মাতারবাড়ী ঘিরে বাণিজ্যের নতুন সম্ভাবনা
Published: 21st, April 2025 GMT
বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আন্তর্জাতিক মানের গভীর সমুদ্রবন্দরের অভাবে আমাদের বাণিজ্য ব্যবস্থা বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। কনটেইনারে আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহনে সিঙ্গাপুর, কলম্বো বা মালয়েশিয়ার বন্দরগুলোর ওপর নির্ভরতা শুধু সময় ও ব্যয় বাড়ায়নি, আমাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতাকেও সীমিত করে রেখেছে। এ প্রেক্ষাপটে মাতারবাড়ী ঘিরে যে গভীর সমুদ্রবন্দর বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, তা বাংলাদেশের বাণিজ্য ও শিল্প খাতে এক নতুন যুগের সূচনা করবে বলে আশা করা যায়।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের কল্যাণে মাতারবাড়ী বন্দর প্রকল্পের গভীর চ্যানেল তৈরি হয়েছে অনেক আগেই। কয়লা নিয়ে জাহাজও ভিড়ছে জেটিতে। তবে বন্দরের মূল জেটি নির্মাণের কার্যক্রম ছিল শুধু কাগজ-কলমে। এবার নির্মাণ কার্যক্রম শুরুর মাধ্যমে তা বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং জাপানের বিখ্যাত দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে মাতারবাড়ী পোর্ট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের প্যাকেজ-১ তথা সিভিল ওয়ার্কস ফর পোর্ট কনস্ট্রাকশন কাজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হচ্ছে।
প্রথম ধাপে মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পে দুটি টার্মিনাল নির্মাণ হলে একসঙ্গে একটি সাধারণ পণ্যবাহী ও একটি কনটেইনারবাহী মাদার ভেসেল ভিড়তে পারবে। এসব টার্মিনাল পরিচালনায় থাকবে উন্নত প্রযুক্তি ও আন্তর্জাতিক মানের অবকাঠামো। মাতারবাড়ীতে নির্মাণাধীন গভীর সমুদ্রবন্দরের জন্য ইতোমধ্যে ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ গভীর চ্যানেল এবং ব্রেকওয়াটার নির্মাণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বর্তমানে কয়লাবাহী জাহাজ ভিড়তে পারছে। এমন সক্ষমতা আগে কোনো বাংলাদেশি বন্দরের ছিল না।
মাতারবাড়ী বন্দর প্রকল্পের প্রথম ধাপে বন্দরে মূল অবকাঠামো নির্মাণ হবে। এর মধ্যে রয়েছে বন্দরের দুটি জেটি, সংযোগ সড়ক নির্মাণসহ নানা অবকাঠামো। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা এবং নির্ধারিত সময়সীমা অনুযায়ী ২০২৯ সালের মধ্যে প্রথম ধাপের কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ বর্তমানে বছরে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে। রপ্তানি প্রবৃদ্ধি টেকসই করতে হলে বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো ছাড়া বিকল্প নেই। মাতারবাড়ীর বড় সুবিধা হবে এখানে আট হাজার টিইইউস ধারণক্ষমতার কনটেইনারবাহী জাহাজ সরাসরি ভিড়তে পারবে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে আড়াই-তিন হাজারের কনটেইনার ধারণক্ষমতার জাহাজ ভিড়তে পারে। বড় জাহাজ জেটিতে ভেড়ানো গেলে পণ্য পরিবহনে খরচ কমবে। সবচেয়ে বড় কথা ইউরোপ-আমেরিকায় সরাসরি জাহাজ সার্ভিস চালু করা যাবে। এর ফলে আমাদের আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহনে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ আরও সুবিধাজনক অবস্থানে যাবে।
