বিএনপির প্রস্তাব: চারটি ছাড়া সব বিষয়ে এমপিরা দলের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারবেন
Published: 20th, April 2025 GMT
অর্থ বিল, সংবিধান সংশোধনী বিল, আস্থা ভোট, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিল— এই চারটি ছাড়া অন্য যে কোনো বিষয়ে সংসদ সদস্যরা নিজ দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার পূর্ণ ক্ষমতা পাবেন, এরকম প্রস্তাব করেছে বিএনপি।
রবিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে মধ্যাহ্ন বিরতির পরে সাংবাদিকদের কাছে ব্রিফিংয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘‘সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে সংসদ সদস্যদের ক্ষেত্রে আমরা শুনেছি, আস্থা বিল ও অর্থ বিলের ক্ষেত্রে প্রায় সবাই একমত।”
আরো পড়ুন:
বিএনপির জন্ম হয়েছে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য: সালাম
শরীয়তপুর
বিএনপির দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, ১৪৪ ধারা জারি
‘‘রাষ্ট্র পরিচালনার সুবিধার্থে এবং সরকারের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করার স্বার্থে আমরা চারটি বিষয় এখানে উল্লেখ করেছি। অর্থ বিল, সংবিধান সংশোধনী বিল, আস্থা ভোট এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন— এই চারটি বিষয় বাদে সংসদ সদস্যরা স্বাধীনভাবে তাদের বক্তব্য ও ভোট প্রদান করতে পারবেন। তাতে তাদের সংসদ সদস্যপদ বিলুপ্ত হবে না।”
বিদ্যমান সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংসদ সদস্যরা নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারেন না। তাতে বলা আছে, কোনো নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি যদি ওই দল থেকে পদত্যাগ করেন বা সংসদে ওই দলের বিপক্ষে ভোট দেন, তাহলে সংসদে তার আসন শূন্য হবে।
‘নারী আসন সংখ্যা একশতে উন্নীতিকরণ’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আমরা বলেছি, নারীদের আসন সংখ্যা ৫০ থেকে ১০০-তে উন্নীত করার ব্যাপারে আমরা একমত। কিন্তু সেটা বিদ্যমান পদ্ধতিতেই মনোনয়ন হবে। সেটা আমাদের প্রস্তাবে বলেছি।”
‘‘তবে এটা (নারী আসন সংখ্যা উন্নীত) আমরা বলেছি, নেক্সট পার্লামেন্ট গঠন করার পরে। যখন ৩০০ প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচিত হবে এবং সংসদে এই সংক্রান্ত সংশোধনী গৃহীত হলে বর্তমানের ৫০ এবং আরো ৫০ নিয়ে যে ১০০ গঠিত হবে; সেই ৪০০ সদস্য বিশিষ্ট সংসদে বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করে কোন পদ্ধতিতে তার পরবর্তী সংসদে নারী আসনের নির্বাচনটা হবে; তখন আলোচনায় নির্ধারণ করা হবে। বর্তমানের জন্য বিদ্যমান পদ্ধতি আমরা মনে করেছি যে অ্যাপ্রুপ্রিয়েট।”
ভোটের ন্যূনতম বয়স ২১-এর ক্ষেত্রে বিএনপি দ্বিমত পোষণ করেছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘‘সকল স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদে বিরোধী দলের নেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। আমরা বলেছি, এটা বাস্তবায়ন নয়। এটা সংসদের প্রাকটিস ও সংসদের ওপরে ছেড়ে দেওয়া উচিত।”
‘‘তবে আমরা এভাবে একমত হয়েছি যে, কিছু কিছু স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদে যেমন পাবলিক আন্ডারটেইকেন কমিটি, সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটি; এই জাতীয় কিছু কিছু কমিটি বিরোধী দলের মধ্য থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচন করা যায়, এই বিষয়ে একমত হয়েছি।”
