শেষ পর্যন্ত তবে ঘটনা ঘটছেই! হ্যারি কেইন তাহলে জীবনের প্রথম ট্রফিটা জিততে যাচ্ছেন! কিছুটা অবাক করার মতো হলেও এটাই কিন্তু বাস্তব। কেইন এখন সিনিয়র পেশাদার ক্যারিয়ারের প্রথম ট্রফি থেকে মাত্র দুই ম্যাচ দূরে। বুন্দেসলিগায় আর মাত্র দুই ম্যাচ জিতলেই লিগ নিশ্চিত হবে বায়ার্ন মিউনিখের, যা হবে কেইনের ক্যারিয়ারের প্রথম শিরোপা।

বায়ার্নের মতো শিরোপার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে লিভারপুলও। লিভারপুলের অবশ্য দুই ম্যাচ নয়, এক ম্যাচ জিতলেই চলবে। তবে বুন্দেসলিগা ও প্রিমিয়ার লিগের মতো হিসাবটা সহজ নয় সিরি আ ও লা লিগায়। এই দুই লিগেই জমে উঠেছে লড়াই। এমনকি এই দুই লিগের শিরোপা লড়াই গড়াতে পারে শেষ দিন পর্যন্ত।

কেইনের প্রথম শিরোপার অপেক্ষা

কেইনের ট্রফি জয়ের আশা সম্ভবত তাঁর অন্ধ ভক্তরাও একসময় ছেড়ে দিয়েছিলেন। টটেনহামে ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে নিজেকে বিশ্বের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করলেও জেতা হয়নি কোনো শিরোপা। ইংল্যান্ডের হয়ে পরপর দুবার ইউরোর ফাইনালে খেলেও শিরোপাহীন থাকতে হয়েছিল কেইনকে। এমনকি কেইন আশার পর প্রথম মৌসুমটা শিরোপাহীন কেটেছে জার্মান ক্লাব বায়ার্নেরও। তবে সেই গেড়ো বোধ হয় অবশেষে খুলতে শুরু করেছে।

আরও পড়ুনবার্সাকে জবাব দেওয়া ‘কামব্যাকে’ শিরোপার লড়াইয়ে টিকে থাকল রিয়াল ৫ ঘণ্টা আগে

নিজের জীবনের প্রথম শিরোপা থেকে এখন মাত্র দুই ম্যাচ দূরে দাঁড়িয়ে কেইন। বুন্দেসলিগায় হফেনহেইমের বিপক্ষে ৪–০ গোলের জয়ের পর বায়ার্নের পয়েন্ট এখন ৩০ ম্যাচে ৭২। অন্যদিকে সেন্ট পাউলির সঙ্গে ১–১ গোলে ড্র করা লেভারকুসেনের পয়েন্ট এখন ৩০ ম্যাচে ৬৪। লিগে এখন বাকি আছে ৪ ম্যাচ। যেখানে পরের দুই ম্যাচ জিতলে কোনো হিসাব ছাড়াই চ্যাম্পিয়ন হবে বায়ার্ন। আর লেভারকুসেন যদি নিজেদের ম্যাচে পয়েন্ট হারায়, তবে আরও আগেই শিরোপা উদ্‌যাপনে মাততে পারবে বায়ার্ন।

ইন্টার–নাপোলি সমানে সমান

এই মুহূর্তে ইউরোপের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ শিরোপা লড়াইটা চলছে ইতালিতে। ইন্টার মিলান ও নাপোলি দুই দলেরই আছে ট্রফি জয়ের সমান সম্ভাবনা। সর্বশেষ মনৎসাকে হারানোর পর ৩৩ ম্যাচ শেষে নাপোলির পয়েন্ট ৭১। গতকাল রাতে ইন্টার মিলানের সুযোগ ছিল নাপোলিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। কিন্তু বোলোনিয়ার কাছে ইন্টার হেরে গেছে ১–০ গোলে। যার ফলে এখন ইন্টারের পয়েন্টও ৭১। এই পরিস্থিতিতে শেষ ৫ ম্যাচ দিয়েই নির্ধারিত হবে লিগ শিরোপা। যেখানে ইন্টারের সামনে আছে রোমা ও লাৎসিওর মতো প্রতিপক্ষ। আর নাপোলি চ্যালেঞ্জে পড়তে পারে তুরিনো এবং জেনোয়ার বিপক্ষে।

