জকসুর খসড়া নীতিমালা অনুমোদনের তিন মাস পরও চূড়ান্ত হয়নি
Published: 21st, April 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (জকসু) নীতিমালা সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হয় গত ২ জানুয়ারি। এরপর আইনি প্রক্রিয়া শেষে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা করার কথা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। কিন্তু নীতিমালা অনুমোদনের তিন মাস পর এখন বলা হচ্ছে, জকসু নীতিমালার খসড়াটি ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করার কাজ এখনো সম্পূর্ণ হয়নি।
সিন্ডিকেটে খসড়া নীতিমালা গৃহীত হওয়ার তিন মাস পার হয়ে গেলেও কোনো অগ্রগতি না দেখে গত বুধবার (১৬ এপ্রিল) ছাত্র প্রতিনিধিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাৎ শেষে ছাত্র প্রতিনিধিরা বলেন, জকসু নীতিমালার যে খসড়া, তা এখনো সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়নি। খসড়াটি প্রস্তুত হওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় অথবা ইউজিসির মাধ্যমে অনুমোদনের প্রক্রিয়া শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে জাতীয় সংসদে পাস হওয়া অধ্যাদেশে কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয় এই শতবর্ষী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ ’-এ ছাত্র সংসদের বিষয়টি যুক্ত ছিল না। প্রতিষ্ঠার পর প্রায় ১৯ বছরেও ছাত্র সংসদ বিধান যুক্ত করা হয়নি। এ কারণে নির্বাচনও হয়নি। যদিও ২০১৯ সালে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে জকসু গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটি করা হয়েছিল। সেই কমিটি গঠনতন্ত্রের খসড়া প্রণয়ন করে জমা দিলেও সিন্ডিকেটে তা পাস হয়নি।
গত ৫ আগস্টের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জকসু নির্বাচনের জোরালো দাবি তোলেন। এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রইস উদদীনকে আহ্বায়ক করে জকসুর নীতিমালা প্রণয়নে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি একটি খসড়া নীতিমালা জমা দেয়। পরে ২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৯তম সিন্ডিকেটে খসড়া নীতিমালার অনুমোদন দেওয়া হয়। একই সঙ্গে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ সাবিনা শরমীনকে আহ্বায়ক করে কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। পাঁচ সদস্যের এই কমিটিতে আছেন বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক মনজুর মোর্শেদ ভূঁইয়া, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রইস উদদীন, ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ বিলাল হোসাইন ও আইন কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার দাস।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জকসু নীতিমালা ইংরেজিতে করায় একটু জটিলতা দেখা দিয়েছিল। শিক্ষার্থীদের বোঝার সুবিধার্থে এখন তা বাংলায় প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রস্তুতকৃত নীতিমালা জকসু নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির সদস্যরা যাচাই-বাছাই করবেন। এরপর শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, সাংবাদিক, ক্রিয়াশীল সংগঠনের নেতৃত্বের পরামর্শক্রমে (সংযোজন-বিয়োজন) তা চূড়ান্ত করা হবে। চূড়ান্ত নীতিমালা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সেখানে পাস হলে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হবে।
জকসু নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক সাবিনা শরমীন প্রথম আলোকে বলেন, নীতিমালাটি বাংলায় তৈরির কাজ চলছে। প্রথম ধাপে কিছু পরিমার্জন করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপেও নতুন কিছু বিষয়ে সংশোধন আনা হয়েছে। এ সংশোধনী চলতি সপ্তাহে জমা দেওয়া হবে। এরপর চূড়ান্ত করে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, গত ২ জানুয়ারি সিন্ডিকেটের যে নীতিমালা পাস হয়েছিল, সেটি প্রাথমিক ছিল। সেখানে একটা কমিটি গঠন করা হয়েছিল, যাতে কিছু বাদ না পড়ে। যেহেতু প্রথমবার নীতিমালা তৈরি হচ্ছে, তাই নীতিমালাটি শক্তিশালী করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে আরও পরিমার্জন, সংশোধন হয়েছে। বলা যায়, চূড়ান্ত নীতিমালা সর্বশেষ পর্যায়ে আছে। চূড়ান্ত নীতিমালা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আইন আকারে পাস হলে, নির্বাচনের বিষয়ে জানানো হবে।
শিক্ষার্থীরা যা বলছেন
