Prothomalo:
2025-06-15@12:28:39 GMT

কে হতে পারেন নতুন পোপ

Published: 22nd, April 2025 GMT

আরও পড়ুন
নতুন পোপ কীভাবে নির্বাচিত হন
পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে বিশ্বনেতাদের শোক
উপভোগ করতেন ট্যাঙ্গো নাচ, ফুটবল, ছিলেন বার বাউন্সার, কীভাবে হলেন পোপ


হেডলাইন: কে হতে পারেন নতুন পোপ
রয়টার্স, ভ্যাটিকান সিটি

পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর তাঁর উত্তরসূরি নির্বাচন নিয়ে সারা বিশ্বে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। কয়েক শতাব্দী ধরে চলে আসা এক জটিল প্রক্রিয়া মেনে অতিগোপনে নতুন পোপ নির্বাচন করা হয়। নতুন পোপ নির্বাচনের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৮০ বছরের কম বয়সী কার্ডিনালরা শিগগিরই ভ্যাটিকান সিটিতে যাবেন। তবে, নির্দিষ্ট তারিখ এখনো জানা যায়নি। প্রাথমিক আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাঁরা সিটির সিস্টিন চ্যাপেলে ভোটাভুটিতে অংশ নেবেন, যা কনক্লেভ বা একান্ত বৈঠক নামে পরিচিত।

 কে নতুন পোপ নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন, তা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা বেশ কঠিন। এরপরও এই গুরুদায়িত্ব কার কাঁধে যাচ্ছে, তা নিয়ে কিছু অনুমান করা যায়।

এক.

জঁ-মার্ক অ্যাভেলিন

৬৬ বছর বয়সী জঁ-মার্ক অ্যাভেলিন ফরাসি নাগরিক। তিনি মার্সেইয়ের আর্চবিশপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। স্থানীয় ক্যাথলিক মহলে তিনি ‘জন চতুর্বিংশ’ নামে পরিচিত। ১৯৬৯–এর দশকে গোলাকৃতির মুখের সংস্কারপন্থী পোপ জন ত্রয়োবিংশের সঙ্গে অ্যাভেলিনের চেহারার মিল রয়েছে। প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিস একবার হাসিচ্ছলে বলেছিলেন, তাঁর উত্তরসূরি হবেন সম্ভবত জন চতুর্বিংশ। 

অ্যাভেলিন সাদাসিধা ভাব, সহজ-সরল প্রকৃতি এবং হাস্যরসের জন্য পরিচিত। ফ্রান্সিসের সঙ্গে তাঁর মতাদর্শিক নৈকট্য রয়েছে। ফ্রান্সিসের মতো তিনি অভিবাসন এবং মুসলিম বিশ্বের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেন। প্রয়াত পোপের মতো তিনিও উঁচু মাপের বুদ্ধিজীবী। দর্শনে ডিগ্রিধারী এই পণ্ডিত ধর্মতত্ত্বে পিএইচডি করেছেন।

 দুই. লুইস আন্তোনিও ট্যাগল

ফিলিপাইনের ম্যানিলার আর্চবিশপ লুইস আন্তোনিও ট্যাগল এশিয়া থেকে প্রথম পোপ হতে পারেন। ৬৭ বয়সী এই আর্চবিশপকে একসময় পোপ ফ্রান্সিসের সম্ভাব্য উত্তরসূরি ধরা হতো। তখন প্রয়াত পোপের উদার কর্মসূচি এগিয়ে নেওয়ার জন্য তাঁকেই যোগ্য বলে মনে করা হতো। কিন্তু সম্প্রতি তাঁর জনপ্রিয়তা কমেছে। ফিলিপাইনে সমকামী ও বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া দম্পতিদের নিয়ে ক্যাথলিক গির্জার অবস্থানের তিনি সমালোচক। তবে, দেশটিতে গর্ভপাত অধিকারের বিপক্ষে তাঁর অবস্থান।

তৃতীয়. কার্ডিনাল পিটার এরদো

 হাঙ্গেরির ৭২ বছর বয়সী কার্ডিনাল পিটার এরদো নতুন পোপ নির্বাচিত হলে, তা প্রত্যাশার সঙ্গে কিছুটা আপস বলে মনে করেন অনেকে। ২০১৩ সালে তিনি পোপ ফ্রান্সিসের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। মন-মানসিকতায় তিনি কিছুটা রক্ষণশীল। তবে ফ্রান্সিসের উদার কর্মসূচির সঙ্গে তিনি তাল মিলিয়ে চলতে চেষ্টা করতেন। তিনি ইতালীয় ভাষায় চমৎকার কথা বলতে পারে। পাশাপাশি জার্মানি, ফরাসি, স্প্যানিশ ও রুশ ভাষাতেও তিনি কথা বলতে পারেন। এতগুলো ইউরোপীয় ভাষা জানার কারণে তিনি পোপ হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন।