রবিবার সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে বৈঠকে বসেন বিএনপির প্রতিনিধিদল। সালাহউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং সাবেক সচিব আবু মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিশনের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
‘আমাদের মতামত-দ্বিমত কমিশনকে বলেছি’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে আলোচনা করছি। আলোচনা অব্যাহত আছে। মোটামুটি ভালো এগুচ্ছে। বেশ কিছু বিষয়ে কাছাকাছি এসেছি, বেশ কিছু বিষয়ে আমাদের দ্বিমত বলেছি।”
‘‘আমরা বিশ্বাস করি, গণতন্ত্রে এটাই স্বাভাবিক। আমরা বাকশালে বিশ্বাস করি না যে, এমন কিছু করা হবে; এটা সবাইকে বাধ্য হওয়া লাগবে। আমরা মনে করি, দেশ ও জনগণের স্বার্থ চিন্তা করে যা সংগত, যা সর্বাপেক্ষা উত্তম তেমন কিছুই হওয়া উচিত, তেমন কিছুই করা উচিত।’’
‘সংসদ নেতা এবং পার্টি প্রধান এক ব্যক্তি প্রসঙ্গে’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘সংসদ নেতা এবং পার্টি প্রধান একই ব্যক্তি হতে পারবে না বলে প্রস্তাব করেছে কমিশন। আমরা এটা ওপেন রাখতে বলেছি। অপশনটা পলিটিক্যাল পার্টির এবং মেজরিটি পার্টি অব দ্য পার্লামেন্টের অপশনটা রাখা উচিত। কারণ সেই মেজরিটি পার্টির সংসদে সংসদীয় দলের নেতা সেটা অন্য বিষয়। পার্লামেন্টের ভেতরের বিষয় না।”
‘‘আর পার্টির যে প্রধান, তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না, এই প্র্যাকটিসটা তো আমরা দেখি না। আমরা যদি ওয়েস্টমিনিস্টার টাইপ অফ গভর্মেন্টে দেখি; ব্রিটেনের বর্তমান প্র্যাকটিস দেখি, পার্টি চিফ প্রধানমন্ত্রী হন। এক্ষেত্রে এটা একটা ডেমোক্রেটিক প্র্যাকটিস, তাতে কোনো অসুবিধা নেই। সেটা পার্টির স্বাধীনতা, সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা, ডেমোক্রেটিক প্র্যাকটিসের স্বাধীনতা। সুষ্ঠু ভোটে যে সংসদ নির্বাচিত হবে, সেখানে আমাদের মনে রাখতে হবে, জনগণ কাকে চায়। জনগণ হচ্ছে সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। সুতরাং, সেটা পার্লামেন্ট মেম্বার ও মেজরিটি পার্টির ইচ্ছার ওপর নির্ভর করা উচিত।”
তিনি বলেন, ‘‘এখানে প্রশ্ন এসেছে যে, লিডার অফ দ্য হাউজ কি একই ব্যক্তি হবে? আমরা বলেছি, পার্টি চিফকেই যে প্রধানমন্ত্রী করবে সেটা নয়, সেটা আরেকজনকেও তো করতে পারে। অপশন থাকা উচিত।”
‘‘মেজরিটি পার্টি থেকে প্রধানমন্ত্রী হলেও যে সংসদ নেতা হবে কী হবে না, অন্যজন হতে পারে, সেটাতেও অপশন রাখা উচিত। আমরা এসব অপশন খোলা রাখতে বলেছি ডেমোক্রেটিক প্রাকটিসের জন্য।”
সালাহউদ্দিন জানান, উচ্চকক্ষে আসন সংখ্যা ১০০-তে রাখার বিষয়ে কমিশনের প্রস্তাবের সাথে একমত হয়েছে বিএনপি। উচ্চকক্ষের নির্বাচন পদ্ধতি, কারা আসবে, আনুপাতিক হারে আসবে কি না; সে বিষয়ে বিএনপি বলেছে, আগে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদের সংশোধনীটা সংসদে গৃহীত হোক। দ্বিকক্ষ গঠন হলে পরে সংসদে আলাপ করে নির্বাচন পদ্ধতি ঠিক করা ভালো হবে।
‘আন্তর্জাতিক ও দ্বিপক্ষীয় চুক্তি প্রসঙ্গে’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘দ্বিপক্ষীয় ও আন্তর্জাতিক চুক্তিসমূহ প্রাথমিকভাবে সংসদ উপস্থাপনের কথা উনারা বলেছেন। আমরা বলেছি, এটা সুবিবেচনা-প্রসূত নয়। তাহলে কোনো চুক্তি, যেমন বাণিজ্যিক চুক্তি, বাইলেটারাল চুক্তি, বিনিয়োগ চুক্তি আছে; যেগুলো রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে নরমাল প্র্যাকটিস করা হয়।”
‘‘চুক্তির পরে সংসদে উপস্থাপনের যে বিধান যেটা, আমরা যেন প্রয়োগ করি। এক্ষেত্রে আমরা বলেছি, ডিফেন্স যেসব চুক্তি হয়ে থাকে, যেগুলোকে আমরা বলি জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা চুক্তি; সেগুলো ক্লোজড সেশনে করাটাই উত্তম।”