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মায়িশা ফাহমিদা ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘জকসু নির্বাচন এখন সময়ের দাবি। কারণ, এটি শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এই বিশ্ববিদ্যালয় অনাবাসিক। তাই বিভিন্ন জায়গায় অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও নানাবিধ সমস্যার সমাধানে কার্যকর প্রতিনিধি দরকার। জকসু থাকলে প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সেতুবন্ধ গড়ে ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি শিক্ষার্থীদের চাওয়া হলো অবিলম্বে জকসু নির্বাচন আয়োজন। সংবিধান অনুযায়ী ছাত্রদের মতপ্রকাশের অধিকার ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করাই প্রশাসনের দায়িত্ব।’
হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যব্যবস্থা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় সমস্যা শিক্ষার্থীদের আবাসন। এ ছাড়া বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়। জকসু নির্বাচন হলে পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারব। আশা করি, তাঁরা আমাদের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণে ভূমিকা রাখবেন এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করবেন। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, দ্রুত জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।’
নীতিমালাটি বাংলায় তৈরির কাজ চলছে। প্রথম ধাপে কিছু পরিমার্জন করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপেও নতুন কিছু বিষয়ে সংশোধন আনা হয়েছে। এ সংশোধনী চলতি সপ্তাহে জমা দেওয়া হবে। এরপর চূড়ান্ত করে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবেসাবিনা শরমীন, জকসু নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়কমার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘জকসু নির্বাচন হলে শিক্ষার্থীরা নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে নিজেদের দাবি উপস্থাপন করতে পারবেন। ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কৃতির বাইরে নতুন প্রতিনিধি পাবেন শিক্ষার্থীরা। আমরা চাই অতি দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচন হোক। দেশে যে ভোটহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে, আমরা চাই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে তা দূর হয়ে যাক।’
আরও পড়ুনআইনি প্রক্রিয়ায় আটকে আছে জকসু নির্বাচন১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ছাত্রসংগঠনগুলো যা বলছে
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সংগঠক ফয়সাল মুরাদ প্রথম আলোকে বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪ থেকে ১৫ হাজার শিক্ষার্থী। অথচ তাঁদের কোনো নির্বাচিত প্রতিনিধি নেই। জকসু থাকলে গণতান্ত্রিক উপায়ে ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকতেন, যাঁরা সিন্ডিকেটসহ নীতিনির্ধারণী পর্ষদে শিক্ষার্থীদের মতামত তুলে ধরতে পারতেন। শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা সমাধানেও জকসু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারত। এতে দখলদারি, শোডাউন ও আধিপত্যবাদী রাজনীতির অবসান ঘটত এবং একটি দায়িত্বশীল ছাত্রনেতৃত্ব গড়ে উঠত।
ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি এ কে এম রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সঙ্গে গড়িমসি করছে। তিন মাস আগে সিন্ডিকেটে খসড়া গেলেও, এখনো মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নিয়ে আসতে পারেনি। এটা প্রশাসনের ব্যর্থতা। আমরা শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে একটা নির্দিষ্ট সময় জানিয়ে দেব। এর মধ্যে প্রশাসনকে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে জকসু আইন অনুমোদন নিয়ে আসতে হবে।’
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাসিবাদের দোসরদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া, প্রশাসনিক কাঠামোর সংস্কার করতে হবে। সব শিক্ষার্থীর মতামতের ভিত্তিতে সবার জন্য সমান সুযোগ রেখে জকসু নির্বাচন আয়োজনের পথ তৈরি করা যেতে পারে।’
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম প রথম আল ক প রস ত ত অন ম দ ন ত কর ইসল ম সদস য সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
প্রস্তাবিত রাজস্ব নীতি বিভাগে সচিব হিসেবে শুল্ক ও কর কর্মকর্তা পদায়নের দাবি
উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশের চূড়ান্ত খসড়ার কিছু অংশে আপত্তি জানিয়ে মতামত দিয়েছে ঢাকার বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশন। প্রস্তাবিত রাজস্ব নীতি বিভাগে লোকবল নিয়োগের শর্ত নিয়ে তাদের এই আপত্তি। গতকাল রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা এই আপত্তি জানিয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি সাতটি বিষয়ে নিজেদের মতামত প্রকাশ করেছে। উল্লেখ্য, ১৭ এপ্রিল উপদেষ্টা পরিষদের সভায় রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর চূড়ান্ত খসড়া অনুমোদিত হয়।
গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশন অধ্যাদেশের যেসব বিষয়ে নিজেদের মতামত দিয়েছে, সেগুলো হলো—এক, বিসিএস (কর) অ্যাসোসিয়েশন ও বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশন ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মরত কর্মকর্তাদের মধ্য হতে’ রাজস্ব নীতি বিভাগের সচিব নিয়োগের মতামত প্রদান করেছিল। কিন্তু খসড়ার অনুচ্ছেদে (৪২৩) ‘উপযুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন যে কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে’ রাজস্ব নীতি বিভাগের সচিব বা সিনিয়র সচিব নিযুক্ত করার বিধান রাখা হয়েছে। এতে রাজস্ব নীতি প্রণয়নে বিসিএস (কর) ও বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যক্ষভাবে কাজ করার অভিজ্ঞতাকে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি মর্মে প্রতীয়মান। রাজস্ব নীতি প্রণয়নে কর রাজস্ব আহরণের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে রাজস্ব নীতি বিভাগের শীর্ষ পদে পদায়ন করা হলে রাজস্ব বিভাগকে পৃথক করার মূল উদ্দেশ্য অর্জনে সহায়ক হবে।
দুই, রাজস্ব নীতি বিভাগের মৌলিক পদগুলো বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ও বিসিএস (কর) ক্যাডার থেকে পূরণের প্রস্তাব করা হলেও খসড়ায় আয়কর, কাস্টমস, ভ্যাট, অর্থনীতি, ব্যবসায় প্রশাসন, গবেষণা পরিসংখ্যান, প্রশাসন, নিরীক্ষা, আইনসংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তা থেকে পূরণের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। রাজস্ব আহরণ, ব্যবস্থাপনা ও নীতি প্রণয়নে বাস্তব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তাদের রাজস্ব নীতি বিভাগে সুনির্দিষ্টভাবে পদায়নের সুযোগ রাখা হয়নি।
তিন, খসড়ার অনুচ্ছেদ ৯-এ রাজস্ব নীতি বিভাগে জনবল পদায়নের সুপারিশের লক্ষ্যে একটি কমিটির কথা উল্লেখ থাকলেও ধারা ৪(৪)–এ এমন কোনো কমিটির উল্লেখ নেই। উক্ত কমিটির গঠন উল্লেখ করা প্রয়োজন।
চার, খসড়ায় রাজস্ব নীতি বিভাগের কার্যপরিধিতে কর আইন প্রয়োগ ও কর আহরণ পরিস্থিতি পরিবীক্ষণ যুক্ত করা হয়েছে। এ বিধান রাখায় নীতি বিভাগকে ব্যবস্থাপনা বিভাগের কার্যক্রম তদারকির সুযোগ থেকে যায়। এক বিভাগের কার্যক্রম সমমর্যাদাসম্পন্ন অপর বিভাগ কর্তৃক পরিবীক্ষণের বিধান রাখা হলে তা আইনের দৃষ্টিতেও সাংঘর্ষিক বিবেচিত হয়।
পাঁচ, খসড়ার অনুচ্ছেদ ৭(৩)–এ বিসিএস (কর) ও বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারের কর্মকর্তাদের থেকে রাজস্ব আহরণে ন্যূনতম ২০ বছরের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তাকে পালাক্রমে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের সিনিয়র সচিব বা সচিব হিসেবে নিয়োগ প্রদান—এই ধারা পরিবর্তনে রাজস্ব আহরণে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব বা সিনিয়র সচিব হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার প্রদানের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এতে কর-রাজস্ব আহরণে দীর্ঘদিনের অর্জিত বিশেষায়িত জ্ঞান ও দক্ষতাকে কাজে লাগানোর সুযোগ সীমিত করবে।
ছয়, খসড়ায় রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রশাসনিক পদে প্রশাসন ক্যাডার থেকে পদায়ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বর্তমানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে বিসিএস (কর) ও বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তারা পদস্থ রয়েছেন, যা তাঁদের নির্ধারিত পদ।
সাত, সরকার গঠিত রাজস্ব সংস্কারবিষয়ক পরামর্শক কমিটির প্রতিবেদন অন্য সংস্কার কমিশনের মতো জনসমক্ষে প্রকাশ করা সমীচীন বলে বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশন মনে করে।
এর আগে ২৬ এপ্রিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাল্টিপারপাস হলে বিসিএস কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অ্যাসোসিয়েশনের বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) অনুষ্ঠিত হয়। অ্যাসোসিয়েশনের আমন্ত্রণে সভায় সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও রাজস্ব কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাকাএভ) নির্বাহী কমিটির একটি প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিল।