বাংলাদেশকেই পিছিয়ে রাখছেন জিম্বাবুয়ের বেনেট
Published: 21st, April 2025 GMT
‘এখানেই করে ফেলবেন?’—মাঠে জিম্বাবুয়ের কোনো প্রতিনিধির সংবাদ সম্মেলনে আসার অপেক্ষায় থাকা সাংবাদিকদের উদ্দেশে বললেন দলটির ম্যানেজার লাভমোর বান্দা। মুচকি হাসিটা তাঁর মুখে লেগে আছে তখনো।
তবে গম্ভীর মুখ ছিল সাংবাদিকদের সামনে আসা ব্রায়ান বেনেটের। নাহিদ রানার বলে আউট হয়ে যাওয়ার ঘটনাটাই মনে পড়ে কি না, কে জানে!
পাঁচ টেস্টের ক্যারিয়ারে প্রথম ফিফটি তিনি আজ পেয়েছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে। এত অল্পতেই অবশ্য তাঁর খুশি হওয়ার কথা নয়—টেস্ট শতকের দেখা ইতিমধ্যেই পেয়ে যাওয়া এই ব্যাটসম্যান আজও নিশ্চয়ই পৌঁছাতে চেয়েছিলেন তিন অঙ্কেই। নাহিদের বলে কাট করতে ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে দাঁড়ানো জাকের আলীর হাতে।
দিনের শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে নাহিদকে খেলার অভিজ্ঞতার কথা শোনাচ্ছিলেন বেনেট, ‘তাঁর বলে গতি আছে, কিন্তু আমার মনে হয় যত জোরে বল আসে, তত আমি মারতে পারি। বিষয়টা হচ্ছে বলটা শেষ পর্যন্ত দেখা। আজকে আমার কাট শটগুলো একদম ঠিকঠাক ছিল। আমার মনে হয় ওই বলটাতে (আউট হওয়ার) প্রয়োগে ভুল হয়েছে।’
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশকে ১৯১ রানে অলআউট করে দিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। এরপর দলটি পায় ৮২ রানের লিড। দিন শেষে ৯ উইকেট হাতে রেখে বাংলাদেশ অবশ্য পিছিয়ে আছে ২৫ রানে। এই অবস্থায় কাকে এগিয়ে রাখছেন বেনেট?
তাঁর উত্তর, ‘আমার মনে হয় খেলাটা এখন ভারসাম্যপূর্ণ জায়গায় আছে। আমাদের মনে হচ্ছে বিকেলে ওই উইকেটটা নেওয়ার পর আমরাই এগিয়ে আছি। কালকের দিনটা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের কাল সকালে শক্তভাবে ফিরতে হবে। আশা করি তারা আমাদের বড় কোনো লক্ষ্য দিতে পারবে না।’
শেষ বিকেলে দুটি ক্যাচ ছেড়েছেন জিম্বাবুয়ের ফিল্ডাররা। তা না হলে আরেকটু এগিয়েই থাকার কথা ছিল জিম্বাবুয়ের।
এখনো অবশ্য জিম্বাবুয়ের জয়ের সুযোগটা ভালোভাবেই দেখছেন বেনেট, ‘আমার মনে হয় জেতার ভালো সুযোগই আমাদের আছে। এখনো ২০-৩০ রানে এগিয়ে আছি। বোলাররা আজ রাতে বিশ্রাম পাবে। তারা কাল শক্ত লড়াই করবে। আপনি জানেন না কী ঘটবে। এখনো এই টেস্টে অনেকটা সময় বাকি আছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা, স্বজনদের হামলায় যুবক নিহত
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জেরে ভাই-ভাবি-ভাতিজার হামলায় আহত হয়ে মনির হোসেন (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের উড়শিউড়ার নন্দ দিঘিরপাড় গ্রামে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে জেলা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত মনির হোসেন উড়শিউড়ার নন্দ দিঘিরপাড় গ্রামের মৃত খুরশিদ মিয়ার ছেলে। মনির পেশার দিনমজুর ছিলেন। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ ছিলেন। তাঁর স্ত্রী এবং সাত ও দেড় বছর বয়সী দুটি ছেলে আছে।
নিহতের পরিবার ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে মনিরের বড় ভাই বাবুল মিয়ার (৫৫) স্ত্রী জুবায়দা বেগম (৪৫) একটি মাটির চুলা নিয়ে মনিরের বসতঘরের দরজার সামনে রান্না বসান। মাটির চুলার ধোঁয়া বসতঘরে প্রবেশ করলে মনির আপত্তি জানান। এতে বাবুলের স্ত্রী উচ্চস্বরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলা শুরু করেন। মনির প্রতিবাদ করলে বাবুল মিয়ার ছেলে শাওন মিয়া (১৫) এগিয়ে এসে চাচা মনিরের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে শাওন দা নিয়ে মনিরকে মারতে এগিয়ে এলে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় বড় ভাই বাবুল, সাচ্চু, সাচ্চুর স্ত্রী হালিমা বেগম (৪৩) ও ছেলে ইমন (২৬) এবং শাওন লাঠি ও কাঠ দিয়ে মনিরকে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে তাঁরা ইট দিয়ে মনিরের মাথায় আঘাত করেন। পরে স্থানীয় লোকজন মনিরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে শহরের বেসরকারি সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাতটার দিকে মনিরের মৃত্যু হয়।
হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘সাতটার দিকে ইসিজি পরীক্ষায় কোনো স্পন্দন না পাওয়ায় ওই রোগীকে মৃত ঘোষণা করি।’
নিহত ব্যক্তির স্ত্রী জুলেখা বেগম বলেন, ‘বসতঘরের সামনে মাটির চুলা এনে রান্না শুরু করেন বাবুল ভাইয়ের স্ত্রী। তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বকবক করছিলেন। আমার স্বামী পাল্টা কথা বলেন। এতে ভাতিজা শাওন দা নিয়ে স্বামীকে মারতে এগিয়ে আসে। স্বামীর বড় ভাই বাবুল ছেলেরে বলেছে, “ওরে ধর বেশি করে বাইরা।” তখন বাকিরা লাঠি, কাঠ ও ইট দিয়ে মারধর করে। শাওন আগেও স্বামীকে মারতে এসেছিল।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মাটির চুলার ধোঁয়াকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে ঝগড়ার উৎপত্তি। নিরীহ ছেলেটাকে একা পেয়ে তারা সবাই মারধর করে মেরে ফেলেছে।’
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য বাবুল মিয়াসহ অন্যদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে সদর থানা-পুলিশ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম রকীব উর রাজা ওই বেসরকারি হাসপাতালে যান। সদর থানার কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে। জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।