‘‘ন্যায়পাল নিয়োগের ক্ষেত্রে বিএনপি বিদ্যমান আইনের যথাযোগ্য যুগোপযোগী করার জন্য নীতিগতভাবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে একমত হয়েছে’’ বলে জানান সালাহউদ্দিন।
‘রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বাড়ানো’
সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আমরা বলেছি, রাষ্ট্রপতিকে কী কী বিষয়ে ক্ষমতায়িত করে আইন প্রণয়ন করা যায়, সেসব কিছু বিষয়ে এবং নিয়োগের কিছু বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। সেগুলো নতুন আইন প্রণয়ন করে সংসদ প্রণীত করা যাবে। সেক্ষেত্রে চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স এবং রাষ্ট্রপতিকে মোর অ্যামপাওয়ার করা, সেটা নিশ্চিত করা হবে।”
‘ন্যাশনাল কন্টিস্টিটিউশন কাউন্সিল (এনসিসি) প্রস্তাবে একমত নই’
সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘এটা একটা নতুন ধারণা বাংলাদেশের পলিটিক্যাল কালচারে বা সংসদীয় কালচারে; যেখানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, উভয় কক্ষের স্পিকার এবং প্রধান বিচারপতিসহ আরো কয়েকজনের কথা বলা আছে। এই বডিটার হাতে রাষ্ট্রের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগ যেমন সব কমিশন, তিন বাহিনী প্রধান থেকে শুরু করে পিএসসি, দুদকসহ আরো যেসব সাংবিধানিক পদ আছে, এগুলো আমরা একমত নই।”
‘‘কারণ কী? আমরা মনে করি, রাষ্ট্রের মধ্যে এক্সিকিউটিভ ফাংশনটাকে এত বেশি লিমিট করা হবে যে, এক্সিকিউটিভ ও প্রধানমন্ত্রী যে নামেই ডাকি, তাদের রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে এখতিয়ার বা রাষ্ট্র পরিচালনা দায় হয়ে যাবে। অথচ রেন্সপনসেবিলিটি থাকবে ইলেক্টেড প্রতিনিধি হিসেবে জনগণের কাছে এবং সংসদে কাছে। সেই নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর তেমন কোনো পাওয়ার দেওয়া থাকল না।”
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ও সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর রাখার পক্ষে মত দিয়েছে বলে জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী যিনি হবেন, তিনি পরপর দুই বারের বেশি হতে পারবেন না, এই প্রস্তাবে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘‘আমরা বলেছি, পরপর দুইবারের বেশি কেউ একজন প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। তার মানে দাঁড়াচ্ছে যদি দুই বারের পর একবার গ্যাপ হয়, তার পরবর্তীকালে জনগণ যদি সেই দলকে নির্বাচিত করে, সেই পার্টি মেজরিটি পেয়ে যদি ডিসাইড করে তাহলে সেই একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হতেও পারেন।”
‘‘কিন্তু কথা হচ্ছে যে, কেন আপনারা ধরে নিচ্ছেন যে, সেইম লিডার বারবার হবেন। আমরা অপশনটা রাখতে চাই যে, বাধ্যবাধকতা করা যাবে না।”
‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার চান কেন’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘৯০ দিনের জন্য ট্যাম্পোরারেলি আন ইলেক্টেড গভর্মেন্ট চান কেন? দিস ইজ ডটট্রেইন অব ন্যাসেসিটি। আমাদের পলিটিক্যাল হিস্ট্রিতে ও কালচারে দেখা গেছে, উইথআউট কেয়ারটেকার গভর্মেন্ট আমরা কোনো ইলেকশনই অবাধ, নিরপেক্ষ সুষ্ঠু করতে পারি না।”
‘‘যতদিন পর্যন্ত আমরা সেই কালচারে উপনীত না হতে পারব, ততদিন পর্যন্ত আমাদের নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য কেয়ারটেকারের বিধানটা রাখা উচিত। এই ভোটের জন্য আমরা ১৫ বছর আন্দোলনও করেছি।”
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার বিএনপি ঐকমত্য কমিশনের সাথে বৈঠকে বসেছিল।
