জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ১৪ সিটের আরো চারটি লিথিয়াম ব্যাটারি চালিত ইলেকট্রিক কার্ট পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে এ ইলেকট্রিক কার্টের উদ্বোধন ঘোষণা করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান।

মা এন্টারপ্রাইজ নামক একটি টেকনোলজি কোম্পানি এ কার্টের প্রযোজনা করেছে। তাছাড়া কার্টের মনিটরিং, নিরাপত্তা, দূর্ঘটনা রোধসহ সার্বিক দায়িত্বও পালন করবে কোম্পানিটি।

আরো পড়ুন:

গাছ কেটে ভবন নির্মাণের ব্যাখ্যা দিল জাবি প্রশাসন

গাছ কেটে অপরিকল্পিত উন্নয়নের প্রতিবাদে জাবিতে মানববন্ধন

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.

রাশিদুল আলমের সঞ্চালনায় মা এন্টারপ্রাইজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ মুহতাসীম আল রাফি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অনুমতিতে আমরা চারটি শাটল বাস চালু করছি আজ। এই কার্ট খুবই পরিবেশবান্ধব। একইসঙ্গে যাতায়াত ভাড়াও কমে আসবে। এ পরিবেশবান্ধব গাড়িটিতে থাকবে ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থা ও কেন্দ্রীয় ভাবে মনিটরিং এর সুযোগ। চাইলে যেকোনো সময় এই গাড়ি বন্ধ করে দেওয়া যাবে।” ভবিষ্যতে জাবির পরিবহন ব্যবস্থায়ও সেবা করার প্রত্যাশা ব্যাক্ত করেন তিনি। 

উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ বলেন, “গত বছর ব্যাটারি রিকশায় একজন শিক্ষার্থী নিহত হয়। সে সময় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় অটোরিকশা বন্ধ করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের ভোগান্তি কমাতে আমাদের এ উদ্যোগ।”

তিনি বলেন, “এগুলো পরীক্ষামূলকভাবে চলবে। এ গাড়িগুলো লিথিয়াম ব্যাটারিতে চালিত, তাই এটি পরিবেশ বান্ধব। পরীক্ষামূলকভাবে চলার পর সবার মতামত ও পরামর্শ নিয়ে ভাড়া যেটা নায্য, সেটা নির্ধারণ করা হবে।”

উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান বলেন, “ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য এ কাজে আমাকে দুই উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টর নিরলসভাবে সহযোগিতা করে গেছেন। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। সেইসঙ্গে আর কোনো শিক্ষার্থী যেন মর্মান্তিক দূর্ঘটনার শিকার না হন, সেজন্য আমাদের এই প্রচেষ্টা। শিক্ষার্থীদের সুবিধা অনুযায়ী কম ভাড়া নির্ধারণ করা হবে।”

তিনি বলেন, “গত বছর অটোরিকশার দুর্ঘটনার পর কিছু অংশীজন পুনরায় অটোরিকশা চালুর দাবি করেছিলেন। কিন্তু আমরা সেটা না করে সামান্য অপেক্ষা করে এ সেবা চালু করছি। আশা করি শিক্ষার্থীদের কল্যাণে আসবে।”

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে আরো উপস্থিত ছিলেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা)  অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আব্দুর রব, জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন, পরিবহন অফিসের দায়িত্বরত শিক্ষক অধ্যাপক আওলাদ হোসেন, বিজ্ঞান কারখানার প্রকৌশলী মশিউর রহমান প্রমুখ।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ চ র য

এছাড়াও পড়ুন:

এনসিপির উদ্বেগ আদালত অবমাননার শামিল: ইশরাক

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদ নিয়ে ইশরাক হোসেনের মামলা, রায় এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তৎপরতা নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়টিকে আদালত অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেন। তিনি বলেছেন, এনসিপি আইনের ব্যাখ্যা এবং আইন সম্পর্কে অজ্ঞ থাকায় ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। একই সঙ্গে বিজ্ঞ আদালতের আদেশকে অবমাননা করেছে।

বুধবার রাতে এক প্রতিবাদলিপিতে ইশরাক হোসেনের পক্ষে তাঁর আইনজীবী রফিকুল ইসলাম এ কথা বলেছেন। এর আগে গতকাল বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছিল এনসিপি।

দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি হওয়া নিয়ে এনসিপির উদ্বেগের বিষয়টি উল্লেখ করে ইশরাক হোসেনের পক্ষে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে তাঁর আইনজীবী বলেন, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির কারণ নিয়ে এনসিপির বক্তব্য একেবারেই শিশুসুলভ। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় যেকোনো মামলায় দ্রুত নিষ্পত্তির বিজ্ঞ আদালতের একটি সহজাত ক্ষমতা। তা ছাড়া ২০২০ সালে দায়ের করা মামলাটি ২০২৫ সালে নিষ্পত্তি হয়েছে। এটি দীর্ঘ পাঁচ বছরের অধিক সময় অতিক্রান্ত হয়েছে, যা মোটেও সংক্ষিপ্ত সময় নয়; বরং মোকদ্দমাটি আরও আগেই নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন ছিল।

নির্বাচনী মামলার নিষ্পত্তি সংক্ষিপ্ত সময়ে হওয়া উচিত উল্লেখ করে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, এনসিপির এ জাতীয় বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল। এ ছাড়া এ-সংক্রান্ত যে বক্তব্য দিয়েছে, তার সম্পূর্ণ আইনি অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। মামলার তদবিরকারক বাদীর ইচ্ছা অনুযায়ী যে কেউ হতে পারে বিধায় বিজ্ঞ আদালত হলফনামা গ্রহণ করেছেন, যা সম্পূর্ণ আইন মেনেই করা হয়েছে। এ ছাড়া আদালত কোনো প্রকার বিচার-বিশ্লেষণ করেননি বলে যে বক্তব্য এনসিপি দিয়েছে, তা এককথায় তাদের জ্ঞানের স্বল্পতারই বহিঃপ্রকাশ এবং আদালত অবমাননার শামিল।

প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, ‘আদালত যথাযথ আইন মেনেই রায় প্রদান করেন। এ ক্ষেত্রে কেউ যদি ন্যায়বিচার হয়নি বলে মনে করে, তাহলে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ আছে এবং তার বক্তব্য ওই উচ্চ আদালতে রাখারও সুযোগ আছে। এভাবে প্রেসনোট দিয়ে বক্তব্য প্রদান দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করা ও বিজ্ঞ আদালতকে অবমাননা ছাড়া কিছুই নয়।’

২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ফল বাতিল করে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে বিএনপি নেতার ইশরাক হোসেনকে গত ২৭ মার্চ মেয়র ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন আদালত। এর এক মাস পর আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গেজেট প্রকাশের পর এটি বর্তমানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই মন্ত্রণালয় থেকে শপথ গ্রহণের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা। তবে কবে নাগাদ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে, সে বিষয়টি নিয়ে এখন ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।

নির্বাচনের হিসাব অনুযায়ী আগামী ১৫ মে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