ওষুধ তৈরিতে ৪০০ ধরনের অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট (এপিআই) বা কাঁচামাল প্রয়োজন হয়। আর দেশে ৪১ ধরনের কাঁচামাল উৎপাদন হয়। এই কাজে ২১টি কোম্পানি কাজ করে। এখনও ৯০ শতাংশ এপিআই আমদানি নির্ভর হওয়ায় দেশে ওষুধের দাম কমানো এবং রপ্তানির বাজার ধরা চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছে ওষুধ শিল্প সমিতি।

সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওতে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক কর্মশালায় এসব কথা বলেন খাত সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সঙ্গে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ডেল্টা ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা.

মো. জাকির হোসেন, হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মুহাম্মদ হালিমুজ্জামান, এসিআই হেলথকেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এম মহিবুজ্জামান, হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।

কর্মশালার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জাবাবে ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, ওষুধের কাঁচামাল তৈরির জন্য ৪৯ সংস্থার কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হয়। এই সব সংস্থার অনুমোদন নিতে ছয় মাসের বেশি সময় চলে যায়। এরপর কাঁচামাল উৎপাদনের জন্য যদি ৫০০ টন উপকরণ প্রয়োজন হলেও আমদানির অনুমোদন মেলে ১০০ টনের মতো। এছাড়া ওষুধের কাঁচামাল তৈরিতে আলাদা আলাদা মেশিন প্রয়োজন হয়। এই যন্ত্রের দাম অনেক। এসব সমস্যা যতদিন আমরা সমাধান না করতে পারবো ততক্ষণ ওষুধের কাঁচামাল শিল্প হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে এক ছাতার মধ্যে সব সেবা আনার প্রস্তাব থাকলেও সরকার এটা করতে পারেনি। 

তিনি বলেন, ওষুধের কাঁচামাল তৈরি করে চীন ও ভারত। এসব দেশে থেকেই আমরা কাঁচমাল তৈরি উপকরণ আমদানি করছি। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে বেশি দামে এসব উপকরণ বিক্রি করছে। তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে আমরা পারবো না। 

ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, ১৮ বছর আগে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় এ শিল্প প্রতিষ্ঠার জন্য ২০০ একর জমি বরাদ্দ দিয়েছিল সরকার। চায়নার একটি বিশেষজ্ঞ টিম পরিদর্শন করে বলেন, এতো ছোট জায়গায় এখানে কীভাবে ওষুধের কাঁচামাল তৈরি হবে। চীনের একটি করখানার ৫৫০ একর আয়তন। এজন্য এই পার্কে কারখানা স্থাপন ও এপিআই তৈরিতে কোম্পানিগুলোর আগ্রহ কম। মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় ওষুধ শিল্প পার্কে ৪২টি প্লট ২৭টি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি কোম্পানি সেখানে উৎপাদনে যাবে বাকীরা হয়তো এ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে একীভূত (মার্জ) হবে।

এম মহিবুজ্জামান বলেন, এলডিসির কারণে আমাদের ওষুধ শিল্পে বেশ কিছু বিষয় মওকুফ করা হয়েছে। কিন্তু মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছালে এই ছাড়গুলো আর থাকবে না। তখন মূল (মাদার) কোম্পানি থেকে তাদের চাহিদা মতো দামে এপিআই কিনতে হবে। এর প্রভাব পড়বে ওষুধের বাজারে,বেড়ে যাবে ওষুধের দাম। তাই আমদানি নির্ভরতা কমাতে দেশে এপিআই উৎপাদনে নজর দিতে হবে। মুহাম্মদ হালিমুজ্জামান বলেন, দেশে এপিআই উৎপাদন না হওয়ায় বিদেশের মার্কেটে অন্য দেশের কোম্পানির সাথে প্রতিযোগীতার মুখে পড়তে হচ্ছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন বল ন আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ

আগে থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে, নইলে হোয়াইট হাউসের প্রেস অফিসের মূল অংশে সাংবাদিকেরা প্রবেশ করতে পারবেন না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন গতকাল শুক্রবার এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে বলেছে, ‘সংবেদনশীল উপকরণ’ সুরক্ষিত রাখতে এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

এ নিষেধাজ্ঞার অর্থ, এখন থেকে যেসব সাংবাদিকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট থাকবে না, তাঁরা হোয়াইট হাউসের ওয়েস্ট উইংয়ের ‘আপার প্রেস’ নামে পরিচিত এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন না। এ অংশে প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিটের কার্যালয় অবস্থিত।

নতুন এক চিঠিতে বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের ‘লোয়ার প্রেস’ নামে পরিচিত এলাকায় প্রবেশের অনুমতি রয়েছে। এটি হোয়াইট হাউসের ব্রিফিং কক্ষের পাশে অবস্থিত। এখানে জুনিয়র প্রেস কর্মকর্তারা কাজ করেন।

এ সিদ্ধান্তের পক্ষে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে হোয়াইট হাউসের যোগাযোগবিষয়ক পরিচালক স্টিভেন চুয়াং বলেন, সাংবাদিকেরা ওই এলাকায় মন্ত্রিসভার সদস্যদের হঠাৎ ঘিরে ধরেন এবং গোপনে ভিডিও-অডিও ধারণ করেন। যদিও তিনি তাঁর এ অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের (এনএসসি) একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্দেশ জারি করা হচ্ছে যে প্রেস পাসধারীরা আগাম অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়া ওভাল অফিসের পাশে অবস্থিত আপার প্রেসে প্রবেশ করতে পারবেন না।

আরও পড়ুনহোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি পদে ২৭ বছরের ক্যারোলিনকে বেছে নিলেন ট্রাম্প১৬ নভেম্বর ২০২৪

চিঠিটি লেভিট ও চুয়াংকে পাঠানো হয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়, এ পদক্ষেপের লক্ষ্য আপার প্রেসের সংবেদনশীল উপকরণ অননুমোদিত প্রকাশ থেকে রক্ষা করা।

তবে সাংবাদিকদের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের নানা বিধিনিষেধ আরোপের ধারাবাহিকতায় এ সিদ্ধান্ত এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

হোয়াইট হাউসের ওয়েস্ট উইং। এখানেই ‘আপার প্রেস’ অবস্থিত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