চতুর্থ. কার্ডিনাল মারিও গ্রেচ

 ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ক্ষুদ্রতম দেশ মাল্টার ছোট দ্বীপ গোজোয় জন্মগ্রহণকারী কার্ডিনাল মারিও গ্রেচ তিলে তিলে গুরুত্বপূর্ণ পদে পৌঁছেছেন। ৬৮ বছর বয়সী কার্ডিনালকে বিশপদের সিনডের মহাসচিব নিযুক্ত করেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। সিনডের মহাসচিব ভ্যাটিকানের বেশ গুরুত্বপূর্ণ পদ। শুরুর দিকে রক্ষণশীল থাকলেও পরে তিনি ফ্রান্সিসের সংস্কার কার্যক্রমের মশাল বহনকারী ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছিলেন।

পঞ্চম. কার্ডিনাল হুয়ান হোসে ওমেলা

স্পেনের বার্সেলোনার আর্চবিশপ ওমেলা প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের মন জয় করেছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার পরেও তিনি সাদামাটা জীবন যাপন করতেন। বিনয়ী ও সদালাপী এই ধর্মগুরু সামাজিক ন্যায়বিচারের বিষয়ে বিশেষ মনোযোগী ছিলেন। 

ষষ্ঠ. কার্ডিনাল পিয়েত্রো প্যারোলিন

প্যারোলিন মূলত ভ্যাটিকানের কূটনীতিক। ৭০ বছর বয়সী ইতালির এই নাগরিক ২০১৩ সাল থেকে পোপ ফ্রান্সিসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এই পদে দায়িত্ব পালনকারীদের ডেপুটি পোপ বলা হয়। এই পদ প্রধানমন্ত্রীর সমমর্যাদার। পোপ বেনেডিক্টের অধীনে তিনি ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। নম্রভাষী প্যারোলিনের যাজকীয় অভিজ্ঞতা কম। তবে, তিনি বেশ কটি ভাষা জানেন। এটা তাঁকে পোপ হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রাখবে। তাঁকে উদার ও রক্ষণশীলদের মধ্যবর্তী আপস প্রার্থী মনে করা হয়।

সপ্তম. কার্ডিনাল জোসেফ টোবিন

যুক্তরাষ্ট্র থেকে এখন পর্যন্ত কোনো পোপ নির্বাচিত হননি। এবারও তেমন কোনো জোর সম্ভাবনা নেই। তবে, ৭২ বছর বয়সী নিউ জার্সির আর্চবিশপ টোবিনকে কার্ডিনালরা পোপ ফ্রান্সিসের উত্তরসূরি হিসেবে বেছে নিলে বিস্ময়ের কিছু থাকবে না। ২০১৬ সালে তাঁকে কার্ডিনাল পদে উন্নীত করেন ফ্রান্সিস।

অষ্টম. কার্ডিনাল পিটার কোডও অ্যাপিয়াহ টার্কসন

ঘানার একটি ছোট গ্রামে জন্মগ্রহণকারী কার্ডিনাল পিটার কোডও অ্যাপিয়াহ টার্কসনের দীর্ঘ যাজকীয় অভিজ্ঞতা রয়েছে। ভ্যাটিকানের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। ৭৬ বছর বয়সী ভ্যাটিকানের এই কর্মকর্তার যোগাযোগে চমৎকার দক্ষতা রয়েছে। নির্বাচিত হলে সাব-সাহারা আফ্রিকা থেকে তিনিই হবেন প্রথম পোপ।

আরও পড়ুননতুন পোপ কীভাবে নির্বাচিত হন৮ ঘণ্টা আগেনবম. মাত্তেও মারিয়া জুপ্পি

ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, কার্ডিনালরা বেশির ভাগ সময় ইউরোপীয়, বিশেষ করে ইতালি থেকে কাউকে পোপ হিসেবে বেছে নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত ২৬৬ জন পোপ হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ২১৭ জনই ইতালির নাগরিক। এবার নতুন পোপ হওয়ার যাঁদের সম্ভাবনা রয়েছে, ইতালির নাগরিক মাত্তেও মারিয়া জুপ্পি তাঁদের অন্যতম। ফ্রান্সিসের সঙ্গে ৬৯ বয়সী বোলোগনার এই আর্চবিশপের ঘনিষ্ঠতা ছিল। এ কারণে তাঁকে ‘ইতালির বারগোগ্লিও’ বলা হয়। জর্জ বারগোগ্লিও প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের আসল নাম। ১৯৭৮ সালের পর ইতালি থেকে আর কোনো পোপ নির্বাচিত হননি।

 পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে বিশ্বনেতাদের শোক
উপভোগ করতেন ট্যাঙ্গো নাচ, ফুটবল, ছিলেন বার বাউন্সার, কীভাবে হলেন পোপ

