আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে ফিফায় নালিশ করতে পারে ব্রাজিল
Published: 15th, April 2025 GMT
বুয়েনস এইরেসে গত মার্চে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে ব্রাজিলকে ৪–১ গোলে বিধ্বস্ত করে আর্জেন্টিনা। সেদিন মাঠে আলভারেজ–ফার্নান্দেজদের কাছে ভিনিসিয়ুস–রাফিনিয়ারা অপদস্ত তো হয়েছেনই, মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে যাওয়া ব্রাজিল সমর্থকেরাও অপমানিত হন।
ব্রাজিলিয়ান সমর্থকদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ম্যাচ চলাকালে আর্জেন্টাইনরা তাঁদের উদ্দেশ করে ঘৃণা ও বর্ণবাদী স্লোগান দিয়েছেন। সমর্থকদের দাবি আমলে নিয়ে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ) আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) বিরুদ্ধে ফিফায় অভিযোগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস। ব্রাজিলিয়ানদের এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা দল।
টিওয়াইসি স্পোর্টসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেদিন ম্যাচের সময় ব্রাজিলিয়ান সমর্থকেরা স্টেডিয়ামে এক আর্জেন্টাইন সমর্থককে বানরের অনুকরণ করতে এবং নানা ধরনের অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে দেখেছেন। এ ধরনের আচরণ ও অঙ্গভঙ্গির ভিডিও ফুটেজও ব্রাজিলিয়ানদের কাছে আছে। সিবিএফের কর্মকর্তারা সেটির ওপর ভিত্তি করে ফিফার কাছে অভিযোগ করার কথা ভাবছেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা একাধিকবার স্টেডিয়ামে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে চড়াও পর্যন্ত হতে হয়েছে। এতে রক্তপাতের মতো ঘটনাও ঘটেছে। দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা (কনমেবল) এ ধরনের ঘটনায় অনেক দিন হলো কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তবু চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে রেষারেষি ঠেকানো যাচ্ছে না।
ফিফার কাছে সিবিএফ অভিযোগ জানালেই এএফএকে নতুন করে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। গত বছর নিজেদের মাঠে ইকুয়েডর ও উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের সময় আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা বৈষম্যমূলক স্লোগান দেওয়ায় এএফএকে শাস্তি দেয় ফিফার শৃঙ্খলা কমিটি।
শাস্তিস্বরূপ মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামে ধারণক্ষমতার ৭৫ শতাংশ দর্শক নিয়ে আর্জেন্টিনাকে খেলতে হয়। একই সঙ্গে ফিফা এই বলে এএফএকে সতর্কবার্তা দেয় যে এ ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে দর্শক ধারণক্ষমতা ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে।
দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ থেকে সবার আগে ২০২৬ বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে আর্জেন্টিনা। নিজেদের মাঠে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের পরের ম্যাচ আগামী ৯ জুন কলম্বিয়ার বিপক্ষে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন ধরন র
এছাড়াও পড়ুন:
আরপিওর বিধানের বৈধতার রায় রিভিউর জন্য হলফনামার অনুমতি
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বিধানের বৈধতা দিয়ে ১৪ বছর আগে রায় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদনের জন্য হলফনামার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন দুজন আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আজ সোমবার হলফনামা করার অনুমতি দিয়েছেন।
আবেদনকারী সাত ব্যক্তি হলেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন, মেজর (অব.) এস এম হারুনুর রশীদ, কাজী জাহেদুল ইসলাম, আইনজীবী এস এম আজমল হোসেন, মেজর (অব.) নিয়াজ আহমেদ জাবের, মেজর (অব.) মো. জিয়াউল আহসান ও সালাহ উদ্দিন।
আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ মামলায় আবেদনকারীরা পক্ষ ছিলেন না। যে কারণে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন দায়েরের জন্য হলফনামা করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন তাঁরা। চেম্বার আদালত হলফনামা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন। আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে শিগগিরই রিভিউ আবেদন করা হবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২(৩ক)(ক) বিধান অনুযায়ী নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী ইতিপূর্বে জাতীয় সংসদের কোনো নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকলে ওই তালিকা প্রদানের প্রয়োজন হবে না।
আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ঢাকার একটি আসন থেকে ২০০৭ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র নেন। পরে নির্বাচনের ওই তারিখ পিছিয়ে যায়। অন্যদিকে ২০০৮ সালে আরপিও দফা ১২(৩ক)–তে সংশোধনী আনা হয়। এই বিধান সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদ ও আরপিওর ১২(১) ধারার পরিপন্থী উল্লেখ করে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী ২০১০ সালে হাইকোর্ট রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট রুল ডিসচার্জ (খারিজ) করে রায় দেন। দফা (৩ক) সংবিধান পরিপন্থী নয় বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রিট আবেদনকারী। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি লিভ টু আপিল খারিজ করে রায় দেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত আরপিওর ১২(৩ক)–তে বেআইনি কিছু পাননি বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে দুই আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি আবেদন করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে ভোটারের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। ভোটার কোন প্রার্থীকে ভোট দেবেন বা দেবেন না, এটি একান্তই তাঁর চিন্তা ও মতপ্রকাশের অধিকার। সিক্রেট ব্যালটে হামলা হলে ভোট বাতিলও হয়। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে প্রার্থীর যোগ্যতা নির্ধারণ করা আছে। রাজনৈতিক দল হলে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন লাগবে না, অথচ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে গেলে লাগবে অর্থাৎ একই মনোনয়নপত্র ঘিরে দ্বৈত বিধান। ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন থাকার ওই বিধানের মাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা সংবিধান সমর্থন করে না এবং ভোটারের গোপনীয়তারও লঙ্ঘন—এসব যুক্তি তুলে ধরে আবেদনটি করা হয়।