অ্যানফিল্ডেই তবে লিভারপুলের উদ্‌যাপন

লিভারপুল শিরোপা জিততে পারত গতকাল রোববার রাতেই। ইপসউইচ টাউনের বিপক্ষে আর্সেনাল হারলেই হতো। কিন্তু অবনমন অঞ্চলের দল ইপসউইচকে ৪–০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে আর্সেনাল। যার ফলে লেস্টার সিটির বিপক্ষে জিতেও এখন অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে লিভারপুলকে। তবে লিভারপুলের ট্রফি জয়ের অপেক্ষা শেষ হতে পারে আগামী রোববার ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ডে।

আরও পড়ুনশিরোপা থেকে ১ জয়ের দূরত্বে লিভারপুল, ফিরেই নায়ক আলেকজান্ডার–আরনল্ড১৪ ঘণ্টা আগে

সেদিন টটেনহামের বিপক্ষে জয় পেলে আর কোনো হিসাবে না গিয়েই চ্যাম্পিয়নস হবে ‘অল রেড’রা। লিভারপুল অবশ্য মাঠে না নেমেও চ্যাম্পিয়ন হতে পারে। সে জন্য বুধবার রাতে ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে পয়েন্ট হারতে হবে আর্সেনালকে। বর্তমানে ৩৩ ম্যাচ শেষে শীর্ষে থাকা লিভারপুলের পয়েন্ট ৭৯। আর সমান ম্যাচে আর্সেনালের পয়েন্ট ৬৬।

এল ক্লাসিকোতেই কি শিরোপা নির্ধারণ

লা লিগায় নিজেদের শেষ ম্যাচে ঘুরে দাঁড়িয়ে জিতেছে বার্সেলানা ও রিয়াল মাদ্রিদ। সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে ৪–৩ গোলের জয়ের পর বার্সার পয়েন্ট এখন ৩২ ম্যাচে ৭৩। আর গতকাল রাতে অ্যাথলেটিক বিলবাওকে হারানো রিয়ালের পয়েন্ট এখন সমান ৩২ ম্যাচে ৬৯। লিগে এখন ৬ ম্যাচ করে বাকি।

আরও পড়ুনখাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বার্সার অবিশ্বাস্য জয় ১৯ এপ্রিল ২০২৫

আর ৬ ম্যাচে রিয়ালকে শিরোপা জিততে ঘোচাতে হবে ৪ পয়েন্টের পার্থক্য। এ ক্ষেত্র আগামী ১১ মের রিয়াল–বার্সার এল ক্লাসিকোই হয়তো নির্ধারণ করে দিতে পারে লিগ শিরোপা। আবার শিরোপা জিততে অপেক্ষা করতে হতে পারে একেবারে শেষ দিন পর্যন্তও। তবে যেটাই হোক, লা লিগা যে আগামী কদিন রোমাঞ্চ উপহার দেবে সেটা বলাই যায়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর স ন ল র প রথম ইন ট র

এছাড়াও পড়ুন:

কাজাকিস্তানের যাযাবর জাতির করুণ ইতিহাস 

বিংশ শতাব্দীর আগে পৃথিবীর মানচিত্রে কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তান নামের এই পাঁচটি দেশ ছিলো না।  মূলত ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এই রাষ্ট্রগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা লাভ করে। পরে চীনের সহায়তায় ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চলগুলো বাণিজ্যিক কেন্দ্রস্থল হিসেবে পুনরুত্থান হয়েছে। এখন প্রশ্ন  করা যেতে পারে, চীন কেন আবারও  এই অঞ্চলগুলোকে শক্তিশালী করে তুলছে?