ঢাকা/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র প রস ত ব আসন স খ য র ষ ট রপত স ব ধ নত র সদস য ব এনপ র কম ট র ত র পর আম দ র প রব ন র জন য দল র ব ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
আলোচনা অব্যাহত থাকা অবস্থায় কর্মসূচি দেওয়া স্ববিরোধিতা মনে করছে বিএনপি
জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা অব্যাহত থাকা অবস্থায় সনদের ভিত্তিতে নির্বাচনের দাবিতে রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণাকে স্ববিরোধিতা বলে মনে করছে বিএনপি।
জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনসহ কয়েকটি দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামীসহ চারটি রাজনৈতিক দল। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি কী হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি।
এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা অব্যাহত আছে। এ অবস্থায় রাস্তায় কর্মসূচি দেওয়া অনেকটা স্ববিরোধিতা। তবে অবশ্যই যেকোনো দলের কর্মসূচি দেওয়ার গণতান্ত্রিক অধিকার আছে। তারা কর্মসূচি দিতে পারে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি কী হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি।বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদজামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের দাবির মধ্যে জাতীয় সংসদের নিম্নকক্ষেও আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এই নেতা বলেন, জাতীয় সংসদের নিম্নকক্ষে পিআর পদ্ধতির বিষয়টি কখনো ঐকমত্য কমিশনে আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল না। এখন কোনো দল তাদের রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে এটি নিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি দিতে চাইলে দিতে পারে। কিন্তু জনগণের নামে এক দলের আদর্শ বা দাবি অন্যদের ওপর আরোপ করা কতটা সঠিক, সেটা দেখতে হবে।
জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের শরিক দলগুলোকে নিষিদ্ধ করার দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘শুরু থেকেই আমরা বলেছি, শুধু প্রশাসনিক আদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা আমরা সমর্থন করি না। আগে আইন ছিল না, এখন আইন হয়েছে। কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হওয়া উচিত। এখন ঢালাওভাবে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করতে চাইলে তা কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, এর পেছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে কি না, সেটা জনগণ বিবেচনা করবে।’
শুরু থেকেই আমরা বলেছি, শুধু প্রশাসনিক আদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা আমরা সমর্থন করি না। আগে আইন ছিল না, এখন আইন হয়েছে। কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হওয়া উচিত। সালাহউদ্দিন আহমদ, বিএনপি নেতাসালাহউদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে আরও বলেন, এই আন্দোলন কাদের বিরুদ্ধে, সেটা দেখতে হবে। এটা কি অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে, নাকি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বিরুদ্ধে, নাকি বিএনপির বিরুদ্ধে? এটা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার কোনো কৌশল কি না, সেটাও দেখতে হবে। যারা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, তাদের কর্মসূচি ঘোষণা করার অধিকার আছে। তারা যদি রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে কর্মসূচি দেয়, তাদের মাঠের রাজনৈতিক বক্তব্যের জবাব বিএনপি মাঠের বক্তৃতার মাধ্যমেই দেবে।