মাতারবাড়ী শুধু বাংলাদেশের নয়, এ অঞ্চলের বাণিজ্য ব্যবস্থারও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে। প্রতিবেশী দেশগুলোর আমদানি-রপ্তানির জন্য এ বন্দর ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হলে তা বাংলাদেশকে আঞ্চলিক ট্রানজিট হাবে রূপান্তর করবে। এটি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ লজিস্টিক হাবে পরিণত হতে পারে। আমরা আশা করতে পারি, মাতারবাড়ী বন্দর চালু হলে ভারতের সাত রাজ্য, নেপাল ও ভুটানের পণ্য পরিবহনের বড় সুযোগ তৈরি হবে। আঞ্চলিক বন্দর হিসেবে মাতারবাড়ীকে গড়ে তোলা যাবে।
আমাদের এখন ৯৯ শতাংশ কনটেইনার পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর নির্ভরশীল। ফলে এই বন্দরের যে কোনো সমস্যা বা দুর্ঘটনা অর্থনীতিতে শঙ্কা জাগায়। মাতারবাড়ী হলে এই শঙ্কা থাকবে না। কারণ তখন মাতারবাড়ী থেকে চট্টগ্রাম, মোংলাসহ সারাদেশে নানা বন্দর ও টার্মিনালে নৌপথে কনটেইনার পণ্য পরিবহনের অবাধ সুযোগ তৈরি হবে।
মাতারবাড়ী বড় বন্দর হওয়ার কারণে ফ্রি ইকোনমিক জোনের সম্ভাবনা তৈরি হবে। ফলে কক্সবাজার ও পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে ব্যাপক কর্মসংস্থান তৈরি হবে। স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবসা, পরিবহন, গুদামজাতকরণ ও সার্ভিস সেক্টরের প্রসার ঘটবে। এতে শুধু জাতীয় অর্থনীতি নয়, স্থানীয় অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও সমৃদ্ধ হবে। যদিও সম্ভাবনা অনেক, তবুও এ প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের জন্য কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সময়মতো প্রকল্প শেষ করা, পরিবেশগত ঝুঁকি মোকাবিলা, জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতেরও এই প্রকল্পে কার্যকর ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। যেমন– নৌপথ তৈরি হয়ে আছে। এখন মাতারবাড়ীর জন্য টানেল থেকে বন্দর পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ জরুরি। তাহলে সড়কপথে খুব কম সময়ে সারাদেশে পণ্য পরিবহনের সুযোগ তৈরি হবে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনের সঙ্গেও সংযুক্ত করার পরিকল্পনা রাখা উচিত। তাহলে সড়ক, রেল ও নৌপথের মতো বহুমাত্রিক যোগাযোগ তৈরি হবে।
মাতারবাড়ী ঘিরে বাংলাদেশের বাণিজ্য খাতে এক নতুন যুগের সূচনা হতে চলেছে। এ বন্দর শুধু একটি অবকাঠামো নয়, এটি আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তির প্রতীক। বিশ্ববাণিজ্যের মূল স্রোতে যুক্ত হতে হলে এমন একটি গভীর সমুদ্রবন্দর অপরিহার্য ছিল। আজ তা বাস্তবে রূপ নিচ্ছে।
সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর না হওয়ার আক্ষেপ অনেকদিন ধরে ছিল। মাতারবাড়ী সেই শূন্যতা পূরণ করে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিচ্ছে। আমাদের এখন প্রয়োজন পরিকল্পিত ও সময়মতো বাস্তবায়ন, যাতে এই বিশাল বিনিয়োগের সুফল পুরো জাতি ভোগ করতে পারে।
খায়রুল আলম সুজন: সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফা); পরিচালক, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন এবং সদস্য, জাপান বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম ত রব ড় প রকল প র ম ত রব ড় অবক ঠ ম র জন য আম দ র ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিষ্ঠার ৮ বছরেও নিজস্ব ভবন পায়নি ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড
ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর এবং জামালপুর চার জেলা নিয়ে ২০১৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড। প্রতিষ্ঠার ৮ বছর পার হলেও শিক্ষা বোর্ডটি এখনও পায়নি নিজস্ব ভবন। বর্তমানে নগরীর কাঠগোলায় পৃথক দু’টি ভাড়া ভবনে চলছে শিক্ষা বোর্ডের কার্যক্রম। শিক্ষা উপকরণ রাখার জন্য আরও তিনিটি আলাদা ভবন ভাড়া নেয়া হলেও এগুলোর অবস্থাও নাজুক।
