দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তর (এনএসআই)-এর সাবেক মহাপরিচালক টিএম জোবায়েরের ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির পাঁচ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব হিসাবে ২৬ লাখ পাঁচ হাজার ৮০১ টাকা রয়েছে। এদিকে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ময়নুল হক সিকদারের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ১৯ নং সেক্টরে ১০০ এক জমি জব্দেরও আদেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২১ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের পৃথক দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এদিন দুদকের পক্ষে কমিশনের উপ-পরিচালক মনজুর টিএম জোবায়েরের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, টিএম জোবায়েরের বিরুদ্ধে মোটা অংকের ঘুষ গ্রহণ করে বিভিন্ন পদে চাকরি প্রদান ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে প্রদর্শনপূর্বক কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেন। এসব টাকা নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ২৯ লাখ ৪৫ হাজার পাউন্ডে লন্ডনে বাড়ি কেনাসহ বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে।

অনুসন্ধানকালে বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, এসব ব্যাংক হিসাবসমূহের মাধ্যমে টি এম জোবায়ের এবং তার স্ত্রী ফাহমিনা মাসুদ অবৈধভাবে অর্জিত অস্থাবর সম্পদসমূহ অন্যত্র হস্তান্তর বা স্থানান্তর করার চেষ্টা করতে পারেন। এ অবস্থায় টিএম জোবায়ের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।

ময়নুল হক সিকদারের জমি জব্দের আবেদন করেন কমিশনের সহকারী পরিচালক আশিকুর রহমান।

আবেদনে বলা হয়, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, নামে-বেনামে জনগণের আমানত করা অর্থ লুটপাটসহ ঘুষের বিনিময়ে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ দেওয়া ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ তথা ‘সিকদার গ্রুপ সংশ্লিষ্ট অভিযোগ’ অনুসন্ধান সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সাত সদস্য বিশিষ্ট অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। অনুসন্ধানকালে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ১৯ নং সেক্টর এলাকায় প্রস্তাবিত ১০০ একর (কম/বেশি) ভূমিতে ১০০-১৪২ তলা আইকনিক টাওয়ার নির্মাণকল্পে Central Business District (CBD) রাজউক কর্তৃক রন হক সিকদারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান Power Pac Holding Ltd.

এর নামে সাময়িক বরাদ্দ করা হয়। 

অনুসন্ধানে আরো দেখা যায়, একটি পাতানো/সাজানো নিলাম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাজউক কর্তৃক অনুমোদিত দর একর প্রতি ৩০ কোটি ২৫ লাখ ১০০ টাকা নির্ধারণ করে সাময়িক বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। এসব প্লটের প্রতি একরের প্রকৃত বাজার মূল্য আনুমানিক ৫০ কোটি টাকা তথা প্রায় ৫০০০ কোটি টাকার সম্পত্তি ৩০০০ কোটি টাকায় বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।

নথি পর্যালোচনা ও প্লট পরিদর্শনকালে দেখা যায়, ২৭০ কোটি ৫০ লাখ এক হাজার টাকার একটি কিস্তি প্রদান করে প্লট বাউন্ডারি করে সিকদার গ্রুপের নিজস্ব সিকিউরিটি ফোর্স দ্বারা নিজ দখলে নিয়ে নেয়। এ ছাড়াও রাজউকের অনুমোদন ব্যতীত এসব ভূমির একাংশে ৩ তলা পর্যন্ত একটি ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে। নিজস্ব পাওয়ার হাউজ নির্মাণপূর্বক বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ভূমির উন্নয়নমূলক কাজের নামে ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, কাওরান বাজার শাখার মাধ্যমে ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য সম্বলিত রেকর্ডপত্র সৃজন করে ১১০ কোটি ২৭ লাখ টাকা ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ দেখিয়ে ঋণের অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তর করা হয়। রন হক সিকদারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান Power Pac Holding Ltd. এর নামে সাময়িক বরাদ্দকৃত পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ১৯ নং সেক্টর এলাকায় প্রস্থাবিত ১০০ একর (কম/বেশি) ভূমিতে ১০০-১৪২ তলা আইকন টাওয়ার নির্মাণকল্পে Central Business District (CBD) নামীয় প্লট ক্রোক করা একান্ত প্রয়োজন। 

ঢাকা/মামুন/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক হ স ব অবর দ ধ ট এম জ ব য় র বর দ দ

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