মেসির দাবি প্রতিনিয়ত মান বাড়ছে মেজর লিগের
Published: 18th, April 2025 GMT
লিওনেল মেসি ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর সারা পৃথিবীর ফুটবলপ্রেমীদের নজরে এসেছে মেজর লিগ সকার (এমএসএস)। আর্জেন্টাইন মহাতারকা বলেছেন, এমএলএসে প্রতিনিয়ত মান উন্নত হচ্ছে, বিশেষ করে বিদেশি তরুণ খেলোয়াড়দের আগমনের ফলে। মেসি আরো দাবি করেন, ২০২৩ সালের গ্রীষ্মে দক্ষিণ ফ্লোরিডার এই ক্লাবে যোগ দেওয়ার পর এটাই তার সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ মৌসুম।
এক সাক্ষাৎকারে মেসি বলেন, “এটা খুবই শারীরিক একটি লিগ, অনেক তরুণ খেলোয়াড় আছে যারা তাদের দুর্বলতাগুলো শারীরিক সক্ষমতা দিয়ে কাটিয়ে উঠছে। দেখতে মনে না হলেও, এখানে দলগুলো অনেক দৌড়ায়। অনেক ম্যাচই হয় এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে চলা। বিশেষ করে শেষ মুহূর্তগুলোতে, যখন মাঠে ফাঁকা জায়গা থাকে। আমি মনে করি, এটা এমন এক লিগ যেখানে দলগুলো ক্রমশ উন্নতি করছে।”
ইন্টার মায়ামি ২০২৫ মৌসুমের আগেই দলকে আরও সমৃদ্ধ করতে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে বেশ কয়েকজন তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড়কে সই করিয়েছে। দলে আগেই ছিলেন লুইস সুয়ারেস, সার্জিও বুস্কেটস, জর্দি আলবা এবং মেসি।
আরো পড়ুন:
নেইমারের সান্তোসে ফেরার পথে মেসির পুরনো কোচ
বার্সেলোনা নয়, মেসি থাকছেন মায়ামিতেই
এমএলএসের অন্যান্য দলগুলোও মানসম্মত খেলোয়াড় দলে নিয়েছে। সান ডিয়েগো এফসি সই করিয়েছে হিরভিং লোজানো, উইলফ্রেড জাহা গেছেন শার্লট এফসিতে, এবং ইমানুয়েল লাটে লাথ ও মিগুয়েল আলমিরন যোগ দিয়েছেন আটলান্টা ইউনাইটেডে।
“এই মৌসুমে অনেক দল শক্তিশালী হয়েছে, কারণ তারা অনেক বিদেশি খেলোয়াড় দলে নিয়েছে”- মেসি বলেন। তবে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক স্বীকার করেছেন, লিগের কিছু রোস্টার সীমাবদ্ধতা উন্নয়নের পথে ছোটখাটো বাধা হিসেবে কাজ করছে। মেসি বলেন, “আমি মনে করি, যদি লিগ আরও বেশি খেলোয়াড় আনার অনুমতি দিত; তাহলে এটি (এমএলএস) অনেক দ্রুত এগিয়ে যেত।”
এমএলএস একটি নির্দিষ্ট রোস্টার কাঠামো অনুসরণ করে, যেখানে সর্বোচ্চ তিনজন মনোনীত ফুটবলার রাখা যায় এবং একটি কঠোর বেতন সীমা আছে, যা ট্রান্সফার উইন্ডোয় দল গঠনে জেনারেল ম্যানেজার ও স্পোর্টিং ডিরেক্টরদের সীমিত করে দেয়। এমএলএস ইউরোপের প্রচলিত নিয়মগুলো অনুসরণ করে না, যার ফলে আরও বেশি বিদেশি খেলোয়াড়ের আগমন এবং লিগের দ্রুত বিকাশ ব্যাহত হয়।
সাবেক ইন্টার মায়ামি কোচ জেরার্দো মার্টিনো একই ধরনের কথা বলেছিলেন, যখন তার দল ২০২৪ কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপ কোয়ার্টার ফাইনালে মন্তেররের কাছে হেরে বিদায় নেয়। মার্টিনো বলেন, “যতদিন এমএলএস কিছু নিয়ম শিথিল না করবে, যেন আমরা বড় স্কোয়াড তৈরি করতে পারি ইনজুরি ও সাসপেনশনের সময়ের জন্য, ততদিন মেক্সিকান দলগুলোরই সুবিধা থাকবে।”
তবুও, মেসি ও ইন্টার মায়ামি নিয়মিতভাবে এমএলএস ও কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপ প্রতিযোগিতায় লড়াই করে যাচ্ছে। হেরনসরা বর্তমানে ইস্টার্ন কনফারেন্সে চতুর্থ স্থানে আছে এবং ইতিহাস গড়ে সেমিফাইনালে উঠেছে, এলএএফসিকে অ্যাগ্রিগেটে ৩-২ গোলে হারিয়ে।
মেসি বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে সময় কাটিয়ে ভালোই উপভোগ করছেন, কারণ লিগের মান বাড়ছে এবং ইন্টার মায়ামি ধীরে ধীরে আমেরিকান ফুটবলের বিভিন্ন দিক জয় করছে। “সত্যি কথা বলতে, এখানে থাকতে আমার ভালো লাগছে। যদিও অনেক ভ্রমণ করতে হয়। কিন্তু এটা একটা উপভোগ করার মতো লিগ।”- মেসি।
ইন্টার মায়ামি শনিবার (১৯ এপ্রিল) দিবাগত রাতে ওহাইওতে হান্টিংটন ব্যাংক ফিল্ডে কলম্বাস ক্রুর মুখোমুখি হবে, এরপর এপ্রিল ২৪ তারিখে ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস কাপ সেমিফাইনালের প্রথম লেগ খেলতে কানাডা সফরে যাবে।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইন ট র ম য় ম দলগ ল
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।