আশুলিয়ায় কারখানার ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিতে গুলি, পিস্তল উদ্ধার ও গ্রেপ্তার ১
Published: 20th, April 2025 GMT
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় কার্টন কারখানার ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব ও গুলি ছোড়ার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঢাকা জেলা (উত্তর) গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গতকাল শনিবার অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর তথ্যের ভিত্তিতে একটি পিস্তার উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার জিয়া দেওয়ান (৪০) আশুলিয়ার জিরাব এলাকার আলী দেওয়ান নেওয়াজের ছেলে।
আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে সাভারে ঢাকা জেলা (উত্তর) গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ওই ঘটনার বিস্তারিত জানান ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহীনুর কবির।
শাহীনুর কবির বলেন, ১৭ এপ্রিল আশুলিয়ার জিরাব এলাকার এসএএস কার্টন কারখানার ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে জিয়া ও মামুন গ্রুপের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে জিয়া একটি অবৈধ পিস্তল দিয়ে ফাঁকা গুলি ছোড়েন। পরে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যান। ঘটনার পর আশুলিয়া থানায় এ–সংক্রান্ত একটি মামলা করা হয়। এরপর আসামিকে আইনের আওতায় আনতে যৌথভাবে আশুলিয়া থানা পুলিশ ও ঢাকা জেলা (উত্তর) গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কাজ শুরু করে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গতকাল বিকেলে গাজীপুরের পুবাইল থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে জিয়া দেওয়ানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শাহীনুর কবির জানান, জিয়া দেওয়ানের তথ্যের ভিত্তিতে আশুলিয়ার জিরাব এলাকার দেওয়ানবাড়ি পারিবারিক কবরস্থানের পাশ থেকে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। পিস্তলের সঙ্গে একটি ম্যাগাজিনও উদ্ধার করা হয়। পিস্তলের গায়ে ‘মেড ইন ইউএসএ নম্বর-১১১৭, অনলি আর্মি সাপ্লাই’ লেখা রয়েছে। জিয়া দেওয়ানকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা জেলা (উত্তর) গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ আলম, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু হচ্ছে শনিবার মধ্যরাতে
তিন মাস দুই দিন পর কাপ্তাই হ্রদে শুরু হচ্ছে মৎস্য আহরণ। শনিবার (২ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা।
কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকায় কয়েক বছরের মধ্যে এবার নির্দিষ্ট সময়ে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে জেলা প্রশাসন। অন্যান্য বছর ২-৩ দফা সময় বাড়িয়ে প্রায় চার মাস পর মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হতো। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, প্রজনন এবং অবমুক্ত করা মাছের বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন।
এদিকে, মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর শুধু জেলে পাড়া নয়, কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে জেলার সবচেয়ে বড় মৎস্য অবতরণকেন্দ্র বিএফডিসি ঘাট। মাছ পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে ড্রাম, বরফ ভাঙার মেশিন। দীর্ঘ ৯২ দিনের কর্মহীন জীবনের অবসান ঘটাতে প্রহর গুনছেন জেলেরা। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)।
বিএফডিসি সূত্র বলছে, কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য ১ মে থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। এ সময়ে হ্রদে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ২৬ হাজার জেলে।
রাঙামাটির শহরের পুরান পাড়া জেলা পল্লীর বাসিন্দা নেপাল দাশ জানিয়েছেন, মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞাকালে যে সরকারি সহায়তা পাওয়া যায়, তাতে পরিবার নিয়ে চলা কঠিন। দীর্ঘ তিন মাস পর মাছ ধরতে নামতে পারব, এতে খুশি আমরা।
নতুন পাড়ার জেলে অমর কান্তি দাশ বলেছেন, হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাবে। তবে, পানিতে ঢেউ থাকায় শুরুতে বেশি মাছ পাওয়া যাবে না। পানি কিছু কমে আসলে ও স্থির হলে ভালো মাছ পাব, আশা করি। হ্রদে নামার জন্য যা যা প্রস্তুতি, সবকিছু শেষ করেছি। জাল ও নৌকা মেরামত করা হয়েছে। এখন শুধু লেকে নামার অপেক্ষা।
রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি উদয়ন বড়ুয়া বলেছেন, এবার নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকে পর্যাপ্ত বৃষ্টির ফলে কাপ্তাই হ্রদে যথেষ্ট পানি থাকায় মাছ প্রথম থেকেই প্রজনন এবং বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আশা করছি, এবার পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাবে। ব্যবসায়ীরা সব প্রস্ততি নিয়েছেন। রবিবার সকাল থেকে বিএফডিসি ঘাটে মাছ আসবে।
বিএফডিসির রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বলেছেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন আমাদের উপকেন্দ্রগুলোর যেসব অবকাঠামো সংস্কারের প্রয়োজন ছিল, সেসব আমরা শেষ করেছি। অন্যান্য যেসব প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, সেসবও শেষ হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের মতো এবছরও ভালো মাছ পাওয়া যাবে।
ঢাকা/শংকর/রফিক