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ভবন ১ ও ২ এর মধ্যবর্তী দূরত্ব দুই কিলোমিটার। আবার গোডাউন গুলোর অবস্থানও নগরীর ভিন্ন ভিন্ন জায়গায়। এতে দুই অফিস ও গোডাউনগুলোতে কাজ করতে বেগ পোহাতে হচ্ছে কর্মকর্তা কর্মচারীদের।
তাছাড়া জনবল সংকটেও ধুকছে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড। এখন পর্যন্ত স্বায়ত্তশাসিত এ প্রতিষ্ঠানটির নির্দিষ্ট কোনো অর্গানোগ্রাম নেই। ১২২ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানটি চলছে মাত্র ২২ জন কর্মকর্তা ও ১৯ জন কর্মচারী দিয়ে। স্বল্প সংখ্যক জনবল দিয়ে চার জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কার্যক্রম পরিচালনা করতে খেতে হচ্ছে তাদের।
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের কাঠগোলা বাজারে অবস্থিত ভবন ১ এ কার্যক্রম চলে চেয়ারম্যান, সচিব, হিসাব ও আই টি শাখার। এই ভবনের নিচ তলায় গাদাগাদি করে থাকেন আনসার সদস্যরা। আর ভবন ২ এ আছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর, স্কুল কলেজ পরিদর্শন শাখা।
বোর্ড সূত্রে জানা যায়, দুটি মূল ভবন ও তিনটি গোডাউন বাবদ প্রতিমাসে ৭ লাখ টাকা ভাড়া গুনতে হয়। শিক্ষা বোর্ডে নিজস্ব ভবন থাকলে বছরে কোটি টাকা ভাড়া বেঁচে যেত সরকারের।
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. শহিদুল্লাহ যোগদান করেছেন চলতি বছরের জানুয়ারিতে। তিনি সমকালকে জানান, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের ভবন তৈরির জন্য চারটি জমি প্রাথমিকভাবে দেখা হয়েছে। এরমধ্যে রহমতপুর বাইপাস এলাকায় ১.৯৫ একরের একটি জমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ময়মনসিংহের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে ভিজিট করা হয়েছে।
পরে প্রতি ফ্লোরে ১০ হাজার স্কয়ার ফিটের ১০ তলা ভবনের চাহিদা দিয়ে শিক্ষা প্রকৌশলে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আট বছরে কেন নিজস্ব ভবন হয়নি শিক্ষা বোর্ডের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আমি এ বছরই বোর্ডে যোগদান করেছি। আগে জমি কেনা ও ভবনের কাজ কেন হয়নি তা আগের চেয়ারম্যানরা বলতে পারবেন।
সরেজমিন দেখা যায়, ভবনে ১ ও ২ এ ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা পরীক্ষার খাতা ও আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র নিতে এসে ভিড় জমাচ্ছেন। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানরা এই ভবন থেকে ওই ভবনে বারবার যাতায়াত করছেন। দুই ভবনের দূরত্ব ২ কিলোমিটার এবং গোডাউন গুলো আরও দূরত্বে অবস্থিত হওয়ায় এগুলো সংগ্রহ করতে তাদের যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, দুই ভবন ও গোডাউনে দৌড়ঝাঁপ করে তাদের কাজের গতি কমে যাচ্ছে। এ অবস্থায় নিজস্ব ক্যাম্পাসে স্থায়ী বিল্ডিং জরুরী হয়ে পড়েছে। এছাড়া তাদেরকে অফিসের কাজ সামলে বিভিন্ন জেলায় জেলায় গিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করতে হয়।
এসব সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন অরাজক পরিস্থিতি সামাল দিতে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর ড. দিদারুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ভিন্ন ভিন্ন ভবনে কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করছেন তারা।
