৯ জুলাইয়ের আগে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ
Published: 19th, April 2025 GMT
বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বর্ধিত শুল্ক সমস্যার স্থায়ী সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিয়েছে ঢাকায় সফররত দেশটির প্রতিনিধি দল। আগামী ৯ জুলাই ওই শুল্ক আদেশের ওপর ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ শেষ হওয়ার আগেই এটি করার কথা বলেছেন তারা। মার্কিন উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল অ্যান চুলিক ও অ্যান্ড্রু হেরাপের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে এ পরামর্শ দেয়। গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকে প্রতিনিধি দল জানায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শুল্ক আদেশের ওপর ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ খুবই সীমিত সময়ের। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে এর মধ্যেই বাংলাদেশের সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
পররাষ্ট্র সচিব এ সময় শুল্ক স্থগিতে যুক্তরাষ্ট্রকে দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও বাণিজ্য উপদেষ্টার চিঠির কথা উল্লেখ করে জানান, অন্তর্বর্তী সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি মোকাবিলায় কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বিবেচনা করছে। তিনি প্রতিনিধি দলকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৯০ দিনের স্থগিতাদেশকে বিরতি হিসেবে বিবেচনা করে না বাংলাদেশ। পারস্পরিক স্বার্থে নতুন সংকট মোকাবিলার উপায় খুঁজে বের করতে অংশীদারদের সঙ্গে পরামর্শের মাধ্যমে সক্রিয়ভাবে এ সময় কাজে লাগানো হচ্ছে।
এ ছাড়া বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা হয়।
বাণিজ্যের পাশাপাশি বিনিয়োগ, উন্নয়ন সহযোগিতা, দুই দেশের জনগণের যোগাযোগ এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা বলেন তারা।
পররাষ্ট্র সচিব শ্রম মান উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত ১১টি সংস্কার কমিশনের সংস্কার উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। মার্কিন প্রতিনিধি দল এ সময় সরকারের সংস্কারের উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক বৈদেশিক সাহায্য প্রদানকারী সংস্থা ইউএসএআইডির তহবিল হ্রাসের বিষয়টি উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব সংস্থাটির স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে তহবিলের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেন। মার্কিন উন্নয়ন অর্থ করপোরেশনে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির জন্য সমর্থনও চান। এ বিষয়ে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন বলে জানায় মার্কিন প্রতিনিধি দল।
.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’