মোটরসাইকেল ওয়াশে ব্যবহৃত যন্ত্রের সাহায্যে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে চার বছরের শিশু আবুবক্কর সিদ্দিককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার এই হৃদয়বিদারক ও অমানবিক ঘটনাটি ঘটে রাজধানীর মিরপুর বাউনিয়াবাদ এলাকায়। এ ঘটনায় নিহতের মা আয়শা বেগম পল্লবী থানায় ৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় রাজু (২০), সূজন (৩৬), এক কিশোর ও অজ্ঞাতপরিচয় একজনকে আসামি করা হয়েছে।  

শিশু আবুবক্কর তার ১১ বছরের বড় ভাই জিহাদ ও মায়ের সঙ্গে মিরপুর বাউনিয়াবাদের পোড়াবস্তি এলাকায় থাকতো। মা আয়শা বেগম একটি গার্মেন্টসে কাজ করেন। বাবা মো.

জাবেদ বাসচালক। তিনি স্ত্রীর সঙ্গে থাকেন না। জিহাদ বেড়িবাদ এলাকায় মো. রাতুল ও সূজনের বিসমিল্লাহ হোন্ডা গ্যারেজে কাজ করে। 

ঘটনার দিন দুপুর ৩টার দিকে বড় ভাইয়ের সঙ্গে গ্যারেজে যায় আবুবক্কর। মামলার এজাহার ও পরিবারের বর্ণনা মতে, ওই সময় জিহাদকে রুটি-কলা আনতে পাঠিয়ে শিশু আবুবক্করের
পায়ুপথে মোটরসাইকেল পরিষ্কার করার পাইপ দিয়ে বাতাস ঢোকান অভিযুক্তরা। জিহাদ এসে দেখে তার ভাইয়ের পায়ুপথ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে, আর সে বমি করছে। জিহাদ উপস্থিত এক কিশোর, রাজু ও সূজনের কাছে জানতে চাইলে তারা ঘটনা স্বীকার করেন। তারা বলেন, আবুবক্কর নিজেই পায়ুপথে হাওয়ার মেশিন দিয়ে বাতাস ঢুকিয়েছে। এ সময় গ্যারেজের আরেক মালিক রাতুল উপস্থিত ছিলেন না। 

পরে জিহাদ বাড়িতে এসে ঘটনা সবাইকে জানালে আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীরা আবুবক্করকে প্রথমে মিরপুরে একটি ক্লিনিকে, পরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। স্থানীয়রা অভিযুক্ত কিশোরকে ধরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন। বাকিরা পলাতক।

বুধবার সকালে পল্লবী থানায় গিয়ে দেখা যায়, সিঁড়িতে বসে আবুবক্করের মা ছেলে জিহাদকে নিয়ে কাদঁছেন। তখনো হাসপাতাল থেকে আবুবক্করের লাশ আসেনি। 

আয়শা বেগম বলেন, দুই ছেলেকে নিয়ে অনেক কষ্টে দিন পার করছিলাম। আমার মা চঁন্দ্র বানু ও বড় ছেলে জিহাদের কাছে ছোট ছেলেকে রেখে কাজে যেতাম। আমার ছোট্ট ছেলেকে কী নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হলো, আমি এর বিচার চাই। 

নিহতের নানি চঁন্দ্র বানু বলেন, দুই ছেলেকে নিয়ে আমার মেয়ে অনেক কষ্ট করছে। ভিক্ষা করে পর্যন্ত ছেলেদের খাইয়েছে। সেই বুকের ধন আজ কোথায় গেল।

পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত কিশোরকে কোর্টে তোলা হয়েছে। শিশু বলে তার বিচার শিশু আইনের আওতায় হবে। অন্য আসামিরা পালাতক।

ওসি বলেন, প্রথামিক তদন্তে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে। অভিযোগপত্র ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে আরও নিশ্চিত হওয়া যাবে। 

নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ঘটনাস্থলে সিসি ক্যামেরা না থাকলেও আশপাশের সিসি ক্যামেরা থেকে সংশ্লিষ্ট কিছু ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। এখন বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হত য প য় পথ

এছাড়াও পড়ুন:

বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ও কো চেয়ারম্যানের সম্পদ জব্দে যুক্তরাজ্যে চিঠি দিয়েছে দুদক

বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়াত সোবহান (সানভীর) ও কো–চেয়ারম্যান সাদাত সোবহানের সম্পদ জব্দে যুক্তরাজ্যে চিঠি দিয়েছে দুদক।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনা একটি জটিল প্রক্রিয়া। তবে আমরা চেষ্টা করছি। আমাদের আদালতের পাশাপাশি সে দেশের আদালতে যদি আমরা প্রমাণ করতে পারি, তাহলে এসব সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।’

এ ছাড়া সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আদনান ইমামের সম্পদ জব্দে চিঠি দিয়েছে দুদক।

সংবাদ সম্মেলনে টিউলিপ সিদ্দিকের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, ‘টিউলিপ সিদ্দিক যতই বলুক তিনি ব্রিটিশ নাগরিক, আমাদের কাগজপত্রে তিনি বাংলাদেশি নাগরিক। আমরা আমাদের নাগরিকের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি। টিউলিপ যদি নির্দোষ হন, তাহলে তাঁর মন্ত্রিত্ব গেল কেন? তিনি কেন সরে গেলেন? তাঁর আইনজীবী আমাদের কাছে কেন চিঠি লিখলেন।’

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক। খালা শেখ হাসিনার শাসনামলে অবৈধভাবে জমি গ্রহণের অভিযোগ টিউলিপের বিরুদ্ধে এনেছে দুদক। যুক্তরাজ্যের সাবেক ট্রেজারি মিনিস্টার টিউলিপ তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের ‘রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ চালানোর অভিযোগ করেছেন টিউলিপ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