জানা যায়, প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রপাতির অভাবে আইটি শাখার কাজ স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে করতে পারছে না ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড। এক্ষেত্রে ফলাফল তৈরি ও রেজিস্ট্রেশন করার জন্য যশোর শিক্ষা বোর্ডের সহায়তা নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে তাদের।
বোর্ড চেয়ারম্যান আরও জানান, আমরা চেয়েছিলাম এই পরিস্থিতিতে মূল দুটি ভবনকে একীভূত করতে। ভবন এক ছেড়ে দিয়ে ভবন ২ এর কাছাকাছি একটি বাড়ি ভাড়া নিতে পারলে বোর্ডের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ও সেবা গ্রহীতাদের অনেকটা হয়রানি মুক্ত করা যেত। কিন্তু এক্ষেত্রে এক নম্বর ভবনের থাকা আইটি শাখাকে ট্রান্সফার করে নতুন ভবনে নিয়ে যেতে অনেক টাকা খরচ হবে। এতে সরকার ব্যাপক পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এই চিন্তা করে নতুন কোন বাড়িভাড়াও নিতে পারছি না।
জানা যায়, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে সরকারিভাবে বরাদ্দ একটিমাত্র গাড়ি বোর্ড চেয়ারম্যান ব্যবহার করছেন। বৃহৎ পরিসরে পরিচালিত শিক্ষা বোর্ডের জন্য আরও দুইটি গাড়ি সরকারের কাছে চাওয়া হলেও এখন পর্যন্ত তা পাওয়া যায়নি। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ময়মনসিংহ থেকে কর্মকর্তারা নেত্রকোনা, জামালপুর ও শেরপুর গেলে ভাড়া করা গাড়িতে তাদের যেতে হয়।
তাছাড়া একটি ভবন থেকে আরেকটি ভবনে কর্মকর্তাদের যাতায়াতের জন্য পরিবহনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বোর্ডের কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
নিজস্ব ভবন ও পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে সমকালের সাথে কথা হয় বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর সৈয়দ আখতারুজ্জামানের সাথে। তিনি জানান, ইতিপূর্বে ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার শিক্ষা বোর্ডকে ৩ একর জায়গা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সাবেক বোর্ড চেয়ারম্যান অতিরিক্ত অহংকার করে এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। বর্তমানে জমি কিনে নিজস্ব ভবন তৈরি করার মত পর্যাপ্ত টাকা বোর্ডের হাতে নেই।
তবে বর্তমান চেয়ারম্যান নিজস্ব জমি ও ভবন তৈরি করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। সরকারের কাছে প্রকল্পের মাধ্যমে জমি কিনে ভবন তৈরি করে দেয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে। সে অনুযায়ী কাজ চলছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দ্রুত সময়ের ভিতরেই নিজস্ব ভবনে শিক্ষা বোর্ডের কার্যক্রম চালাতে পারব বলে আশা করছি।
চলতি বছরের ১৫ মার্চ ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের জমি কেনার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে সাইট ভিজিটে যান ময়মনসিংহ শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইউসুফ আলী। তিনি জানান, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড একটা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। নগরের বাইপাস মোড়ে ১.৯৫ একর জমি কেনার জন্য তারা আমাদেরকে চিঠি দেয়। সে অনুযায়ী জমি পরিদর্শন করে ২৩ মার্চ প্রধান প্রকৌশলী বরাবর আমি একটি রিপোর্ট পাঠাই।
এখন শিক্ষা প্রকৌশল এবং ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বাকি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেই জমি কেনার প্রক্রিয়া শুরু হবে।