সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হলো বাংলা নববর্ষ ১৪৩২। এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে সাধারণ প্রবাসীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।

নববর্ষের এই আনন্দঘন আয়োজনে দুবাইয়ের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ছুটে আসেন। কনস্যুলেট প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে ওঠে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের পদচারণায়।

অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেল মুহাম্মদ রাশেদুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রদূত তারেক আহমদ।

আরো পড়ুন:

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রবাসীর মৃত্যু

নৌবাহিনী প্রধান-মালদ্বীপ হাইকমিশনার সাক্ষাৎ

কনস্যুলেটের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত হয়ে আগত অতিথিদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। নারী, পুরুষ ও শিশুরা রঙিন পোশাকে এবং বাঙালি সংস্কৃতির বিভিন্ন উপাদানে নিজেদের সাজিয়ে তোলেন। স্থানীয় বাংলাদেশি শিল্পীরা পরিবেশন করেন মনোমুগ্ধকর গান, নাচ, কবিতা আবৃত্তি, বাউল গান ও লোকনৃত্য ও পুঁথি পাঠ দর্শকদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে।

অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেল মুহাম্মদ রাশেদুজ্জামান তার বক্তব্যে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান এবং প্রবাসে দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধরে রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “এই ধরনের আয়োজন প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে একাত্মতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ বৃদ্ধি করে এবং নতুন প্রজন্মকে আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত করে তোলে।”

বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে আগত বহুসংখ্যক প্রবাসী দেশীয় সংস্কৃতির এই বর্ণাঢ্য উৎসবে শামিল হয়ে আনন্দ উপভোগ করেন। এই আয়োজন প্রবাসে যেন এক টুকরো বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি তৈরি করেছিল। কনস্যুলেটের এই উদ্যোগ প্রবাসীদের মধ্যে নতুন করে আনন্দ ও উদ্দীপনা সঞ্চার করেছে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হওয়ায় আয়োজকরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

ঢাকা/হাসান/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রব স কনস য ল ট অন ষ ঠ ন প রব স

এছাড়াও পড়ুন:

ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।

কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।

এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।

অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।

একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।

এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।

যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা