সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজে দ্রুত হাসপাতালের কার্যক্রম চালু, প্রয়োজনীয় ক্লিনিক্যাল ক্লাস (হাতে-কলমে শিক্ষা) নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীরা আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ক অবরোধ করেন।

পুলিশ প্রথমে শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে বেলা সাড়ে ১১টার সময় তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাঁদের ওপর লাঠিপেটা করেছেন। কারও কারও গায়ে হাত তোলা হয়েছে। তবে সেনাবাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজর মেজবাহ উদ্দিন বলেছেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি আন্তরিক। কিন্তু যেহেতু তারা রাস্তা বন্ধ করে রেখেছিল এবং সরতে চায়নি, তাই কিছুটা বল প্রয়োগ করে আমরা তাদের ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়েছি। এর বেশি কিছু হয়নি এখানে।’

বিভিন্ন দাবিতে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা গত মঙ্গলবার থেকে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন করছেন। বিক্ষোভ, মানববন্ধন, সড়ক অবরোধ এবং স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।

আন্দোলনের ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সকাল ১০টায় কলেজের সামনে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে সড়কে বাঁশ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরির মাধ্যমে সড়ক অবরোধ করে তাঁদের দাবির পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন। তখন সড়কের দুই দিকে অনেক যানবাহন আটকা পড়ে। ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

খবর পেয়ে পার্শ্ববর্তী শান্তিগঞ্জ থানার পুলিশ এসে শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে আসেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তাঁরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন, কিন্তু তাঁরা অবরোধ তুলতে রাজি হননি। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাঁদের জোর করে সড়ক থেকে সরিয়ে দেন।

কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তাক আহমেদ ভূঁইয়া বলেছেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো নিয়ে মন্ত্রণালয়ে আলোচনা করেছি। তারা মূলত দাবিগুলো নিয়েই সড়কে গিয়েছিল। আমরা সব শিক্ষকেরাই তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি।’

২০২১ সালে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ২০২৩ সালে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর হয়। ২০২৪ সালে ক্যাম্পাসে ৫০০ শয্যার হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হওয়ার পরও এখনো হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়নি। এখন বলা হচ্ছে ২০২৬ সালে হবে।
হাসপাতাল চালু না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্লিনিক্যাল ক্লাস করতে পারছেন না। ওয়ার্ড সেবা না থাকায় হাতে–কলমে শিক্ষা থেকে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। চলতি বছরের জুনের মধ্যে প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ দিয়ে হাসপাতাল চালু, পর্যাপ্ত ক্লিনিক্যাল ক্লাস নিশ্চিত, এর আগে প্রয়োজনীয় ক্লিনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ও রেজিস্ট্রার নিয়োগ দিয়ে জেলা সদর হাসপাতালে সপ্তাহে ছয় দিন ক্লিনিক্যাল ক্লাসের ব্যবস্থা করা। জেলা সদরে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য কমপক্ষে তিনটি বাসের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়।

সুনামগঞ্জ জেলা শহর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার মদনপুর এলাকায় সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের পাশে এই মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল অবস্থিত। ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসেবে ৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। এর প্রায় দুই বছর পর ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর হয় প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে কলেজে পাঁচটি ব্যাচে ২৮০ জন শিক্ষার্থী আছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ সড়ক থ ক কল জ র

এছাড়াও পড়ুন:

ছয় গোলের থ্রিলারে জমজমাট ড্র বার্সেলোনা-ইন্টারের

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল মানেই উত্তেজনার পারদ চড়া—আর বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে সেটিকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়। কাতালানদের ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে দর্শকরা উপভোগ করলেন এক দুর্দান্ত গোলবন্যার ম্যাচ। ম্যাচ শেষে ফল—৩-৩ গোলে ড্র।

মৌসুমের রেকর্ড ৫০ হাজার ৩১৪ দর্শকের সামনে ইউরোপীয় ফুটবলের এই মহারণে উভয় দলই তুলে ধরেছে আক্রমণাত্মক ফুটবল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের ইতিহাসে ১৯৯৯ সালের পর এটিই প্রথম ম্যাচ যেখানে ছয়টি গোল হয়েছে এবং শেষ হয়েছে ড্রয়ে।

ম্যাচ শুরু হতে না হতেই চমকে দেয় ইন্টার মিলান। ম্যাচের মাত্র প্রথম মিনিটেই ডেনজেল ডামফ্রিজের ব্যাকহিল গোল দলকে এগিয়ে দেন মার্কাস থুরাম। এরপর ২১ মিনিটে আবারও দিমারকোর কর্নার থেকে ফ্রান্সেসকো আকেরবির সহায়তায় শ্বাসরুদ্ধকর অ্যাক্রোব্যাটিকে ব্যবধান বাড়ান ডামফ্রিজ।

তবে ঘুরে দাঁড়াতে দেরি করেনি বার্সা। দুই মিনিট পরই ইয়ামাল ডান দিক থেকে একক নৈপুণ্যে দুর্দান্ত গোল করে ব্যবধান কমান। প্রথমার্ধ শেষের আগে পেদ্রির ফ্লিকে রাফিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং তাতে ফেরান তোরেসের শটে গোল করে ২-২ সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।

দ্বিতীয়ার্ধে লাউতারো মার্টিনেজের ইনজুরির পর মাঠে নামেন মেহেদি তারেমি। ৬০ মিনিটে কর্নার থেকে হেড করে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ডামফ্রিজ। কিন্তু দ্রুতই গোল শোধ করে বার্সা—ছোট কর্নার থেকে রাফিনিয়ার শট লাগে পোস্টে, সেখান থেকে গোলরক্ষক সোমারের পিঠে লেগে ঢুকে পড়ে জালে—ফলাফল ৩-৩। ৭৫ মিনিটে হেনরিখ মিখিতারিয়ান গোল করে ইন্টারকে আবারও এগিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ভিএআরের চোখে পড়ে সামান্য অফসাইড, বাতিল হয় সেই গোল।

এখন সবকিছু নির্ভর করছে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের ওপর, যা হবে ৬ মে, মঙ্গলবার, ইন্টারের ঘরের মাঠ জিউসেপ্পে মিয়াজ্জায়। ওই ম্যাচেই জানা যাবে ফাইনালে কারা প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ও আর্সেনালের মধ্যকার বিজয়ীর মুখোমুখি হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