দেশে আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টা সময় ডেঙ্গু আক্রান্ত এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসে চার ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হলো। অন্য তিনজন ছিলেন মধ্যবয়সী। তাঁদের মধ্যে দুজন ছিলেন নারী।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকার একটি হাসপাতালে ওই কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে চলতি মাসের প্রথম মৃত্যুও হয়ে ছিল এই এলাকার হাসপাতালে গত ৫ এপ্রিল। অন্য দুজনের মৃত্যু হয়েছিল ১২ এপ্রিল বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৫ জন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৬ জন রয়েছেন বরিশাল বিভাগে। এর বাইরে চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগের রয়েছেন ৪ জন ও ৩ জন। ঢাকা উত্তর সিটির ও দক্ষিণ সিটির হাসপাতালগুলো ভর্তি হয়েছেন যথাক্রমে ৫ ও ৭ জন।

চলতি বছরে এ পর্যন্ত ১৭ ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন এবং জানুয়ারিতে ১০ জন মারা যান। এ সময়ে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ২২৭ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ জনসহ হাসপাতাল থেকে ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ৮৭ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৩৫ রোগীর মধ্যে শূন্য থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু রয়েছে দুটি। দুটিই মেয়ে শিশু। অন্যদিকে সত্তোরোর্ধ্ব ব্যক্তি রয়েছেন ১ জন, তিনি পুরুষ। বয়সের স্তর বিবেচনায় সর্বোচ্চ ৫ জন রয়েছেন ১৬ থেকে ২০ বছর বয়সী। তাঁদের মধ্যে চারজন তরুণী। ৩৫ রোগীর মধ্যে ১৬ জন পুরুষ, ১৯ জন নারী। আর চলতি বছর এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের ৫৪ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ ও ৪৫ দশমিক ৭ শতাংশ নারী। এ বছর মারা যাওয়া ১৭ রোগীর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা বেশি, শতাংশের হিসেবে এ হার ৬১ দশমিক ২।  

দেশে ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হয়। ওই বছর ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের। আর গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৫৭৫ জনের মৃত্যু হয়, হাসপাতালে ভর্তি হন ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন।

আরও পড়ুনডেঙ্গুতে দুজনের মৃত্যু, দুজনই বরিশালের১২ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

আরো পড়ুন:

ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্নের ঘোষণা ট্রাম্পের

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলি অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন দিয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