ভোলায় পাওয়া গ্যাস দিয়ে জেলাটির উন্নয়নসহ পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নে ইন্ট্রাকো কোম্পানির এলপিজি গ্যাসভর্তি একটি গাড়ি আটকে ভোলা-চরফ্যাশন মহাসড়কে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় ছাত্র-জনতা। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে প্রতিষ্ঠানটির গ্যাসভর্তি কাভার্ড ভ্যান আটকে দেয় ব-দ্বীপ ছাত্র কল্যাণ সংসদ।

বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিলেন ব–দ্বীপ ছাত্র কল্যাণ সংসদের সভাপতি রাহিম ইসলাম, নির্বাহী সদস্য মেহেদী হাসান, মো.

রুমন, মো রাজু, আসিফ, আরিফুর রহমান প্রমুখ। তাঁদের সঙ্গে বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে অন্য ছাত্ররাও যোগ দেন।

বক্তারা বলেন, ভোলার গ্যাসেই জেলার উন্নয়ন হোক। সেখানে পাওয়া গ্যাস জেলায় ব্যবহারের সুযোগ তৈরি এবং ইন্ট্রাকো লিমিটেডের সঙ্গে গ্যাস বিক্রয়ের চুক্তি বাতিল করতে হবে। এ ছাড়া জেলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণের দাবিও জানান তাঁরা।

এর আগে গতকাল সকালের দিকে ব-দ্বীপ ছাত্র সংসদের আহ্বানে সদর রোডে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বক্তারা বলেন, তাঁদের দাবি না মানলে আরও আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। ভোলা থেকে কোনো গ্যাস বের হতে দেবে না তাঁরা।

ভোলার গ্যাস রক্ষায় দক্ষিণাঞ্চলের নাগরিক আন্দোলনের আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক মোবাশ্বের উল্লাহ চৌধুরী বলেন, ভোলার ঘরে ঘরে গ্যাস চান তাঁরা। সেই সঙ্গে এই গ্যাস ব্যবহার করে জেলায় শিল্প-কলকারখানা চান, এই দাবিসহ ছয় দফা দাবিতে তিন বছর ধরে তাঁরা আন্দোলন করে আসছেন। এ আন্দোলন এখন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। সরকার বারবার গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে, অথচ ইন্ট্রাকোকে পানির দরে গ্যাস দিচ্ছে। সরকারের উচিত এ ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে করা অসম চুক্তিটি বাতিল করা।

ব-দ্বীপ ছাত্র কল্যাণ সংসদের আহ্বায়ক রাহিম ইসলাম বলেন, ‘ভোলার ২২ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে জেলায় কোনো মেডিকেল কলেজ স্থাপন হয়নি। যে হাসপাতাল আছে, তাতে কোনো চিকিৎসক নেই। ভোলায় মেডিকেল কলেজ না দিয়ে, গ্যাসভিত্তিক শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠা না করে, ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ না দিয়ে, ভোলা-বরিশাল সেতু বাস্তবায়ন না করে আমরা ভোলা থেকে গ্যাস নিতে দেব না।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে ৪টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মধ্যে চারটি আসনে বিএনপির দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছে বিএনপির হাইকমান্ড। শুধু নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি।  

সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায়  গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময় বিএনপির জাতীয় স্থানীয় কমিটির একাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির ঘোষিত প্রার্থী তালিকায়, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়া, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে নজরুল ইসলাম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ-৩ আজহরুল ইসলাম মান্নান এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ মাসুদুজ্জামান মাসুদ ধানের শীষ প্রতীকের সম্ভাব্য প্রার্থী।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে (সদর-বন্দর) মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন তিনবারের সংসদ সদস্য আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, সাবেক সহসভাপতি আতাউর রহমান মুকুল, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সবুর খান সেন্টু, বর্তমান সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু এবং বিএনপিপন্থী ব্যবসায়ী আবু জাফর আহমেদ বাবুল।

নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসনটি এখনো ফাঁকা রেখেছে দলটি। ধারণা করা হচ্ছে এ আসনটিতে গতবারের মতো জোটের প্রার্থী ছাড় পাবেন। তবে এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী শাহ্ আলম, জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী ভূঁইয়া, সদ্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীও রয়েছেন। 

নারায়ণগঞ্জ-৩ (সিদ্ধিরগঞ্জ-সোনারগাঁ) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম ও যুব উন্নয়নের সাবেক মহাপরিচালক এসএম ওলিউর রহমান আপেল।

নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খাঁন আঙ্গুর ও তার ভাতিজা বিএনপির সহঅর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন।

নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জে) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনির, মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন।

এদিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছর পর ২৩৮ আসনে আমাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করছি। আমাদের সঙ্গে যারা আন্দোলন করেছেন, তারা যে সমস্ত আসনে আগ্রহী সে সমস্ত আসনে প্রার্থী দেই। আমরা আলোচনার মাধ্যমে প্রার্থী ঘোষণা করবো। এটা আমাদের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা, এর মধ্যেই পরিবর্তন হতে পারে।

বিশেষ করে, আমাদের শরিক দলগুলোর সাথে আলোচনা এবং স্থায়ী কমিটি যদি মনে করে কোনো আসনে পরিবর্তন আনবে, সেক্ষেত্রে নিয়ম মেনে পরিবর্তন আনবেন।”

সম্পর্কিত নিবন্ধ