আরও পড়ুনপোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে বিশ্বনেতাদের শোক৫ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনউপভোগ করতেন ট্যাঙ্গো নাচ, ফুটবল, ছিলেন বার বাউন্সার, কীভাবে হলেন পোপ৫ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নত ন প প ন র ব চ বছর বয়স করত ন

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন যখনই হোক, প্রস্তুত থাকতে হবে: সিইসি

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে, তা নিয়ে সরকারের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের এখনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। তিনি বলেছেন, সরকারের সঙ্গে আলোচনা হলে ইসি সরকারের ‘ভাব’ বুঝতে পারবে। তখন নির্বাচনের তারিখের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে তিনি বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হোক বা এপ্রিলে—যখনই হোক নির্বাচন কমিশনকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সিইসি। গত শুক্রবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠকের পর একটি যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালে রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।

এ বিষয়ে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, আগে বলা হয়েছিল ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। সেই সময়সীমা মাথায় রেখে ইসি প্রস্তুতি শুরু করেছিল। সেভাবে এগিয়েছিল। এখন আবার নতুন ‘ডাইমেনশন’ এসেছে। যৌথ বিবৃতির বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘যে ঘোষণাটা লন্ডনে বসে হয়েছে, এটা আপনারা যেটুকু জানেন, আমি এর বাইরে বেশি কিছু জানি না। আপনারা যেটুকু দেখেছেন মিডিয়াতে, আমিও সেটুকু দেখেছি।’

আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে পারে—এ সংক্রান্ত যৌথ বিবৃতির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমি এটা টেলিভিশনে দেখেছি, এটাকে আমি ফরমাল, অফিশিয়াল ভাবতে পারতেছি না। সরকারের সঙ্গে আমাদের এখনো কথাবার্তা হয় নাই, কী ধরনের সিদ্ধান্ত আসে। আমরা এখন আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে ভাবতেছি। যখনই হবে, যখনই হয় যাতে আমরা ইলেকশনটা “ডেলিভার” করতে পারি।’

সিইসি আরও বলেন, ‘এখন আমরা প্রস্তুতির বাইরে কিছু চিন্তা করছি না। যখন সরকারের সঙ্গে কথা হবে যে ওনারা কী আলোচনা করেছেন, আমরা তো নিশ্চয় ওনাদের ভাব বুঝতে পারব, বুঝে তখন একটা তারিখ, তখন সেটা করব। এখন আমাদের চিন্তা–ভাবনা, ধ্যান–ধারণা, শয়নে–স্বপনে নিজেদের প্রস্তুতি।’

এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন—এটা এখনো তাঁদের কাছে পরিষ্কার নয়। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, গেজেটের মাধ্যমে ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হয়। ছয় মাস–আট মাস আগে ভোটের তারিখ বলার বিধান আইনে নেই।

সিইসি বলেন, যৌথ বিবৃতিতে তিনি যেটা দেখেছেন যে রমজানের আগেও নির্বাচন হতে পারে। সেখানে ‘যদি’ আছে।

নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে সিইসি বলেন, নির্বাচনের জন্য বড় প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো অনেকটা শেষ হয়েছে। সবচেয়ে বড় কাজ ভোটার নিবন্ধন, এটি মোটামুটি শেষ।

চলতি বছরের হালনাগাদে যাঁদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে, সে তালিকা চূড়ান্ত হবে আগামী বছরের ২ মার্চ। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে তাঁরা ভোট দিতে পারবেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, তফসিল ঘোষণার আগে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত থাকতে হয়। সাধারণত ভোটের তারিখের মাস দুয়েক আগে তফসিল ঘোষণা করা হয়। যেদিন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে, তার আগে যাঁদের ১৮ বছর পূর্ণ হবে তাঁদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে ইসি চেষ্টা করবে। এ জন্য আইনে কিছুটা পরিবর্তন আনার চিন্তা করছে ইসি। সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে—এই ওয়াদা তিনি দিতে পারবেন না। তাঁরা যথাসম্ভব চেষ্টা করবেন, যাতে তরুণ প্রজন্মকে অন্তর্ভুক্ত করা যায়।

কোনো কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। তাদের আস্থায় আনতে ইসি কী করবে—এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোও দেশের ভালো চায়। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে তাদের অনেক ধরনের কথাবার্তা বলতে হয়। এগুলো তিনি রাজনৈতিকভাবে দেখেন।

সিইসি আরও বলেন, কেউ বিপক্ষে না থাকলে বুঝতে হবে কোনো ‘কোয়ালিটি’ নেই। বিপক্ষে কেউ বললে তখন শোধরানোর সুযোগ থাকে। এ জন্য কেউ বিরুদ্ধে বললে তিনি আহত হন না। তিনি এ ধরনের সমালোচনাকে স্বাগত জানান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