গাজায় এক মাসে ৫ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে ইসরায়েল
Published: 17th, April 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নতুন করে আরও প্রায় পাঁচ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে ইসরায়েল। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘ বলছে, গত ১৮ মার্চ হামাসের সঙ্গে সই হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দেয় ইসরায়েল। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ গাজাবাসী নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্তজ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর দেশ এখন ‘সুষ্পষ্ট নীতি’ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সেটা হলো হামাসকে চাপে রাখার ‘হাতিয়ার’ হিসেবে গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তাসামগ্রী প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ রাখা।
আরও পড়ুনইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব কেন নাকচ করল হামাস২০ ঘণ্টা আগেছয় সপ্তাহ ধরে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে কোনো মানবিক সহায়তাসামগ্রী ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। এটা ইসরায়েলের পক্ষ থেকে সবচেয়ে দীর্ঘ অবরোধ আরোপের ঘটনা।
সেই সঙ্গে গাজাবাসীর ওপর দমন–পীড়ন জোরদার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রতিদিনই নতুন নতুন হামলা চালানো হচ্ছে। গাজার চিকিৎসা সূত্রের বরাতে আল-জাজিরা জানিয়েছে, গতকাল বুধবার সকালের দিকেই ইসরায়েলি হামলায় সেখানে অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছেন।
হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য, ১৮ মাস ধরে চলা যুদ্ধে গাজা উপত্যকায় নারী ও শিশু মিলিয়ে ৫১ হাজার ২৫ জন নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা ১ লাখ ১৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুনগাজায় নিহত ৫১ হাজার ছাড়াল ১৫ এপ্রিল ২০২৫এর আগে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামাস হামলা চালায়। ওই দিন থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। হামাসের ওই হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয়েছেন বলে খবর দেয় ইসরায়েল সরকার। বন্দী করে গাজায় নিয়ে যাওয়ায় হয় ২৫১ জনকে।
আরও পড়ুনগাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধ ১৭ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত হয় ছ ন ইসর য় ল আরও প
এছাড়াও পড়ুন:
ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’
ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।
আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।
আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।
রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।
রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।
কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?
কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।
রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।
রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।
এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।
রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।