সন্তানদের অপেক্ষায় দিন কাটছে উদ্বিগ্ন অভিভাবকদের
Published: 19th, April 2025 GMT
অপহরণের তিন দিন পার হয়ে গেলেও খাগড়াছড়িতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী এখনো উদ্ধার হয়নি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁদের পরিবার ও জেএসএস–সন্তু লারমা–সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সদস্যরা।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিপুণ ত্রিপুরা প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন দিন ধরে প্রশাসনের উদ্ধার তৎপরতায় আমরা হতাশ। এভাবে চেষ্টা করা হলে অপহৃত ব্যক্তিরা উদ্ধার হবে না। অপহরণকারী দল ইউপিডিএফের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মনে শুভবুদ্ধি উদয় হোক এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে পাঁচ শিক্ষার্থীকে অক্ষত অবস্থায় মুক্তি দিক তারা।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অপহৃত এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, ‘৪৮ ঘণ্টা পার হলেও এখন পর্যন্ত ছেলেমেয়েদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। এই ঝড়বৃষ্টির মধ্যে তাদের সঙ্গে কী করা হচ্ছে, কোথায়, কীভাবে রাখা হচ্ছে, আমরা এখনো জানি না। প্রশাসনও কোনো খোঁজ দিতে পারছে না। যেখানে প্রশাসন খোঁজ দিতে পারছে না, সেখানে আমরা যাব কার কাছে। আমাদের একটাই প্রার্থনা, সন্তানেরা যেন সুস্থ অবস্থায় ফিরে আসে।’
অপহরণের শিকার রিশন চাকমা পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চবির সদস্য। অন্য চার শিক্ষার্থী হলেন, চবির চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা ও অলড্রিন ত্রিপুরা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা ও প্রাণীবিদ্যা বিভাগের লংঙি ম্রো। তাঁরা ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
তবে প্রথম দিন থেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন ইউপিডিএফের অন্যতম খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা। তিনি বলেন, অপহরণের সঙ্গে ইউপিডিএফের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এ ধরনের প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি ইউপিডিএফ করে না।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো.
বিজু উৎসব শেষে গত বুধবার সকালে কুকিছড়া থেকে অটোরিকশায় খাগড়াছড়ি সদরে আসার পথে গিরিফুল নামক এক জায়গা থেকে টমটম গাড়ির চালকসহ পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে চালককে ছেড়ে দিলেও পাঁচ শিক্ষার্থীর খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় বাবা-মাকে মারধর করে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণ, অভিযুক্ত আটক
বাড়ির ভেতর ঢুকে বাবা-মাকে মারধরের পর এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের বেপারীপাড়ায় ঘটনাটি ঘটে। বিকেল ৫টার দিকে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার ও মূল অভিযুক্ত আটক করে পুলিশ।
অভিযুক্ত সঞ্চয় (২০) উপজেলার ফাঁসিতলা এলাকার মোঘলটুলী গ্রামের রাফিউল ইসলাম রাফির ছেলে।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, মঙ্গলবার দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরেন ওই শিক্ষার্থী। কিছুক্ষণ পর সঞ্চয়সহ ১৫-২০ জন লাঠি নিয়ে বাড়িতে হামলা চালায়। তারা ঘরের দরজা-জানালাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এবং মালামাল লুট করে। এসময় বাধা দিতে গেলে হামলাকারীরা ওই শিক্ষার্থীর বাবা-মাকে মারধর ও কুপিয়ে আহত করে। পরে তারা শিক্ষার্থীকে টেনেহিঁচড়ে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়।
আরো পড়ুন:
ধামরাইয়ে চালক-হেলপারকে মারধর করে তেলবাহী ট্রাক ছিনতাই
সিরাজগঞ্জে সহপাঠীদের মারধরে আহত এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু
পুলিশ বিকেল ৫টার দিকে পার্শ্ববর্তী কামারদহ ফেলুপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে চাঁন মিয়ার বাড়ি থেকে অপহৃত শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে। এসময় অভিযুক্ত সঞ্চয়কে আটক ও তার কাছে থাকা মোটরসাইকেল জব্দ করে পুলিশ।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর ভাষ্য, দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে যাওয়া আসার পথে তাকে উত্ত্যক্ত করাসহ বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছিলেন সঞ্চয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সঞ্চয়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
ঘটনাটি নিশ্চিত করে গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি বুলবুল ইসলাম বলেন, “খবর পেয়ে পুলিশ উদ্ধার অভিযান চালায়। একটি বাড়ি থেকে শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করা হয়। অভিযুক্ত সঞ্চয়কে আটক করা হয়েছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।”
ঢাকা/মাসুম/মাসুদ