ময়মনসিংহে বাবা-ছেলে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামি এক দিনের রিমান্ডে
Published: 16th, April 2025 GMT
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায় বাবা-ছেলেকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামির এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শাহাদাত হোসেন শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডে নেওয়া দুই আসামি হলেন মোজাম্মেল হোসেন (৪৫) ও মো.
আদালতটির পুলিশ পরিদর্শক মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গ্রেপ্তার দুই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। পরে আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
গত রোববার দুপুরে ফুলবাড়িয়া উপজেলার নাওগাঁও ইউনিয়নের নাওগাঁও পশ্চিমপাড়া গ্রামে আবদুল গফুর ও তাঁর ১৫ বছর বয়সী কিশোর ছেলে মেহেদী হাসানকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গফুরের চাচাতো ভাই নাওগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান জড়িত বলে নিহত দুজনের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনায় নিহত গফুরের দ্বিতীয় স্ত্রী শিল্পী আক্তার বাদী হয়ে গত রোববার রাতে ফুলবাড়িয়া থানায় ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৬০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
আরও পড়ুনসালিসে না আসায় বাড়িতে গিয়ে বাবা-ছেলেকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা১৩ এপ্রিল ২০২৫ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রোকনুজ্জামান বলেন, হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তিন আসামির মধ্যে দুজনকে এক দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
পুলিশ জানায়, আবদুল গফুরের প্রতিবেশী প্রবাসী রাশেদ কিছুদিন আগে দেশে আসেন। কয়েক দিন আগে তাঁর ঘর থেকে কিছু কাগজ ও একটি মুঠোফোন চুরি হয়। এ ঘটনায় আবদুল গফুরের ছেলে মেহেদী হাসানকে অভিযুক্ত করে ১৩ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে সালিস বসানো হয়। রাশেদের বাড়ির সামনে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মঞ্জুরুল হকের নেতৃত্বে সালিসটি বসে। কিন্তু চুরির সঙ্গে মেহেদী জড়িত নন দাবি করে সালিসে যাননি বাবা-ছেলে।
আরও পড়ুনময়মনসিংহে সালিসে না যাওয়ায় বাবা-ছেলেকে হত্যার ঘটনায় ৮৭ জনের নামে মামলা১৪ এপ্রিল ২০২৫স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, সালিস বসার পর সেখান থেকে লোকজন গিয়ে আবদুল গফুরকে তাঁর ছেলেকে নিয়ে হাজির হতে বলেন। কিন্তু সালিসের ডাকে হাজির না হওয়ায় সেখানে থাকা লোকজন আবদুল গফুরের বাড়িতে গেলে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। এর জেরে আবদুল গফুরের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো শুরু করেন সালিসের লোকজন। এ সময় আবদুল গফুর ও তাঁর ছেলেকে রড দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে ঘটনাস্থলেই হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে ফুলবাড়িয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখান থেকে বাবা-ছেলের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়।
আরও পড়ুনময়মনসিংহে বাবা-ছেলেকে হত্যার পর মাজার ও বাড়ি ভাঙচুর, নেপথ্যে কী৬ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এক দ ন র র ম ন ড ঘটন য় ল কজন
এছাড়াও পড়ুন:
কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে টঙ্গীতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে গাজীপুরের টঙ্গীতে বিক্ষোভ করেছেন যমুনা অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে মিলগেট এলাকায় প্রথমে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে পরে আঞ্চলিক সড়কে তাঁরা বিক্ষোভ করেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিকেরা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করলে তাঁদের সড়ক থেকে সরে যেতে বলা হলে তাঁরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পরে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
কারখানার শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, টঙ্গীর যমুনা অ্যাপারেলস কারখানায় ২২ এপ্রিল বিশৃঙ্খলাসহ নানা অভিযোগে কারখানার ১১৪ শ্রমিককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয় কর্তৃপক্ষ। শ্রম আইন অনুযায়ী তাঁদের সব পাওনা পরিশোধও করা হয়। শ্রমিক অসন্তোষ এড়াতে ২৩, ২৪ ও ২৫ এপ্রিল কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে ২৬ এপ্রিল কারখানা খুলে দেওয়া হলে সকালে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেন। এরপর ওই দিন চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে কারখানার ভেতরে কর্মবিরতি শুরু করেন তাঁরা। এর পর থেকে শ্রমিক অসন্তোষ এড়াতে কারখানা বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
আজ সকালে বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়া ও ছাঁটাই করা শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকেরা। প্রথমে তাঁরা ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিলে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। পরে তাঁরা আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় শিল্প পুলিশ, থানা–পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের ধাওয়া ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
কারখানার শ্রমিকদের অভিযোগ, ১০ দিন আগে কারখানার কোয়ালিটি সেকশনের শ্রমিক মো. হুমায়ুন দুই দিনের ছুটি চেয়েছিলেন। ছুটি না পেয়ে হুমায়ুন নিজেই অনুপস্থিত থাকেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কারখানার অ্যাডমিন অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান তাঁর সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান এবং হুমায়ুনকে মারধর ও গুম করার হুমকি দেন। একপর্যায়ে হুমায়ুনকে কারখানার নিচতলার গুদামঘরের বাথরুমে আটকে রাখা হয়। চার ঘণ্টা পর হুমায়ুন মুঠোফোনে সহকর্মীদের খবর দিলে তাঁরা তাঁকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনার জেরে কারখানা কর্তৃপক্ষ ১১৪ শ্রমিককে ছাঁটাই করে। শ্রমিক ছাঁটাই, গুমের হুমকি ও বহিরাগতদের দিয়ে শ্রমিকদের ওপর হামলার অভিযোগে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা। এ সময় কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানানো হয়।