ঐতিহাসিকভাবে মধ্য এশিয়া অঞ্চল সিল্করোডের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলো। যা চীনকে মধ্যপ্রাচ্য এবং রোমান সভ্যতার সাথে যুক্ত করেছিলো।  বীজ গণিতের জনক আল খারিজমি, আবু সিনার মতো বিজ্ঞানীদের জন্ম হয়েছে এখানে। যাদের লেখা বই ইউরোপে শত শত বছর ধরে চিকিৎসা ও নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। চেঙ্গিস খানও এই অঞ্চলে তার সম্রাজ্যের নিদর্শন রেখে গেছেন। পাশাপাশি ঘোড়ার পিঠে আদিম যাযাবর জীবনের ঐতিহ্যও টিকে আছে এখানে। 

আরো পড়ুন:

রাশিয়ার ‍বিরুদ্ধে এবার রোমানিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ

রাশিয়ায় ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প, সুনামির সতর্কতা 

রাজনৈতিক প্রভাব ও সামরিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ায় আধিপত্য বিস্তার করেছিলো রুশরা। উপনিবেশিক শাসন এমনভাবে চালু করেছিলো, যা অনেকটা ব্রিটিশ বা ফরাসি সম্রাজ্যের মতো দেখতে। 
রাজ্যগুলোকে শিল্পায়ন ও আধুনিকায়নের ফলে বিশাল পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। এমনকি যাযাবর জাতিকে যুদ্ধ যেতে বাধ্য করা হয়েছিলো। আর যাযাবর জাতিকে বসতি স্থাপনে বাধ্য করা হয়েছিলো। এরপর ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। ফলে কাজাখ জনগোষ্ঠীর চল্লিশ শতাংশ অর্থাৎ ২৫ শতাংশ মানুষ অনাহারে মারা যায়। এবং যাযাবর জনগোষ্ঠীর যে অর্থনীতি, তা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। কারণ সোভিয়েত আমলে কাজাখ যাযাবররা যে পশুপালন করতো তার নব্বই শতাংশই মারা যায়। ফলে বাধ্য হয়ে কাজাখদের যাযাবর জীবনযাত্রা ছেড়ে দিতে হয়। বলতে গেলে সোভিয়েত আমলে কাজাখ সভ্যতা ও সংস্কৃতির বেদনাদায়ক পুনর্গঠনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। 

১৯৯১ সালে সোভিয়েন ইউনিয়নের পতন হয়, সৃষ্টি হয় এই পাঁচটি স্বাধীন দেশের। এই দেশগুলো স্বাধীন হয়েছে ঠিকই কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন পরবর্তী বিশ্বে খাপ খাইয়ে নিতে তাদের ব্যাপক সংগ্রাম করতে হয়। তবে বিগত কয়েক দশক ধরে মধ্য এশিয়ার যাযাবর জাতিগুলো নিজস্ব সীমানার মধ্যে এক অনন্য পরিচয় গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। যদিও তাদের ওপর বাইরের প্রভাবও রয়েছে। তুরস্ক এই অঞ্চলে নিজেদের উপস্থিতি আরও বেশি জানান দিচ্ছে। সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক, ধর্মীয় এবং ভাষাগত মিল আছে। এমনকি শিক্ষাগত কাঠামোতেও মিল রয়েছে। তুরস্ক মধ্য এশিয়ায় রাশিয়ার পণ্য রফতানির একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হিসেবেও বিবেচিত। 

জিনজিয়াং প্রদেশে প্রায় এক কোটি উইঘুর বাস করেন। যাদের বেশিরভাগই মুসলিম। এদের নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া উইঘুর পরিচয় মুছে ফেলতে তাদের পুনঃশিক্ষা শিবিরে আটকে রাখার অভিযোগও আছে। যদিও চীন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। 

বৈশ্বিক অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এর চীন মধ্য এশিয়ায় ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন করছে। এই অঞ্চলটিকে বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত করতে চাইছে, যা অনেকটা সিল্করুটের মতোই। 

চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ উদ্যোগের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ায় প্রাচীন সিল্ক রোড পুনরুজ্জীবিত করার একটি সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। এই রোড পুনরুজ্জীবিত হলে রাশিয়া আর চীনের প্রভাব বলয়ে থাকা এই অঞ্চলের ভূ রাজনৈতিক গুরুত্ব কতটা বাড়বে-সেটাও সময় বলে দেবে।  

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরদের কাজ কি শুধু ভাইভা নেওয়া
  • কাজাকিস্তানের যাযাবর জাতির করুণ ইতিহাস 
  • চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী-গ্রামবাসীতে বিদ্বেষ কেন
  • চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ড: ট্রাম্প কি দাঙ্গা–ফ্যাসাদকেই নীতি হিসেবে নিয়েছেন