল বা রুট মার্চ শুরু করেছে।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন সমসেরগঞ্জে হর গোবিন্দ দাস (৭২), তাঁর ছেলে চন্দন দাস (৪০) এবং সুতির এজাজ আহমেদ সেখ (১৭)। হর গোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসকে বাড়ি থেকে টেনে বের করে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। সুতির এজাজ আহমেদ সেখ (১৭) বিক্ষোভে অংশ নিয়ে পুলিশের গুলিতে আহত হন এবং পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
আজ সকাল থেকে মুর্শিদাবাদের সমসেরগঞ্জ, সুতি, ধূলিয়ানে আধা সামরিক বাহিনীর টহলদারি শুরু হয়েছে। পুরুলিয়ার বিজেপি সংসদ সদস্য জ্যোতির্ময় সিং মাহাত এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন (এএফএসপিএ) প্রয়োগ এবং মুর্শিদাবাদকে উপদ্রুত এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়ে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। মুর্শিদাবাদে বন্ধ রয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা।
এসব ঘটনার জেরে বিক্ষোভের মুখে পড়েন তৃণমূলের ফারাক্কা আসনের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম ও জঙ্গিপুরের সংসদ সদস্য খলিলুর রহমান। এ সময় তাঁদের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। রাজ্যের বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী এই সহিংসতার জন্য জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলাকে দায়ী করেন। তিনি এ রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবিও তোলেন। তিনি আরও বলেন, মুর্শিদাবাদের এই হামলায় ৩৫টি পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে। পুড়েছে সরকারি বাস থেকে বেসরকারি বহু যানবাহন।
ধূলিয়ান ও সুতিতে একের পর এক বাড়িঘর, দোকানপাটে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে একটি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা কেন্দ্রে। রেহাই পায়নি শপিং মলও। বিভিন্ন বাড়িঘরের ছাদ থেকে বিএসএফ মজুত করা পাথর উদ্ধার করেছে।
অন্যদিকে তৃণমূল সংসদ সদস্য ও দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বাংলাকে অশান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
রাজ্য পুলিশের আইজি রাজীব কুমার শান্ত থাকার আবেদন জানিয়ে বলেছেন, কোনো গুন্ডাবাজিকে বরদাশত করা হবে না।
এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের সব পক্ষকে সংযত থাকার বার্তা দিয়েছেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হাত-পা বাঁধা ও কম্বলে প্যাঁচানো মরদেহ উদ্ধার
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার একটি ডোবা থেকে হাত-পা বাঁধা ও কম্বল দিয়ে প্যাঁচানো অবস্থায় এক অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকাল ৭টার দিকে সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের রতনপুর আনসার ক্যাম্পের পাশের ডোবা থেকে মরদেহটি উদ্ধার হয়।
আরো পড়ুন:
উত্তর বাড্ডায় বদ্ধ ঘরে মিলল নারী-পুরুষের মরদেহ
নিখোঁজের ১২ দিন পর কৃষকের গলিত মরদেহ উদ্ধার
মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম মজিবর মাঝি (৪৫)। তিনি বরিশাল জেলার হিজলা থানার বাসিন্দা। মুন্সীগঞ্জ সদরের রামপাল ইউনিয়নের শান্তিনগর এলাকায় থেকে তিনি অটোরিকশা চালাতেন। গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) থেকে তার সন্ধান পাচ্ছিলেন না স্বজনরা।
নিহত মজিবরের ছেলে মো. রাসেল বলেন, “বাবা মুন্সীগঞ্জে একা থাকতেন। তিনি স্থানীয় একটি গ্যারেজ থেকে ভাড়ায় অটোরিকশাটি চালাতেন। গত শুক্রবার মাওয়া যাওয়ার কথা বলে তিনি বের হন। এরপর আর ফেরেননি। গতকাল গ্যারেজ মালিক ফোন দিয়ে জানালে, আমি থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। আজ সকালে বাবার মরদেহ ডোবায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়। অটোরিকশাটির কোনো হদিস নেই।”
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম সাইফুল আলম বলেন, “মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”
ঢাকা/রতন/মাসুদ