ঘরের মাঠে অবসর নেওয়াই বড় ইচ্ছা: সাকিব
Published: 16th, April 2025 GMT
বাংলাদেশ জাতীয় দলের ‘নির্বাসিত’ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে দেশে এসে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না তিনি। দেশে বাইরের সিরিজেও তাকে রাখা হচ্ছে না জাতীয় দলে। তবে সাকিব এখনো স্বপ্ন দেখেন, জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পারবেন। দেশের মাটিতে অবসর নেওয়াই তার বড় ইচ্ছা বলে সংবাদ মাধ্যম ডেইলি সানকে সাক্ষাৎকারে বলেছেন বাঁ-হাতি এই স্পিনার।
সাকিব সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি মনে করি, বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলার সুযোগ আমার প্রাপ্য। অধিকাংশ মানুষই চায় আমি আরও কিছুদিন ক্রিকেট খেলি এবং দেশের মাটিতে অবসর নিই। আমিও মনে করি, আরও এক দুই বছর খেলে যাওয়ার সামর্থ্য আমার আছে। সেজন্য সর্বোচ্চ মহলের সদিচ্ছা প্রয়োজন।’
সাকিব জানান, বিসিবির প্রতি তার কোন অভিযোগ নেই। বোর্ডের সীমাবন্ধতা আছে বলেই মনে করেন তিনি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে মামলা ও তদন্তে সহায়তা করতে তিনি প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন। নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেলে দেশে ফিরতেও আপত্তি নেই বলে উল্লেখ করেছেন বাঁ-হাতি এই স্পিন অলরাউন্ডার।
তিনি বলেন, ‘আমি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেলে দেশে ফিরতে চাই। আমার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করায় খুবই হতাশ হয়েছিলাম। পরে জানতে পারি, যিনি মামলা করেছেন তিনি আমার নামও জানেন না। মানুষ কত নিচে নামতে পারে এটা ভেবেই আমি অবাক হয়েছি। এখন মনে হচ্ছে আমিই নির্বোধ ছিলাম, ভেবেছিলাম পৃথিবীটা বোধহয় সহজ। এখন বুঝতে পারছি আসলে এটা কত জটিল।’
সাকিব বাংলাদেশের ক্রিকেটের খোঁজ-খবর রাখেন বলেও উল্লেখ করেছেন। কিছুদিন আগে ডিপিএলে যে ‘স্বেচ্ছা আউটের’ অভিযোগ উঠেছে এ সম্পর্কে অবগত তিনি। বিসিবির ‘স্বেচ্ছা আউট’ বিষয়টি তদন্তে ক্যামেরা লাগিয়ে ম্যাচ পরিস্থিতির মতো অভিনয় করিয়ে প্রমাণ পাওয়ার চেষ্টা করেছে। সাকিব বিষয়টিকে হাস্যকর হিসেবে উল্লখ করেছেন। তার মতে, ‘আউটের ভিডিও দেখেই তো বোঝা যায় কী হয়েছে। অভিনয় করানোর কী আছে। এতোদিন ক্রিকেট খেলার পরে মনে প্রশ্ন জাগে, আমি উন্মাদ নাকি তারা?’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ক ব আল হ স ন কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
৩০ বছরের শিক্ষকতা জীবনের ইতি টানলেন মুজিবুর রহমান
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জাংগালিয়া ইউনিয়নের বরাইয়া গ্রামে জন্ম। সেই গ্রামেরই শিশুদের হাতে ধরে ছড়িয়েছেন শিক্ষার আলো। দীর্ঘ তিন দশকের শিক্ষকতা জীবন শেষে অবসরে গেলেন বরাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম মুজিবুর রহমান (৫৯)।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে অনুষ্ঠিত হয় বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) এ টি এম কামরুল ইসলাম। এ সময় সাবেক সভাপতি, শিক্ষকবৃন্দ ও এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমানের নিষ্ঠা, সততা ও মানবিক অবদানের কথা স্মরণ করে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠান শেষে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সহকর্মী ও অভিভাবকদের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও উপহার প্রদান করা হয়। পরে সুসজ্জিত গাড়িতে তাকে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে দেওয়া হয় সম্মানজনক বিদায়।
মুজিবুর রহমান তার প্রাথমিক শিক্ষা বরাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই শুরু করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যান বিষয়ে সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রি এবং ১৯৯০ সালে একই বিষয়ে এমএসসি সম্পন্ন করেন। উচ্চ শিক্ষা শেষে তিনি সরকারি একাধিক চাকরির সুযোগ পেলেও তা গ্রহণ করেননি। কারণ, তার বাবার ইচ্ছা ছিল—শিক্ষক হয়েই জীবন শুরু এবং শেষ করতে হবে। বাবার সেই কথাকে আজীবন লালন করেছেন তিনি।
১৯৯৫ সালের ১২ জুন পুনসহি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন মুজিবুর রহমান। এরপর দেওতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই বছর শিক্ষকতা শেষে ২০০৪ সালের ২৭ এপ্রিল নিজ গ্রাম বরাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। টানা ২২ বছর দায়িত্ব পালন শেষে সেখান থেকেই অবসরে গেলেন।
বিদায়ী শিক্ষক মুজিবুর রহমান বলেন, “আমি শিক্ষকতা পেশাকে কখনো চাকরি মনে করিনি। এটা ছিল আমার জীবনের ভালোবাসা ও দায়িত্ব। আজ বিদায় নিচ্ছি, কিন্তু হৃদয়ে এই বিদ্যালয় চিরদিন অমলিন থাকবে।”
ঢাকা/রফিক/রাজীব