অবশেষে ক্যাম্পাসে ফিরছে চবি চারুকলা ইনস্টিটিউট, ৩৪ ঘণ্টা পর অনশন প্রত্যাহার
Published: 23rd, April 2025 GMT
অবশেষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ সিদ্ধান্তে ৩৪ ঘণ্টা পর আমরণ অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন শিক্ষার্থীরা।   
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৬১তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের এ তথ্য জানান উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড.                
      
				
তিনি বলেন, “কিছু অনিবার্য কারণে চারুকলা ইনস্টিটিউটকে ক্যাম্পাসে আনার কোনো দিনক্ষণ ঠিক করা সম্ভব হয়নি। তবে এটা সবাই অবগত যে সিন্ডিকেট থেকে কোনো সিদ্ধান্ত পাস হলে সেটি অবশ্যই বাস্তবায়ন হয়।”
অনশনকারী চারুকলার ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার হাসান সোহেল রাইজিংবিডিকে বলেন, “রাত ১১টায় আমাদের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত জানানো হলে আমরা তাতে একমত পোষণ করি। আমরা চেয়েছিলাম সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত। তবে সে সিদ্ধান্তে যে তারিখ দেবে না সেটা ভাবিনি। তবে সিন্ডিকেট থেকে সিদ্ধান্ত হওয়ায় আমরা ক্যাম্পাসে ফিরব এটা নিশ্চিত।”
এর আগে, সোমবার (২১ এপ্রিল) সাড়ে ৩ টায় চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে ফেরানোর দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন ইনস্টিটিউটটির নয় শিক্ষার্থী। তারা হলেন, ২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শাহরিয়ার হাসান সোহেল, ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মাসরুল আল ফাহিম, ২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ইসরাত জাহান ইয়ামিন, একই শিক্ষাবর্ষের মালিহা চৌধুরী, ইসরাত জাহান, নুসরাত জাহান ইপা, ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের নূর ইকবাল সানি, ২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের তরিকুল ইসলাম মাহী এবং একই শিক্ষাবর্ষের মাহমুদুল হাসান মিনহাজ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদ ও ইনস্টিটিউট হাটহাজারীর মূল ক্যাম্পাসে হলেও চারুকলা ইনস্টিটিউট ২২ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম নগরীতে।
২০২২ সালে শ্রেণিকক্ষের ছাদ থেকে ইট-সিমেন্ট খসে পড়লে ওই বছরের ২ নভেম্বর থেকে ক্লাস বর্জন করে মূল ক্যাম্পাসে ফেরার দাবি তোলেন শিক্ষার্থীরা।
তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে বৈঠকের পরও মূল ক্যাম্পাসে ফেরার আন্দোলনে অনড় ছিলেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি এক মাসের জন্য ইনস্টিটিউট বন্ধ ঘোষণা করে। পরে মূল ক্যাম্পাসে গিয়ে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটে।
গতবছরের ১০ ডিসেম্বর থেকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলেন শিক্ষার্থীরা।
পরদিন তারা নগরীর বাদশা মিয়া সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। ইনস্টিটিউটের সামনের সড়কে ব্যানার বিছিয়ে ও টায়ার জ্বালিয়ে তারা বিক্ষোভ দেখান।
এমন প্রেক্ষাপটে ১২ ডিসেম্বর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৈঠক শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ‘নীতিগত ভাবে একমত’ বলে জানিয়েছিল।
ওইদিন বৈঠক শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক কামাল উদ্দিন জানিয়েছিলেন, কাজটি বাস্তবায়ন করার জন্য ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে সেই সময়সীমা পার হওয়ার পরই অনশনে বসেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষ বর ষ র চ র কল
এছাড়াও পড়ুন:
ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশকে ‘অশ্বডিম্ব’ বললেন সিপিবি সভাপতি
আট মাস আলোচনার পর জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে সুপারিশ দিয়েছে, তাকে ‘অশ্বডিম্ব’ বলেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি সাজ্জাদ জহির চন্দন।
‘জগাখিচুড়ি মার্কা’ কমিশনের সুপারিশের পর পরিস্থিতি জটিলতার দিকে মোড় নেওয়ার দিকটি নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আট মাস আলোচনার পর একটা অশ্বডিম্বের মতো একটা অবস্থা।’
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংলাপে ‘পলিটিকস ল্যাব: পাবলিক ডায়ালগ’ শীর্ষক সংলাপে এ কথা বলেন সাজ্জাদ জহির। এ সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)।
তরুণ রাজনীতিকদের মধ্যে মতাদর্শভিত্তিক সংলাপ ও গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে জার্মান ফাউন্ডেশন ফ্রেডরিখ এবার্ট স্টিফটুং (এফইএস)-এর সহযোগিতায় ‘পলিটিকস ল্যাব’ শিরোনামে চারটি ধারাবাহিক কর্মশালা করেছে সিজিএস। তার সমাপনী অনুষ্ঠান হিসেবে আজকের সংলাপ হয়।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে হস্তান্তরের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে তা নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। নানা প্রশ্নে বিভিন্ন দলের আপত্তির বিষয়গুলো সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়ার তফসিলে না থাকা নিয়ে যেমন সমালোচনা হচ্ছে, আবার গণভোটের সময় নিয়েও দলগুলোর মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে।
এই সংকট তৈরির জন্য ঐকমত্য কমিশনকে দায়ী করে সাজ্জাদ জহির বলেন, ‘এটার সমাধানটা কী? এই গণভোটের সমাধানটা কী? জুলাই সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন হবে? সে বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা কিন্তু নেই। মানে একধরনের হাওয়ার ওপরে সবকিছু চলছে। এখানে ৮৪টা পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ২০টাতে একমত হয়েছে, বাকিগুলোতে একমত হয়নি। তাহলে কোন বিষয়ে ভোটটা হবে।’
জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করা সিপিবি সভাপতি বলেন, ‘আমরা দেখলাম জুলাই সনদে স্বাক্ষর হলো। এরপর সর্বশেষ সংস্কার কমিশন তারা আবার আরেকটা খেলা খেলল এখানে। দেখেন কী অবস্থা! তারা বলছে যে নোট অব ডিসেন্ট কিছুই থাকবে না। ভিন্ন মত থাকবে না। আমার তো ভিন্নমত আছে, কেন থাকবে না?’
গণভোট নিয়ে তিনি বলেন, ‘সংবিধানে কোথাও গণভোটের কোনো বিধান নেই। একটা আছে যেটা ১৪২ ধারা। যেটা নির্বাচিত সংসদে যদি কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে মতভেদ তীব্রতর হয়, তাহলে সেই বিষয়ের ওপরে নির্বাচিত সংসদ জনগণের আহ্বান করতে পারে। কিন্তু এই মুহূর্তে গণভোট সংবিধানসম্মত নয়।’
সিপিবির সভাপতি বলেন, এসব জটিলতা এড়াতে প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা নিতে গত বছরের অক্টোবর মাসে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছিলেন। তবে ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে’ সরকার সেটি শোনেনি।