জামায়াত নেতা আজহারের আপিল শুনানি ৬ মে
Published: 22nd, April 2025 GMT
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের করা আপিলের ওপর আগামী ৬ মে শুনানি হবে।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
আদালত বলেছেন, সেদিন আপিলটি কার্যতালিকার শীর্ষে থাকবে এবং আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হবে।
জামায়াত নেতা আজহারের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী, আইনজীবী শিশির মনির।
আপিল শুনতে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল আপিল বিভাগে এসেছিলেন। এছাড়া, জামায়াতপন্থি সব আইনজীবীও আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর এটিএম আজহারকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন আজহারুল। আপিল শুনানির পর ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ। ২০২০ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।
পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর তা পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০২০ সালের ১৯ জুলাই আপিল বিভাগে আবেদন করেন তিনি।
ঢাকা/এম/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আপ ল ব ভ গ আজহ র
এছাড়াও পড়ুন:
আবু সাঈদ হত্যা: ‘ঘটনাস্থলে ছিলেন না’ দাবি করে দুই আসামির অব্যাহতির আবেদন
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আজ মঙ্গলবার আসামিপক্ষের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই মামলার ৩০ আসামির মধ্যে ৩ জনের অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেছেন, আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার সময় তাঁদের মক্কেল ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না।
আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২–এর কাছে তিন আসামির আইনজীবীরা তাঁদের মক্কেলদের অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন। এরপর এই মামলার বাকি আসামিদের বিষয়ে শোনার জন্য আগামীকাল বুধবার অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল-২।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ এই দিন ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
এই মামলার ৩০ আসামির একজন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম। তাঁর আইনজীবী আমিনুল গণী। এই মামলা থেকে শরিফুলের অব্যাহতি চেয়ে আজ লিখিত কোনো আবেদন করেননি এই আইনজীবী। মৌখিকভাবে অব্যাহতির আবেদনে আমিনুল গণী বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করার আগে আবু সাঈদের ভাই রংপুরে একটি মামলা করেছিলেন। সেখানে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করেন। সেই তালিকায় শরিফুল ইসলামের নাম ছিল না। এই আইনজীবী দাবি করেন, সাবেক এই প্রক্টরের বিরুদ্ধে যে অপরাধ করার অভিযোগ আনা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী সেসব (আদেশ/নির্দেশ) করার সুযোগ তাঁর ছিল না। তা ছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সাবেক আইজিপি—কারও সঙ্গে তাঁর সংযোগ ছিল না। আর যখন আবু সাঈদ হত্যার শিকার হন, তখন তিনি (শরিফুল) ঘটনাস্থলে ছিলেন না। ঘটনা ঘটার ২৩ মিনিট আগেই তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এসব কারণে এই মামলা থেকে তাঁর অব্যাহতি চান।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘আপনি এখনই এই মামলার চূড়ান্ত যুক্তি তুলে ধরা শুরু করে দিয়েছেন। মামলার এই পর্যায়ে এসব করার সুযোগ নেই। যদি প্রমাণ না পাওয়া যায়, তাহলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে।’
এই মামলার আরেক আসামি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী ওরফে আকাশ। আজকের শুনানিতে তাঁর আইনজীবী সালাহউদ্দিন দাবি করেন, আন্দোলনের সময় তাঁর মক্কেল ঘটনাস্থলে ছিলেন না। ঘটনাস্থলে না থাকলে উসকানি ও সহযোগিতা করার সুযোগ নেই। তা ছাড়া ইমরান চৌধুরীকে ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা সত্য নয়। আবু সাঈদের ঘটনায় রংপুরে যে মামলা করা হয়েছিল, সেসব আসামির মধ্যেও ইমরানের নাম নেই। এসব কারণে তিনি এই মামলা থেকে ইমরানের অব্যাহতি চান।
তখন ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘আপনি প্রমাণ করেন যে ইমরান ঘটনাস্থলে ছিল না। যদি প্রমাণ করতে পারেন তাহলে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। আর প্রসিকিউশনও যদি প্রমাণ না করতে পারে ইমরান ঘটনাস্থলে ছিল, তাহলেও অব্যাহতি দেওয়া হবে।’
সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়ের আইনজীবী আজিজুর রহমান বলেন, কোনো সুযোগ ছিল না একজন কনস্টেবলের পক্ষে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সাবেক আইজিপির মতো ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করার। প্রসিকিউশন যে অভিযোগ দাখিল করেছেন, তাতে এমন কোনো প্রমাণ নেই তাঁদের (সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও অন্য শীর্ষ ব্যক্তিরা) নির্দেশ সরাসরি পাওয়া বা সরাসরি যোগাযোগের। সে কারণে তাঁর অব্যাহতি চান।
আগামীকাল এই মামলায় অন্য আসামিদের বক্তব্য শোনা হবে। এই মামলার ২৪ জন আসামি পলাতক। তাঁদের পক্ষে চারজন রাষ্ট্র নিযুক্ত নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কোন আইনজীবী কোন কোন পলাতক আসামির প্রতিনিধিত্ব করবেন, তা আজ ট্রাইব্যুনাল উল্লেখ করে দেন।
এ ছাড়া গ্রেপ্তার আরও দুই আসামির পক্ষে আইনজীবী না থাকায় তাঁদের জন্যও একজনকে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে আজ নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। গ্রেপ্তার সেই দুই আসামি যদি নিজেদের আইনজীবী নিয়োগ দেন, তাহলে সেই রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আর থাকবেন না।
আরও পড়ুনসাবেক উপাচার্য হাসিবুরসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আবেদন২৮ জুলাই ২০২৫